যেন তেন প্রকারে অশান্তির সৃষ্টি করতে হবে। আর সেখান থেকেই খেতে হবে ‘লাভের গুড়’। পরিস্থিতির ফায়দা তুলে নিজেদের জনসমর্থন আরও একটু বাড়িয়ে নেওয়া, প্রতিটা রাজ্যেই বিজেপি এই প্রক্রিয়াকেই হাতিয়ার করে। বাংলাতেও অন্যথা নয়। যার প্রমাণ মিলবে শুরু করেছিল ভোটের অনেক আগে থেকেই।
দিল্লির নেতারা বাংলা এসে একের পর এক উস্কানিমূলক মন্তব্য করে গিয়েছিলেন। ভোটের প্রচারে যে দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ভোটে ভরাডুবির পরেও অবশ্য সেই প্রচেষ্টা জারি রেখেছেন তিনি। এবার তার মন্তব্য, ‘রাজ্যের লোকাল ট্রেন চলছে না। তারমানে কোভিড পরিস্থিতির নিশ্চয়ই এখনও উন্নতি হয়নি।
যারা লোকাল ট্রেন চালাতে পারছে না তারা উপনির্বাচন চায় কী করে?’ রাজ্যের ৭ বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের দাবি করছে তৃণমূল, এদিন তার জবাব দিতে গিয়েই এমন মন্তব্য করলেন শুভেন্দু। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সাধারণ মানুষকে উত্তপ্ত করতেই এই মন্তব্য করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা।
বৃহস্পতিবারই দিল্লি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। রাজ্যে আসনগুলোতে নির্বাচন বাকি আছে এবং উপনির্বাচন হওয়ার কথা, সেগুলি দ্রুত সেরে ফেলার দাবি জানায় তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। বিষয়টিকে কটাক্ষ করতে গিয়ে এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি না হচ্ছে, টিকা করন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে ততদিন রাজ্যে কোনও নির্বাচন হোক এমনটা আমরা চাইছি না।’ এরপরই তুলে ধরলেন লোকাল ট্রেনের উদাহরণ।
প্রসঙ্গত, ভবানীপুর, খড়দহ-সহ মোট ৭ কেন্দ্রে নির্বাচন ও উপনির্বাচন করার দাবি নিয়ে একটি আবেদনপত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, শুখেন্দু শেখর রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভবানীপুর আসনে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিশাল মার্জিনে জিতলেও পরে তিনি ওই কেন্দ্র থেকে ইস্তফা দেন। ওই কেন্দ্রের উপনির্বাচনের লড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদি ১৫ অক্টোবরের আগে নির্বাচন না হয় তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে মমতাকে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের অভিযোগ, গোটা বিষয়টি বিজেপির ষড়যন্ত্র।
যে সময় কোভিড সংক্রমণ বেলাগাম সে সময় সারা রাজ্য জুড়ে বিধানসভা নির্বাচন করাতে পারল কমিশন, বরং তাতে চাপ ছিল বিজেপির। আর এখন রাজ্যে নিম্নমুখী সংক্রমণ, অথচ উপনির্বাচন করাতে পারছে না কমিশন। তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা, কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে লোকাল ট্রেন।
কেন্দ্রের উদাসীনতাতেই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছিল বাংলায়, তখন দায়িত্বে ছিল নির্বাচন কমিশন। সরকারি ফিরে তৃণমূল কংগ্রেস সেই ভুল করবে না বলেই দাবি করা হয়েছে।
সূত্র : এই মুহুর্তে