জীবন যাত্রা

৩টি উপায়ে বিষন্নতা গ্রাস করে খাদ্যাভ্যাসকে

৩টি উপায়ে বিষন্নতা গ্রাস করে খাদ্যাভ্যাসকে - West Bengal News 24

বিষণ্ণতা বা ডিপ্রেসন নামক মানসিক ব্যাধিটি থাকতে পারে আমাদের যে কারও। জীবনে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির দ্বন্দ থেকেই আমাদের মনে বাসা বাঁধে হতাশা। কিন্তু স্বাভাবিক এই হতাশার অনুভূতি যখন প্রায়ই আমাদের ছুঁয়ে যায়, এমনকি অনেক সময় কোন কারণও থাকে না, এটি একটি অভ্যস্ত অনুভূতিতে পরিণত হতে থাকে তখন আমরা একে মানসিক ব্যাধি বলি। আমাদের খাদ্যাভ্যাসের সাথেও বিষণ্ণতা বোধের সংযোগ থাকে অনেক সময়।

অনেক বিষন্নতার রোগীর মাঝে লক্ষ্য করা গেছে ইটিং ডিসঅর্ডার। অনেক সময় আবার পুষ্টি সংক্রান্ত মানসিক ব্যাধি এনোরেক্সিয়া বা বুলিমিয়ার সাথেও ধরা পড়ে ডিপ্রেসন। এর ফলাফল খুবই মারাত্মক হতে পারে। কারণ ডিপ্রেসনের রোগী এমনিতেই হতাশার কারণে জীবনের স্বাভাবিক অনেক বিষয়েই নিরানন্দ বোধ করে। এই বোধ যখন তার খাদ্যাভ্যাসের সাথে জড়িয়ে যায় তখন তার অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে প্রবল। আসুন জেনে নিই ডিপ্রেসন কীভাবে খাদ্যাভ্যাসের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে!

১। শক্তির স্বল্পতা
হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তি হয়ত নিজের ভেতর থেকে সেই উদ্দীপনাই বোধ করেন না যে, তিনি দোকানে যাবেন আর নিজের জন্য খাবার কিনে আনবেন বা কিছু রান্না করে খাবেন। মানুষটির সামাজিক সম্পর্কগুলোও একটা প্রভাব ফেলে এক্ষেত্রে। তিনি যদি একা বাস করেন বা সম্পর্কের ভাঙ্গনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন এমন হয় তাহলে তাকে সময়মত খাওয়া বা স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার ব্যপারে বলার মত কেউ নেই হয়ত। এক্ষেত্রে নিজের অলসতা, অনাগ্রহ আরও জেঁকে বসতে পারে এবং অনিয়ম রোগীর অভ্যাসের অংশ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিষন্নতাগ্রস্থ রোগী যত একা থাকবেন ততই তার এই সমস্যা বাড়বে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকবে।

২। আমি খাব না
হিউমিলিয়েশন বা এবিউজের কারণে ডিপ্রেশনে ভুগছেন এমন রোগীরা প্রায়শই হীনমন্যতায় ভোগেন, অনিরাপদ বোধ করেন, নিজেদের মূল্যহীন মনে করেন। এধরণের রোগীরা তাঁর ডিপ্রসনের সাথে সম্পর্ক না থাকা স্বত্তেও খাবারকে অপছন্দ করা শুরু করতে পারেন। মনে করতে পারেন, এ খাবার তার জন্য নয়। হয়ত তিনি কারও কাছে বার বার শুনেছেন, ‘খাবারের দাম অনেক বেড়ে গেছে, আমাদের এই খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। এ খাবার আমাদের জন্য নয়।‘ হয়ত এ কথাটিই তাকে প্রভাবিত করেছে।

৩। খাবারকে বিকল্প হিসেবে নেওয়া
খাবার আমাদের মন ভাল করে দেয়। অনেক সময় যখন কিছুই ভাল লাগে না তখন এক কাপ ধোঁয়া ওঠা কফি বা একটা ডার্ক চকোলেট যেন বদলে দেয় আমাদের মনের অবস্থা। ইটিং ডিসঅর্ডার মানে শুধু এই নয় যে খাবারের প্রতি অনাগ্রহ তৈরি হবে, বরং অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও হতে পারে। বিষন্নতাগ্রস্থ রোগী খাবারকে তার মানসিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। বিষণ্ণতা মানুষের কাছ থেকে ধীরে ধীরে তার নিজের উপর সমস্ত নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেয়। তিনি হয়ত কখনো কারও সাথে কথা বলতেই পছন্দ করেন না, তখন তিনি কিনে খাবারও খান না। আবার কখনো তার কাছে খাবার খাওয়াই একমাত্র পথ মনে হয়। তখন তিনি মাত্রাতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন।

বিষন্নতাগ্রস্থ ব্যাক্তির খাবার গ্রহণের অনিয়ম তাকে দ্রুত অসুস্থ্য করে দিতে পারে। অসুস্থ্যতা মনকে আরও বিষন্ন করে। আর এভাবে সে একটা অবিচ্ছেদ্য চক্রে বাঁধা পড়ে যেতে থাকে। এমন অবস্থায় অবশ্যই একজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া উচিৎ।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য