পাদ্রীর বিরুদ্ধে ধর্মান্তরণের অভিযোগ, ২৫ বছরের যাজককে বেধড়ক মার উন্মত্ত জনতার
গণপিটুনির ঘটনায় ক্রমেই বেড়ে চলেছে গোটা দেশজুড়েই। সম্প্রতি ছত্তিশগড়ের কাওয়ার্ধায় একটি বিস্ময়কর ঘটনা সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, ওই এলাকারই ২৫ বছরের পাদ্রী কাওয়াল সিং পারাস্তকে বেধড়ক মারধর করেছে প্রায় শতাধিক লোকের একটি দল। তার বিরুদ্ধে ধর্মান্তকরণের অভিযোগ তুলে কয়েকদিন থেকে তাকে শাসাচ্ছিল এলাকার কিছু যুবক। অবশেষে সকাল ১১ টার দিকে কাওয়ার্ধায় পলমি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
ছিঁড়ে ফেলা হয় ধর্মীয় বই, মারধর করা হয় মহিলাদেরও
উত্তেজিত জনতার দাবি, দীর্ঘদিন থেকেই নাকি বলপূর্বক অনেকের ধর্মান্তকরণ করিয়েছে ওই পাদ্রী। এদিকে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে রবিবার সকাল ১১ টার দিকে পলমি গ্রামে আচনকাই ওই পাদ্রীর বাড়িতে হানা দেয় শতাধিক লোকের একটি দল। জোর করে পুরোহিতের বাড়িতে প্রবেশ করে তারা, চলে বেধড়ক মারধর। সেই সময় আবার পাদ্রীর বাড়িতে প্রার্থনা চলছিল। কিন্তু সেসবের তোয়াক্কা না করেই সেখানে রাখা ধর্মীয় বইও ছিঁড়ে ফেলে উত্তেজিত জনতা। উপাসনার জিনিসপত্রও ভেঙে ফেলা হয়। তছনছ করা হয় গোটা বাড়ি।
আরো পড়ুন : ওয়েব সিরিজকে অনুপ্রেরণা ধরে নিয়ে সোনার দোকানে ডাকাতি! গ্রেপ্তার ৩
দায়ের হয়েছে মামলা
ওই পাদ্রী ছাড়াও মারধর করা হয় তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও। মহিলাদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যখন পুলিশ পৌঁছায় ততক্ষণে অভিযুক্তরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শুরু হয়েছে তদন্ত প্রক্রিয়া। এদিকে এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা গয়েছে খ্রিস্টান ফোরামের তরফে।
আরো পড়ুন : মহারাষ্ট্রে মন্দির খোলার দাবিতে রাস্তায় বসে আন্দোলনে বিজেপির
সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
ইতিমধ্যেই ফোরামের তরফে একটি পিআইএল দাখিল করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ছত্তিশগড় খ্রিস্টান ফোরামের সভাপতি অরুণ পান্নালাল এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফোরাম এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিআইএলও দায়ের করবে। গত ১৫ দিনে ধর্মীয় স্থানে প্রায় ১০ টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমি খুবই দুঃখিত যে আইন প্রশাসন থাকার পরেও সরকার এসব বন্ধ করতে পারছে না।”
আরো পড়ুন : কাশ্মীরে এসে তালেবান নিয়ে যা বললেন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা
বাড়ছে উত্তেজনা
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই ঘটনা প্রসঙ্গতে ছত্তিশগড় সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দিতে দেখা্ যায় নি। পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন সরকারি আধিকারিকেরা। এদিকে অভিযুক্তরা সকলেই কমবেশি এলাকার লোক হওয়া সত্ত্বেও এখনও পুলিশ কেন তাদের নাগাল পাচ্ছএ না সেই প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে এই ঘটনার জেরে গতকাল থেকেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ছে ছত্তিশগড়ের রাজনৈতিক মহলে।
সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া