ওপার বাংলা

২২ দিনের সন্তান হত্যা: রূপকথার গল্প সাজানো সেই মা কারাগারে

২২ দিনের সন্তান হত্যা: রূপকথার গল্প সাজানো সেই মা কারাগারে - West Bengal News 24

রাত ৩টার দিকে ঘরের দরজায় ঠকঠক শব্দ। দরজা খুলতেই সামনে সাদা শাড়ি পড়া দুই নারী। তারা বলতে থাকেন- ‘তোর ছেলেকে দে, পানি খাওয়াব।’ ছেলেকে কোলে দেওয়ার পর দুই নারী বলেন, ‘তোর ছেলেকে এখনই দিয়ে যাব।’ এরপর শিশুটিকে নিয়ে চলে যায় দুই নারী। অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও ছেলেকে নিয়ে না ফেরায় চিৎকার শুরু করেন মা।

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ২২ দিনের নবজাতক নিখোঁজ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন রূপকথার গল্প শোনান মা সাবিকুন্নাহার। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার। শনিবার বিকেলে বাড়ির পাশের পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর রোববার দুপুর পর্যন্ত পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা।

পুলিশ জানায়, সন্তান জন্মের ২২ দিন হলেও বুকে দুধ না আসায় খাওয়াতে পারেননি মা সাবিকুন্নাহার। নাতিকে বেশিরভাগ সময় নিজেদের কাছেই রাখতেন দাদা-দাদি, দেখাশোনাও তারাই করতেন। সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়াতে পারা ও আদর করতে কাছে না পাওয়ার হতাশা থেকেই রাতের আঁধারে সন্তানকে পুকুরে ফেলে দেন সাবিকুন্নাহার। স্বামী হুমায়ুন মিয়ার করা মামলায় রোববার বিকেলে নবজাতক হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবিকুন্নাহার।

জানা গেছে, দেড় বছর আগে বিয়ে হয় তারাকান্দা উপজেলার বিসকা ইউনিয়নের লালমা গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন মিয়া ও সাবিকুন্নাহারের। ২২ দিন আগে পৃথিবীতে আসে এ দম্পতির প্রথম সন্তান নাঈম মিয়া। শুক্রবার রাতের শেষ ভাগে শিশুটির নিখোঁজ হওয়া নিয়ে ওই রূপকথার গল্প সাজান মা সাবিকুন্নাহার। এরপর শনিবার বিকেলে বাড়ির পাশের পুকুরে ভেসে উঠে নবজাতকের লাশ। পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধারের পর শনিবার রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত সাবিকুন্নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এদিকে সন্তান হত্যার কারণ জানার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন মামলার বাদী হুমায়ুন মিয়া।

তারাকান্দা থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, নিজের সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করার পর আদালতের নির্দেশে সাবিকুন্নাহারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য