ICSE বোর্ডে ফের পাঠক্রম বদল, জেনে নিন বিস্তারিত
করোনার জোরে দ্বিতীয় দফায় সিলেবাস কমালো আইসিএসই বোর্ড। তবে এবার সিলেবাস কমানোর কারণটা ভিন্ন। অনলাইন ক্লাসে সব ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে আসা যাচ্ছে না বলেই কার্যত দ্বাদশ ও দশম শ্রেণীর মেজর বিষয়গুলিতে সিলেবাস কমানোর সিদ্ধান্ত নিল বোর্ড। অর্থাত্ ফিজিক্স,কেমিস্ট্রি, বায়োলজি,অঙ্ক,ইকোনমিক্স, ইংরেজির মত বিষয়গুলিতে এবার সিলেবাস কাটছাঁট করা হল।
তবে বেশিরভাগ বিষয় প্র্যাকটিক্যাল-এর সিলেবাস কমানো হয়েছে। বিশেষত বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ICSE বোর্ড অনুমোদিত স্কুলগুলিতে অনলাইনে ক্লাস চলছে। কিন্তু এই অনলাইন ক্লাসের জেরে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কারণ অনলাইনে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নেওয়া কার্যত অসম্ভব। আর তাই ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির সিলেবাস থেকে প্র্যাকটিক্যাল এর বেশিরভাগ অংশই কাটছাঁট করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতেই বোর্ডের তরফে তা নোটিফিকেশন দিয়ে বিস্তৃত আকারে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে আইসিএসই বোর্ড বিভিন্ন স্কুলের থেকে জানতে চেয়েছিল অনলাইন ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের কেমন ফলাফল হচ্ছে । এক সপ্তাহ আগেই বিভিন্ন ক্লাসের রিপোর্ট জমা পড়েছে ।
তাতে দেখা গিয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন ক্লাসে লগইন করলেও কোথাও কোথাও নেটওয়ার্ক সমস্যা আবার কারোর অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকার সমস্যা সব মিলিয়ে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী শুধুমাত্র অনলাইন ক্লাসে লগ-ইন করছে।
সব ছাত্রছাত্রীকে অনলাইন ক্লাসের মধ্যে এখনও পর্যন্ত নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি বলেই আইসিএসই বোর্ড অনুমোদিত বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের বেশিরভাগ প্রিন্সিপাল রিপোর্ট দিয়েছে বোর্ডকে।
আরও পড়ুন : পরের মাসেই শুরু হবেনোভাভ্যাক্সের টিকার ট্রায়াল
একদিকে যেমন আগামী বছরের বোর্ড পরীক্ষা রয়েছে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর অন্যদিকে অনলাইন ক্লাসে এত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ না করার যে তারাও পিছিয়ে পড়তে পারে। আর সেই দিকে মাথায় রেখেই দশম ও দ্বাদশ এই দুই শ্রেণীতেই সিলেবাসের বিপুল কাটছাঁট করল বোর্ড।
এ প্রসঙ্গে গিয়ে বলতে গিয়ে সেন্ট্রাল মডার্ন স্কুলের প্রিন্সিপাল নবারুণ দে বলেন ” অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে বিশেষত পাহাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে বা বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। জেলার বিভিন্ন শহরতলি সংলগ্ন অংশেও আইসিএসই বোর্ড অনুমোদিত স্কুল রয়েছে।
এখন অনেক অভিভাবকরাই বিশেষত গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা আসছেন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। কিন্তু সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল হওয়ায় তারা অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না। আর তাই অনলাইন ক্লাসে কি পড়ানো হচ্ছে বা শিক্ষকরা যেটি পড়াচ্ছেন সেখান থেকে পিছিয়ে পড়ছেন ছাত্রছাত্রীরা।”
আইসিএসই বোর্ড গত জুলাই মাসে প্রথম দফায় সিলাবাস কমিয়েছিল। সেখানে অবশ্য মূল বিষয় গুলির সিলেবাস কাটছাঁট করেনি। কিন্তু বর্তমানে অনলাইন ক্লাসের কি প্রভাব পড়ছে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তার রিপোর্ট বিভিন্ন স্কুলের প্রিন্সিপাল থেকে পাওয়ার পরেই এবার মূল বিষয়গুলো কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নোটিফিকেশন জারি করেছে।
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নবারুণ দে বলেন ” অনলাইনে প্র্যাকটিক্যালের ক্লাস করানো অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভব। তাই এক্ষেত্রে থিওরিটিকাল এর চেয়ে প্র্যাকটিক্যালের সিলেবাসটাই বেশি কমানো হয়েছে। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়োলজি প্র্যাকটিক্যালের শেখানোর বিষয়গুলি রয়েছে তার মধ্যে থেকে অনেক অংশই বাদ দেওয়া হয়েছে।
যদিও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ রাখার চেষ্টা হয়েছে।” তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আগামী বছর কিভাবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষা নেওয়া হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আইসিএসই বোর্ড আলোচনা শুরু করেছে বলে সূত্রের খবর।
সূত্র: News18