১৫ হাজার বছর আগের ভাইরাস
তিব্বতের বরফঢাকা একটি পর্বতশৃঙ্গে কাজ করছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেখান থেকে তাঁরা সংগ্রহ করেন বরফখণ্ড। আর সেসব বরফখণ্ডে তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন বেশ পুরোনো কিছু ভাইরাসের অস্তিত্ব। যেনতেন পুরোনো নয়, ১৫ হাজার বছর আগের ভাইরাস। শনাক্ত হওয়া এসব ভাইরাস বিজ্ঞানীদের কাছে একেবারেই অপরিচিত।
সিএনএন জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির জলবায়ু ও অণুজীববিজ্ঞানীদের একটি দল গবেষণার কাজে পশ্চিম চীনের গুলিয়া আইস ক্যাপে গিয়েছিলেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এখানকার উচ্চতা ২২ হাজার ফুট। ২০১৫ সালের ওই অভিযানে তাঁরা সেখান থেকে কিছু বরফখণ্ড নিয়ে আসেন। পর্যবেক্ষণের পর সেসব বরফখণ্ডে মিলেছে প্রাচীন ভাইরাসের অস্তিত্ব। এ–সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদন গত সপ্তাহে মাইক্রোবায়োম সাময়িকীতে প্রকাশ হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত শনাক্ত হওয়া ভাইরাসগুলো বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নথিভুক্ত করে রেখেছেন। তবে বরফখণ্ড থেকে সম্প্রতি সন্ধান পাওয়া ভাইরাস আগে থেকে নথিভুক্ত ছিল না।
অণুজীববিজ্ঞানী ঝিপিং ঝং সিএনএনকে জানান, প্রায় ১ হাজার ১৭ ফুট গভীর থেকে বরফ তুলে আনা হয়। পরে তা তিন ফুট লম্বা ও চার ইঞ্চি চওড়া করে কয়েকটি খণ্ডে কাটা হয়। পর্যবেক্ষণ করে বরফে সন্ধান মেলে ৩৩টি ভাইরাসের। এর মধ্যে ২৮টি একেবারেই অপরিচিত। গবেষণায় দেখা গেছে, শনাক্ত হওয়া এসব ভাইরাস মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়।
ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির মৃত্তিকাবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও প্রতিষ্ঠানটির বেয়ার্ড পোলার রিসার্চ সেন্টারের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী লোন্নিয়ে থম্পসন বলেন, বরফ ভাইরাসগুলোর চমৎকার সংরক্ষণাগার হিসেবে কাজ করেছে।
তবে প্রাকৃতিকভাবে বরফখণ্ডে সংরক্ষিত এসব ভাইরাস সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানেন না বললেই চলে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। এর জেরে মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে শুরু করায় বিষয়টি বিজ্ঞানীদের মনোযোগ কেড়েছে। এই বিষয়ে থম্পসন আরও বলেন, কোভিড–১৯ মহামারি বিজ্ঞানীদের আগের চেয়ে সচেতন করেছে। তাঁরা ভাইরাস, অণুজীব নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছেন।