রাজ্য বিজেপির (BJP) অন্দরে বড়সড় রদবদলের সম্ভাবনা। সূত্রের খবর, পর্যবেক্ষকের পদ থেকে সরতে পারেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও শিবপ্রকাশ। তবে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসাবে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অমিত মালব্যর। যদিও এ নিয়ে বিজেপির অন্দরে কেউ কোনও কথা বলতে নারাজ।
শোনা যাচ্ছে, বিজেপির অন্যতম নেতা বিএল সন্তোষকে আপাতত সাংগঠনিক বিষয় দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। রাজ্যে আরএসএসের সংগঠন মজবুত করাও লক্ষ্য গেরুয়া শিবিরের। সে দায়িত্ব পেতে পারেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি যে ফলের প্রত্যাশা করেছিল তা পূরণ না হওয়ার কারণেই আবারও বাংলায় নতুন করে সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে চাইছে দিল্লির নেতৃত্ব। এ ছাড়া ভোটের ফল প্রকাশের পর বাংলায় বিজেপির অন্দরেও একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। মূলত, নেতাদের ‘ঘরওয়াপসি’ একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ভোটের আগে অন্যদল থেকে আসা নেতাদের গুরুত্ব বাড়ানো নিয়ে দলের পুরনো কর্মীদের মধ্যেও একটা ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে তার প্রকাশও দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন : আপত্তিকর ছবি প্রকাশের হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা, দিল্লিতে গ্রেফতার ৫
তাই ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে বঙ্গে বিজেপি চাইছে সুসংহত, মজবুত সংগঠন। প্রয়োজনে পুরনো মুখ সরিয়ে অভিজ্ঞ নয়া মুখ আনা হবে বলেও খবর। বিজেপি সামগ্রিক ভাবে বাংলার সংগঠনে একটা বদল আনতে চাইছে বলেই খবর। যার সূচনা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। দিলীপ ঘোষকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করে নতুন রাজ্য সভাপতি হিসাবে সুকান্ত মজুমদারকে তুলে আনা হয়েছে।
এবার নতুন রাজ্য কমিটিও হতে চলেছে বলেই সূত্রের দাবি। আর তা দীপাবলির পর পরই ঘোষণা করা হতে পারে। বিজেপির একটা শক্ত মাটি যেহেতু আরএসএস, তাই আবারও ফেরানো হতে পারে সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। যিনি দীর্ঘদিন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আরএসএস নেতা সুব্রত চট্টোপাধ্যায় একসময় ছিলেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন)। রাজ্য বিজেপি সভাপতির পর গেরুয়া শিবিরে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদ হিসাবেই এটাই বিবেচিত হয়। টানা সাত বছর রাজ্য বিজেপির এই পদে ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন : জওয়ানদের পাশে থাকার বার্তা, পুলওয়ামা হামলার সেই ঘটনাস্থলে রাত কাটালেন অমিত শাহ
দলের কলেবর বৃদ্ধির সময় অনেকটা যেন ছাঁকনির কাজ শুরু করেছিলেন দিলীপ-ঘনিষ্ঠ এই নেতা। মুকুল রায় যখন তৃণমূল ভাঙিয়ে একের পর এক নেতাকে গেরুয়া পতাকা তুলে দিচ্ছেন, সে সময় নাকি সুব্রতবাবুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নাকি তলানিতে ঠেকে। তার পর গত বছরের অক্টোবরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পান অমিতাভ চক্রবর্তী। সেই সুব্রতবাবুকে এবার আরএসএসে বড় পদ দেওয়া হচ্ছে।
সুব্রতবাবুকে অপসারণের সময় দলের একাংশ রব তোলে, আখেরে এতে বঙ্গ বিজেপির বড় ক্ষতি হল। যদিও সে সময় নেতৃত্ব সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। তবে আবারও তাঁকে ফেরানো হচ্ছে বলেই সূত্রের খবর। অন্যদিকে সূত্রের দাবি, কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও শিবপ্রকাশকে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসাবে আর রাখা হবে না। সে জায়গায় নতুন মুখ নিয়ে আসা হবে। এরকমই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভাবনা বলে সূত্রের দাবি। অর্থাৎ ২০২৪কে সামনে রেখে সামগ্রিক ভাবে রাজ্য বিজেপি ব্যাপক পরিবর্তন আনতে চলেছে। যাতে সাংগঠনিক ভাবে তারা মজবুত হতে পারে।
সুত্র : টিভি ৯