খাস কলকাতায় ই-সিমকার্ডের নামে ৮৪ লক্ষ টাকা জালিয়াতি! পুলিশের জালে মহিলা-সহ ২
আবারও বড়সড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটলো খাস কলকাতার বুকে। ই-সিম দেওয়ার নাম করে সল্টলেকের এক ব্যবসায়ীর কাছে থাকা মোবাইলের সিম নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে ৮৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যদিও ওই ব্যবসায়ী দ্রুত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই ঘটনার অভিযোগ জানাতে পুলিশও কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়তে বেশি সময় নেয়নি। আর তার জেরেই এক মহিলা সহ ২জন পুলিশের হাতে এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে।
সেই সঙ্গে তাঁদের কাছে থেকে ১৬টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে যেখানে প্রায় ২ কোটি টাকা রয়েছে। ধৃত দু’জনকেই ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাদের ২৬ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই জালিয়াতি চক্রের বাকি সদস্যদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, শিবরাম অরোরা নামে সল্টলেকের এক ব্যবসায়ীকে গত ৩১ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত ক্রমাগত একটি মোবাইল সংস্থার নাম করে ‘ব্লাস্ট সার্ভিস’এ মেসেজ পাঠিয়ে ই সিমকার্ড নিতে অনুরোধ জানানো হয়। তিনি কার্যত বাধ্য হয়ে জালিয়াতদের মেসেজে সাড়া দেন। এর পরই ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে তাঁর সিমকার্ড হ্যাক করা হয়।
কিছুক্ষণের জন্য তাঁর মোবাইলের সিমকার্ড নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়। ওই সময়ের মধ্যেই তাঁর মোবাইলের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয় জালিয়াতরা। তারপরে পরেই তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৮৪ লক্ষ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়। মোবাইলে নতুন ই সিমকার্ড চালু হওয়ার পর তিনি জানতে পারেন যে, হেয়ার স্ট্রিট এলাকায় তাঁর বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে পড়ে রয়েছে মাত্র তিনশো টাকা। এরপরেই শিবরাম এই বিষয়ে হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ।
আরো পড়ুন : সেলফি তুলতে গিয়ে জলে ডুবে মারা গেল ৮ বছরের এক শিশু
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য ধরে প্রথমে গ্রেফতার করে রাহুল রায়চৌধুরীকে। তাকে জেরা করে হদিশ মেলে সোমা দাসের। তাকেও গ্রেফতার করা হয়। জালিয়াতির টাকার সন্ধান শুরু করতেই দুইজনকে জেরা করে কলকাতার বিভিন্ন ব্যাঙ্কে তাদের ১৬টি অ্যাকাউন্টের হদিশ মেলে। এর মধ্যে কোনওটিতে রয়েছে ২০ লক্ষ টাকা, আবার কোনওটিতে ৪ বা ৫ লক্ষ টাকা।
সব মিলিয়ে প্রায় ২৩ কোটি টাকার সন্ধান পায় পুলিশ। আর এখানেই লালবাজারের গোয়েন্দাদের সন্দেহ শুধু শিবরাম নয়, শহরের আরও অনেককেই সম্ভবত এই কায়দাতেই ঠকিয়েছে এই জালিয়াতরা। তবে এই বিষয়ে প্রতারিতরা কেন পুলিশকে কিছু জানাননি তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। একই সঙ্গে তাঁরা এটাও দেখছেন যে এই ঘটনার পিছনে আরও কে কে জড়িত আছে।
সূত্র: এই মুহুর্তে