টিকা ভাল কাজ করছে, কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই: ভারত বায়োটেক
প্রথম স্তরের টিকার ট্রায়াল শেষ করে দ্বিতীয় স্তরে ঢুকেছে হায়দরাবাদের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ভারত বায়োটেক। জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে দেশের ১২টি হাসপাতালে ৩৭৫ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এখনও অবধি টিকা কেমন কাজ করেছে তার প্রাথমিক রেজাল্ট সামনে আনল ভারত বায়োটেক।
রোহতকের পিজিআই হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ডক্টর সবিতা ভার্মা জানিয়েছেন, টিকা মানুষের শরীরে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, টিকার কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। প্রথমবার টিকার ডোজ দেওয়ার পরে এতদিন পর্যবেক্ষণে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা। সম্প্রতি তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। টিকার ডোজে কোনও ‘অ্যাডভার্স সাইড এফেক্টস’ দেখা যায়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। টিকার প্রভাবে রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে কিনা জানতে স্বেচ্ছাসেবকদের রক্তের নমুনা টেস্ট করতে পাঠানো হয়েছে।
ডাক্তাররা বলছেন, রক্তের নমুনা পরীক্ষা করলে বোঝা যাবে প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের পরে কতটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। বি-কোষ সক্রিয় হলেই অ্যান্টিবডি তৈরি শুরু হবে। তখন টিকার ডোজ সেভাবেই নির্ধারণ করা হবে। বিশ্বের ১৪০ রকম কোভিড ভ্যাকসিনের মধ্যে প্রায় ১৪ রকম ভ্যাকসিনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে মানুষের শরীরে।
[ আরও পড়ুন : দু’মাস কেটে গেছে, এখনও ওই রাত আমাদের কাছে দুঃস্বপ্ন ]
ভারতে ভ্যাকসিন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে হায়দরাবাদের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ভারত বায়োটেক ও জাইদাস ক্যাডিলা। ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন ও জাইদাস ক্যাডিলার তৈরি জ়াইকভ-ডি টিকার দ্বিতীয় স্তরের ট্রায়াল চলছে দেশজুড়ে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) ও পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি) থেকে সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেন নিয়ে ল্যাবোরেটরিতে তার স্ক্রিনিং করে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট BBV152 বানিয়েছে ভারত বায়োটেক।
সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, করোনার ভাইরাল স্ট্রেন নিষ্ক্রিয় করে ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট ডিজাইন করা হয়েছে। বায়োসেফটি লেভেল-৩ ল্যাবোরেটরির সুবিধা থাকায় ভারত বায়োটেকের ভাইরোলজিস্টরা সংক্রামক ভাইরাল স্ট্রেনের বিশেষ অংশ চিহ্নিত করে তাকে আলাদা করে নিয়েছেন। এরপরে সেই সংক্রামক স্ট্রেনকে বিশেষ বিজ্ঞানসম্মত উপায় পিউরিফাই করে তাকে নিষ্ক্রিয় বা ইনঅ্যাকটিভ (Inactive) করেছেন ।
এই নিষ্ক্রিয় ভাইরাল স্ট্রেন দুর্বল, তার সংক্রমণ ছড়ানো বা দেহকোষে ঢুকে প্রতিলিপি তৈরি করে সংখ্যায় বাড়ার ক্ষমতা নেই। কাজেই মানুষের শরীরে প্রয়োগ নিরাপদ ও সুরক্ষিত। অথচ এই ভাইরাল স্ট্রেন শরীরে ঢুকলে অ্যান্টিবডি তৈরির প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করতে পারে। দেশের ১২টি হাসপাতালে কোভ্যাক্সিনের কন্ট্রোলড ট্রায়াল চলছে।
[ আরও পড়ুন : অবশেষে করোনামুক্ত অমিত শাহ, আপাতত থাকবেন হোম আইসোলেশনে ]
এই হাসপাতালগুলির মধ্যে রয়েছে, দিল্লির এইমস, পাটনার এইমস, বিশাখাপত্তনমের কিং জর্জ হাসপাতাল, রোহতকের পিজিআইএমএস, কর্নাটকের জীবন রেখা হাসপাতাল, নাগপুরের গিল্লুরকর মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল, গোরক্ষপুরের রানা হাসপাতাল, চেন্নাইয়ের এসআরএম, হায়দরাবাদের নিজাম ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স, ভুবণেশ্বরের কলিঙ্গ হাসপাতাল, কানপুরের প্রখর ও গোয়ার একটি হাসপাতাল।
সুত্র: THE WALL