মাস্ক পরার অভ্যাস কমছে মানুষের, সতর্কবার্তা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের
করোনার দ্বিতীয় ওয়েভের প্রাবল্য কমার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মাস্ক পরার অভ্যাস কমেছে। আগামী দিনে আরও কমবে। শুক্রবার এভাবেই সকলকে সতর্ক করে দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। মন্ত্রকের জয়েন্ট সেক্রেটারি লব আগরওয়াল সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এখনও পুরোপুরি স্তিমিত হয়নি। কয়েকটি অঞ্চলে সংক্রমণ যথেষ্ট বেশি।
কেন্দ্রীয় সরকার একটি গ্রাফের মাধ্যমে দেখায়, মার্চ-এপ্রিলে মাস্ক পরার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই প্রবণতা তুঙ্গে উঠেছিল মে মাসে। কারণ ওইসময় দেশে সেকেন্ড ওয়েভের প্রাবল্য ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু জুন ও জুলাই মাসে মাস্ক পরার প্রবণতা কমেছে। অগাস্ট ও সেপ্টেম্বরে এই প্রবণতা আরও কমতে পারে।
সরকারের বক্তব্য, চারটি কারণে অনেকে মাস্ক পরতে চান না। প্রথমত, অনেকে বলেন, মাস্ক পরলে তাঁদের নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। দ্বিতীয়ত, অনেকের মাস্ক পরলে অস্বস্তি হয়। তৃতীয়ত কেউ কেউ মনে করেন, মাস্ক পরলেও করোনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না। অনেকে মনে করেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে মাস্ক না পরলেও চলবে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কবলে পড়তে চলেছে দেশ।
সেজন্য অত্যন্ত সতর্কভাবে পা ফেলছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দ্বিতীয় ওয়েভে ‘ব্যর্থতার’ জন্য দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল মোদী সরকার। তার ওপরে বৃহস্পতিবার বারাণসীতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারের ঢালাও প্রশংসা করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, অতিমহামারী মোকাবিলায় যোগী আদিত্যনাথের সরকার যে কাজ করেছে, তা প্রশংসনীয়। এই মন্তব্য নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে নানা মহলে। এরই মধ্যে শুক্রবার শোনা যায়, ছ’টি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ছ’টি রাজ্য হল তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্নাটক, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র ও কেরল। সম্প্রতি ওই রাজ্যগুলিতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
একটি সূত্রে খবর, মোদী বলেছেন, ছোট ছোট কনটেনমেন্ট জোন তৈরি করে করোনাকে শুরুতেই রুখে দিতে হবে। ভারতে তৃতীয় ঢেউ যাতে বেশি প্রভাব না ফেলে, সেজন্য এখন থেকেই তত্পর হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার হু-র প্রধান তেদ্রোস আদহানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হল, আমরা এখন কোভিডের থার্ড ওয়েভের প্রাথমিক স্তরে রয়েছি।’
হু প্রধানের মতে, নানা দেশে সামাজিক যোগাযোগ বেড়েছে। সর্বত্র কোভিড বিধি মেনে চলা হচ্ছে না। তাছাড়া অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের জন্যও সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউএন নিউজ অনুযায়ী, গত কয়েক মাস ধরে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় টিকাকরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একসময় ওই সব অঞ্চলে সংক্রমণ ও মৃত্যু, দুই-ই কমেছিল। কিন্তু সম্প্রতি সংক্রমণ ফের বাড়ছে। করোনাভাইরাসের অভিযোজন অব্যাহত রয়েছে। নতুন ভ্যারিয়ান্ট আরও ছোঁয়াচে হয়ে উঠছে।
সূত্র : দ্য ওয়াল