করোনা রোগীদের জন্য ১০৪ বছরে প্রথমবার মাছ-মাংস ঢুকল ভারত সেবাশ্রম সংঘে
কঠোর নিয়মনীতি মেনে চলে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। আমিষ খাবার সেখানে নৈব নৈব। কিন্তু আর্তের সেবার কাছে কোনও নিয়ম বা নীতিই বড় নয়। করোনা রোগীদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে সেই দৃষ্টান্তই তুলে ধরল ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। রোগীদের সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য ১০৪ বছরের নিয়ম ভেঙে প্রথম মাছ-মাংস ঢুকল সঙ্ঘে। শুক্রবার গড়িয়ার প্রণব নগরের কোভিড হাসপাতাল খুলেছে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। আশ্রমের দুটি তলা কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
একটি তলায় ২৫টি বেড রয়েছে। তবে বেড আরও বাড়ানো হবে বলে জানানো হয়েছে সঙ্ঘের তরফে। কোভিড হাসপাতালে উদ্বোধন করেছেন সঙ্ঘের প্রধান সম্পাদক স্বামী বিশ্বাত্মানন্দ মহারাজ। জানিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতালের চেয়ে অনেক কম খরচে করোনা রোগীদের ভর্তি নেওয়া হবে। চিকিত্সার জন্য অক্সিজেন ও অন্যান্য সুবিধাও থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এই হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের জন্যই এত বছরের নিয়ম ভাঙতে দ্বিধা করেননি সঙ্ঘের স্বামীজিরা।
১৯১৭ সালে আচার্য শ্রীমত স্বামী প্রণবানন্দজি মহারাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ। তার পর থেকে একটা দিনের জন্যও আমিষ খাবার ঢোকেনি সঙ্ঘে। নেখান শৃঙ্খলাও খুব কঠোর। কিন্তু সঙ্ঘের স্বামীজিরা বলছেন, করোনা রোগীদের পুষ্টির জন্য প্রোটিন জাতীয় খাবার দরকার। তার জন্য মাথের ঝোল, চিকেনের হাল্কা স্ট্যু, ডিম সেদ্ধ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দিতে হবে রোগীদের। থাবারের তালিকায় রাখতে হবে পনির, সয়াবিন। রোজই কিছু পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাবার দিতে হবে রোগীদের।
তা না হলে শরীর সারবে না। সে কারণেই এতদিনের নিয়ম বদলানো হয়েছে। ধর্মীয় অনুশাসনের চেয়ে মানুষের প্রাণ বাঁচানোই বড় ধর্ম হয়ে উঠেছে। আশ্রমের প্রাক্তন ছাত্র রাজীব দত্তের উদ্যোগে এই কোভিড হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। সঙ্ঘের তরফে জানানো হয়েছে, যে রোগীদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে তাঁদের বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা ঠিক নয়। এদিকে হাসপাতালগুলিতেও কোভিড শয্যার অভাব। তাই মেডিক্যাল অক্সিজেনের সুবিধাযুক্ত আধুনিক হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। এখানে সর্বক্ষণ রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তাঁদের দেখাশোনার কোনও ত্রুটি হবে না। রোগীরা যাতে তাড়াতাড়ি সেরে উঠতে পারেন সেটাই আসল লক্ষ্য।
সুত্র :দ্য ওয়াল
