রাজ্য

‘ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি সহ্য করব না’ : মমতা

‘ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি সহ্য করব না’ : মমতা - West Bengal News 24

ইয়াস হানায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যের উপকূলীয় এলাকা। শুক্রবার হিঙ্গলগঞ্জে প্রশাসনিক বৈঠকে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের (Yaas) তাণ্ডবের পর জেলার বিভিন্ন অংশের পরিস্থিতি ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। জেলা থেকে পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত রয়েছেন এই বৈঠকে।

আকাশপথে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, ধামাখালি ও সাগরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা রাজ্য সরকারের তরফে ১ হাজার কোটি টাকা ত্রাণ দিচ্ছি। এখনও অবধি ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাকিটা পরে জানা যাবে। পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকা আকাশপথে ঘুরে দেখবেন। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে কলাইকুন্ডায় বৈঠক করবেন বলেই জানা গিয়েছে।

বৃহস্পতিবারই বৃহস্পতিবার বিপর্যয় মোকাবিলার রিভিউ মিটিংয়ে সেচ দফতরের সচিবকে দ্রুত বাঁধ মেরামতির পাশাপাশি তদন্তের নির্দেশ দেন মমতা। সেচ দফতরের সচিব নবীন প্রকাশকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ”দিঘায় পুরো বাঁধ কীভাবে ভাঙল? বাঁধ তৈরি করতে এত সময় কেন লাগছে? টাকা তো কম নিচ্ছে না। সব টাকা কি জলে ঢালছি? এই ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে।”

শুক্রবার প্রথম উত্তর ২৪ পরগণার হিঙ্গলগঞ্জে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠকে বলেন, ”ত্রাণ নিয়ে কোনও বঞ্চনা সহ্য করব না আমি। খাবার-দাবার, ত্রিপল বণ্টণে কার্পণ্য করা চলবে না। কারণ এ সব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে সরকারের।’

পূর্ব মেদিনীপুরে একাধিক বাড়ি-ঘর জলের তলায়। আশ্রয় কেন্দ্রেই দিন কাটছে একাধিক মানুষের।


আগের বার অনেক টাকা দিয়েছিলাম আমফানের সময়। একটা দুটো কেসের জন্য অনেক বদনাম শুনতে হয়েছিল। এটা যেন না হয়।

গরীব মানুষরা যেন ঠিকমতো টাকা পায় সেটা দেতে হবে। সরকারের বাঁধ ভাঙা টাকা নেই। প্রতিবছর হবে আর টাকা আসবে তা নয়।

ন্যায্য জিনিস যেন ন্যায্য মানুষ পায় তা জেলা শাসকদের দেখতে হবে।

বাঁধগুলির ব্যবস্থা করতে হবে। ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ পোতার লাক করতে হবে। কাঁচা মাটি দিয়ে বাঁধ করলে টাকাও জলে চলে যাচ্ছে আর পকেটে চলে যাচ্ছে। এটা করা যাবে না।

সাগরে ইয়াস সংক্রান্ত প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে রক্ষা করা, তাঁদের উদ্ধার করা ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিডিওরা অনেক কাজ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলিকে পথশ্রী পরিকল্পনার অধীনে মেরামত করা হবে। জেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে ফিল্ড সার্ভে করা হবে।’

তিলে তিলে নিজের জমি, বাড়ি-ঘর তৈরি করেছিলেন ৬৭ বছর বয়সি উমাকান্ত জানা। ইয়াস ঘূর্ণিঝড় আর উত্তাল সমুদ্র কেড়েছে সব। ষাটোর্ধ্ব বলেন, ‘আমার সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

জমি সব জলের তলায়। আমার যা যা ছিল সব কেড়ে নিয়েছে সমুদ্র।’ বলতে বলতে ভিজে যায় চোখের কোল, গলা ধরে আসে উমাকান্তের। কষ্ট চেপে বলে চলেন, ‘আমি বহু ঘূর্ণিঝড় ঝড় দেখেছি কিন্তু এমন ঢেউ আর জলোচ্ছ্বাস কখনও দেখিনি।’ সবিস্তারে পড়ুন- ‘যা ছিল সব কেড়ে নিয়েছে সমুদ্র’, ক্ষতির হিসেব গুনছে কৃষক-ব্যবসায়ীরা

ত্রাণের টাকা ঠিক মতো খরচের দিকে নজর দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বলেন, ”আমি অর্থ দফতরকে বলব, আমফানের (Amphan) সময় যে কাজ হয়েছে সেগুলোর অবস্থা কী রকম রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে। এত টাকা আমি জলে ঢালব না। সেচ দফতরকে বলব, আগে থেকে টাকা ছাড়বে না। একটা টাস্ক ফোর্স তৈরি করো। সব খতিয়ে দেখে তারপর টাকা ছাড়বে।”

সূত্র : দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য