কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করেই ঝেড়ে ফেলুন বাড়তি বিদ্যুৎ বিল, বিদ্যুৎ বিল কমান ৫০% পর্যন্ত
যতবার আমরা বিদ্যুতের বিল পাই, আমাদের মনের মধ্যে একটি আতঙ্ক তৈরি হয় যে, এবারের বিল যেন আগের বিলের চেয়ে বেশী না হয়। তবে, কিছু করার পরিবর্তে আমরা কেবল এই ভেবেই চুপ থেকে যায় যে এটা সরকারের নির্ধারন করা রেট এবং আমাদের কাছে এত বেশী আসা বিল দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই, যা ভুল। নীচে দেওয়া কয়েকটি উপায়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল কমান অনেকটাই।
1) রিমোট ও অ্যাপ্লায়েন্স: সুইচ অফ v/s স্ট্যান্ড বাই: রিমোটের সাথে কাজ করা অ্যাপ্লায়েন্স গুলি (যেমন- টিভি, এসি ইত্যাদি) যখন আমরা রিমোট দিয়ে অফ করি তখন সেগুলো সম্পূর্ণ সুইচ অফ হয় না, সেগুলো স্ট্যান্ড বাই মোডে চলে যায়। স্ট্যান্ড বাই মোডে থাকা কালীন সরঞ্জাম গুলি ৫% মত পাওয়ার কনজিউম করতে থাকে। তাই যখনই আপনি সেই অ্যাপ্লায়েন্স গুলি ব্যবহার করবেন না বলে অফ করবেন তখন রিমোট দিয়ে অফ না করে সুইচ বোর্ড থেকে কানেকশন অফ করবেন।
5 স্টার প্রোডাক্ট কিনুন: বাড়ির জন্য নতুন কোনো ইলেকট্রিক প্রোডাক্ট কিনলে চেষ্টা করবেন ফাইভ স্টার রেটিং ওয়ালা প্রোডাক্ট কিনতে। ফাইভ স্টার প্রোডাক্ট গুলির দাম একটু বেশী হলেও এই প্রোডাক্ট গুলি অনেক পরিমাণে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। তাই এবার থেকে নতুন কিছু কেনার সময় রঙ, ফিচার্স এসবের সাথে সাথে স্টার রেটিং টাও খেয়াল রাখবেন।
2) লাইট বাল্ব: বিদ্যুৎ সাশ্রয়কারী বাল্ব : পুরোনো ফিলামেন্ট যুক্ত বাল্ব এর চেয়ে কমপ্যাক্ট ফ্লুরোসেন্ট বাল্ব অর্থাৎ CFL বেশী বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। আবার CFL এর চেয়ে LED বাল্ব আরো বেশী বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। তাই বাড়ির পুরোনো বাল্ব গুলো পরিবর্তে LED বাল্ব ব্যবহার করুন। এখন প্রায় সব বাড়িতেই এলইডি বাল্ব ব্যবহার হলেও অনেক বাড়িতেই পুরোনো টিউব লাইট রয়ে গেছে।
সেগুলোর পরিবর্তে LED টিউবলাইট লাগান। LED টিউবলাইট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার সাথে সাথে অনেক বেশী টেকসইও। প্রাকৃতিক আলোর ব্যবহার: পর্দা এবং দরজা বন্ধ করে দিয়ে লাইটের নিচে কাজ করার পরিবর্তে, প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করা অর্থনৈতিক এবং শারীরীক উভয় দিকের জন্যই ভালো। 3) ডিসকাউন্ট/ছাড়: ডিউ ডেটের আগে বিল জমা দিন: ভারতে সাধারনত বিল দেওয়ার ডিউ ডেটের আগে বিল জমা দিলে ২ থেকে ৪ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। তাই সব সময়ই বিল দেওয়ার ডিউ ডেটের আগে বিল জমা দিন।
অনলাইন অফার: বর্তমান সময়ে আমরা প্রায় সকলেই অনলাইন ব্যাঙ্কিং, পেটিএম, ফোন পে, গুগল পে এসব ব্যবহার করি। এই পেমেন্ট এপ্লিকেশন গুলিতে নানান সময় নানা অফার চলে। সেই অফার গুলি ব্যবহার করে বিল জমা দিলে আপনি বেশ ভালো রকম ক্যাশ ব্যাক পেয়ে যাবেন। তাছাড়া কোনো অফার ছাড়াই এমনিতেই অনলাইন বিল পেমেন্টে অতিরিক্ত ১% ছাড় থাকে।
4) Refrigerator (ফ্রীজ) ও Air Conditioner (এসি): রেফ্রিজারেটরকে ঠান্ডা জায়গায় রাখুন: রেফ্রিজেটরকে সূর্যের আলো, ওভেনের তাপ সহ সমস্ত তাপের উত্স থেকে দূরে রাখুন এবং বাড়ির সবচেয়ে ঠান্ডা জায়গায় রাখার চেষ্টা করুন। ফ্রীজের চারপাশটা ফাঁকা রাখুন ও ফ্রীজের পেছনের কয়েল পাইপ গুলি নিয়মিত পরিস্কার করুন যাতে এয়ার ফ্লো হতে অসুবিধে না হয়।
রেফ্রিজারেটর এভাবে ব্যবহার করুন: রেফ্রিজারেটরের দরজা খোলার আগে ঠিক করে নিন কী বের করবেন বা রাখবেন এবং চেষ্টা করবেন সবচেয়ে কম সময়ের জন্য দরজা খোলা রাখার। গরম খাবার বাইরে ঠান্ডা করে তারপর ফ্রীজে রাখবেন। বরফ বানানোর কম্পার্ট্মেন্টের ডিফ্রস্ট সুইচটি নিয়মিত ব্যবহার করবেন।
24-25 ডিগ্রী তে এসি চালান: এয়ার-কন্ডিশনার (এসি) দ্বারা গ্রাহিত বৈদ্যুতিক শক্তি তাপমাত্রা সেটিংয়ের উপর অনেক বেশি নির্ভর করে। সুতরাং আপনি 18 ডিগ্রি তাপমাত্রায় এসি চালালে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ক্ষয় হবে 24-25 ডিগ্রি তে এসি চালালে তার চেয়ে অনেক কম বিদ্যুৎ ক্ষয় হবে। তাই এসির তাপমাত্রা খুব কম না রেখে ২৪-২৫ ডিগ্রীতে রাখুন।
নতুন এসি কিনলে 5 স্টার – ইনভার্টার ভিত্তিক এসি কিনুন: ইনভার্টার টেকনলজি যুক্ত এসি সাধারণ এসির চেয়ে অনেক বেশী বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। এই কয়েকটি খুবই সাধারণ উপায়ে বিদ্যুৎ বিল কমান খুব সহজেই।