রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) হলেন আসল বামপন্থী। এবারে এমন দাবি করলেন ইতিপূর্বে সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (Ritubrata Banerjee)। শনিবার তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তিনি তৃণমূল কংগ্রসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন।
আর তারপরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রকৃত বামপন্থী বলে দাবি করেন তিনি। ঋতব্রত বলেন, আমি মনে করি প্রকৃত বামপন্থী বলতে যা বোঝায় আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই। কারণ, অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য মমতা দিদি যে কাজ করেছেন, সেই কাজগুলি আসলে করা উচিত ছিল বামপন্থীদের। যা বামপন্থীরা করে উঠতে পারেননি।
তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের জন্য রাজ্যের মমতা স পড়ুনরকারের আমলে ৩৯৩ স্কোয়ার ফিটের কোয়ার্টার বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোট ২ লক্ষ ৬৪ হাজার এই রকম বাড়ি হবে। তিনি বলেন, ২০১১ সালে এই শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ছিল মাত্র ৬৭ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২০২ টাকা। বাংলায় বিগত ৩৪ বছরের বাম শাসনে এমনটা ঘটেনি বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিন রাজ্য আইএনটিটিইউসির সভাপতির পদ পাওয়ার পর ঋতব্রত বলেন, গত এক বছর ধরে মূলত শ্রমিক সংগঠনের জন্য বিভিন্নভাবে কাজ করেছি। এবার সেখানে দাঁড়িয়ে একদিকে বিজেপির শ্রমিক বিরোধী নীতি আর অন্যদিকে, বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রতিটি শ্রমিক পরিবারের কাছে পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যেতে চাই।
এদিন নতুন দায়িত্ব পেয়েই তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি। তবে ঋতব্রতর এই দায়িত্ব অনেকটা কাঁটার মুকুট বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
কারণ, সুত্রের খবর, সিপিএম থেকে তৃণমূলে এসে রাতারাতি শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতির পদ পেয়ে যাওয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না তৃণমূলের অনেকেই। অনেকে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, মূলত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশান্ত কিশোরের সমর্থনের কারণেই সিপিএমের এই প্রাক্তন সাংসদ তৃণমূলে অল্পদিন গিয়েই এমন বড় দায়িত্ব পেয়ে গেলেন।
তবে ঋতব্রত জানান, তৃণমূলের সিনিয়র টেড ইউনিয়নের নেতারা যারা রয়েছেন যেমন সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee), শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Shobhandev Chatterjee), মলয় ঘটক (Malay Ghatak), দোলা সেন এদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেই চলব। তাঁদের পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়েই কাজ করব। উল্লেখ্য, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় দুই দশকের বেশী সময় বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
তিনি দীর্ঘ আট বছর সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে সিপিএমের রাজ্য সভার সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। তবে ২০১৭ সালে সিপিএমের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ ঘটে। তারপর তিনি তৃণমূল কংগ্রেস নাম লেখান।
সুত্র : প্রথম কলকাতা