বিনা যন্ত্রণাতেই নেওয়া যাবে করোনা ভাইরাসের টিকা! নয়া আবিষ্কার এই আইআইটির গবেষকের
কলকাতা: সম্ভবত চলতি বছরের শেষেই বা আগামী বছরের শুরুতেই করোনাভাইরাস এর ভ্যাকসিন ভারতের বাজারে আসছে। আর সেই ভ্যাকসিন নিতে যাতে কোনো রকম যন্ত্রণা ব্যথা না হয় সে জন্য নয়া যন্ত্রই বানিয়ে ফেলল খড়গপুর আইআইটি গবেষক। মূলত প্রথম মাইক্রোনিডল বানিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছে খড়গপুর আইআইটি-এর এই গবেষক।
সারা ভারতে প্রথম এই ধরনের মাইক্রোনিডল বানিয়ে ফেলা সম্ভব হল। গবেষকদের দাবি এই ধরনের সূক্ষ্ম মাইক্রোনিডল এর আগে এই দেশে বানানো হয়নি। এর ফলে ইনঞ্জেকশনের জন্য আর কোন সিরিঞ্জ এর প্রয়োজন হবে না। গবেষকরা মাইক্রোনিডিল এর পাশাপাশি যাতে এর মাধ্যমে ওষুধ ঠেলে আমাদের শরীরে ঢুকে দেওয়া যায় তার জন্য বানিয়ে ফেলেছে মাইক্রো পাম্পও।
আরও পড়ুন : জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে টুইট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির
অভিনব এই দুই যন্ত্রের আবিষ্কার করেছেন খড়গপুর আইআইটি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ইলেকট্রনিক্স এন্ড ইলেকট্রিক কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ গবেষক অধ্যাপক তরুণ কান্তি ভট্টাচার্য্য। এই গবেষণা পত্রটি ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘নেচার’এবং ‘আইইইই’ তে।
গবেষণাটি হয়েছে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ও ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের আর্থিক সহায়তায়। এই প্রসঙ্গে গবেষক তরুণ কান্তি ভট্টাচার্য্য বলেন ” গত সাত বছর ধরে আমরা এই গবেষণাটি চালিয়ে যাচ্ছি। এই ধরনের যন্ত্র শুধুমাত্র এদেশে নয় অনেক দেশেই এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়নি।”
খড়গপুর আইআইটি গবেষকদের দাবি মূলত এই গবেষণার অভিনবত্ব হল যে এই যন্ত্রের মাধ্যমে সূচের ব্যাস অপ্রত্যাশিতভাবে কমিয়ে চুলের চেয়েও সরু করে তুলতে পেরেছেন। শুধু তাই নয় সূচ যাতে কোনওভাবেই পলকা না হয় তার জন্য তার শক্তি ও বাড়িয়ে দিতে পেরেছেন কয়েক গুণ। ফলে ত্বকের নিচে ঢোকানোর সময় সেই সূচ কোনভাবেই ভেঙেও যাবে না।
আরও পড়ুন : অঙ্কিতার ফ্ল্যাটের লোন দিয়েছেন সুশান্ত: রিয়া
এই প্রসঙ্গে গবেষক তরুণ কান্তি ভট্টাচার্য্য বলেন ” একটা চুলের চেয়েও সরু হওয়াতে এই মাইক্রোনিডল শরীরে ঢোকানো হলে বিন্দুমাত্র যন্ত্রণা অনুভূত হবে না। তার কারণ এই সুঁচ আকারে এতটাই ছোট এবং সরু যে তা আমাদের শরীরের নার্ভ গুলিকে ছুঁতে পারবে না।”
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতের বাজারেও তৈরি হচ্ছে ভ্যাকসিন বা টিকা। গবেষক তরুণ কান্তি ভট্টাচার্য্য এ প্রসঙ্গে বলেন ” সে ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস এর মোকাবিলা করতে যে ভ্যাকসিন তৈরীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ঈদ এসে সে ক্ষেত্রে এই যন্ত্র মাধ্যমে কোন যন্ত্রণা ছাড়াই ভ্যাকসিন নিতে পারবেন যে কেউ।” তবে এই যন্ত্রের মাধ্যমে অবশ্য টিকা নিতে কোন ডাক্তার বা নার্সের ও প্রয়োজন হবে না বলেই দাবি করছেন গবেষকরা।
আরও পড়ুন : ঝুঁকি নিয়ে ফল পাচ্ছেন হুমা
এর পাশাপাশি ভারতে করোনাভাইরাস ঠেকাতে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে খড়গপুর আইআইটি তরফে গবেষক তরুণ কান্তি ভট্টাচার্য ও আইআইটি কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ভট্টাচার্য বলেন ” আমরা এদেশে যারা ভ্যাকসিন প্রস্তুত করছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যাতে ভ্যাকসিন এর সঙ্গেই এই যন্ত্র দেওয়া যায়। তাহলে বিনা যন্ত্রণার মাধ্যমে যে কেউ করোনা ভ্যাকসিন বা করোনার মোকাবিলাতে যে টিকা নেবেন তা বিনা যন্ত্রণাতেই নিতে পারবেন।”–সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়
সুত্র: News18