‘পরিকল্পনাহীন সিদ্ধান্ত’, সবদিক বিচার করে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিলে ভাল হতো : কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার
পরিকল্পনা না করে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল-কলেজ খোলা (School and College Reopening ) ঠিক নয়। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় এমন কথাই বললেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। কেন্দ্র সরকার স্কুল-কলেজ খোলা নিয়ে ১৪টি অ্যাডভাইজারি পাঠিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের তরফে তার কোনও জবাব দেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন সুভাষ সরকার।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলেন, “আমরা স্কুল-কলেজ খোলার পক্ষে। কিন্তু এটা করার আগে বেশ কয়েকটা বিষয় দেখে নিতে হবে। প্রথমেই নভেম্বরের শুরুতে দেখে নেওয়া উচিৎ কোভিডের গ্রাফ কী অবস্থায় থাকে। বাড়ছে নাকি কমছে। এর সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের ব্যবস্থা,
ট্রেন চলাচল এগুলো সবকিছু আটকে দিলাম, এ ভাবে তো হয় না। কোভিড বিধি মেনে টিকাকরণকে সম্পূর্ণ করে নেওয়া উচিৎ। পড়ুয়াদের মধ্যে যাতে সামাজিত দূরত্ব থাকে, সেই অনুযায়ী ইচ্ছা করলে অর্ধেক পড়ুয়া আসতে পারে একদিন একদিন করে। এ ভাবে চিন্তা করা উচিৎ।”
আরও পড়ুন : কয়লা পাচার কাণ্ডে রাজ্যের আইনমন্ত্রীকে তিন ঘন্টারও বেশি সময় ধরে জেরা করল ইডি
তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “এ নিয়ে যদি কিছু বলতেই হয় তা হলে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী কথা বলবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বা আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে। সুভাষ সরকার নামে কোনও পরামর্শদাতা তো আমরা নিয়োগ করিনি। বাংলা সুভাষ সরকারের কোনও পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজনও বোধ করে না।
বাস ট্রেন বা অন্যান্য আনুসঙ্গিক যা কিছু বিষয় তা নিয়ে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, রাজ্য সরকারের কিছু ধ্যান ধারনা রয়েছে। বাচ্চাদের স্কুল-কলেজ, তাই সমস্ত দিক বিবেচনা করেই যা করার করা হবে। এতদিন ধরেও সেটাই করা হয়েছে।”
এর আগে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “স্কুল কলেজ খোলার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে উচিত ছিল… বা এখনও সময় আছে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের পরামর্শ নিয়ে এটা করা। অন্তত আইসিএমআরের সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়। শিশুদের সুরক্ষা এবং কোভিডের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। দুই থেকে আঠারো ভ্যাকসিনেশনের সুবিধা ভারত সরকার করে দিয়েছে। ভ্যাকসিনে দলবাজি না করে দ্রুত ভ্যাকসিনেশন করে দেওয়া উচিত।”
গত সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, কালীপুজো, ভাইফোঁটা, জগদ্ধাত্রী পুজো শেষ হতেই স্কুল খোলা হবে। ১৬ নভেম্বর থেকে খুলবে স্কুলের দরজা। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে। এরপর ধাপে ধাপে বাকিদেরও ক্লাস চালু হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই রাজ্যের শিক্ষা দফতর জেলাগুলিতে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কী ভাবে স্কুল খুলতে হবে।
এখনও আমাদের মাথায় করোনার খাঁড়া ঝুলছে। পুজোর পর থেকে রাজ্যে সংক্রমণ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্কুল খোলা হলে কী কী নিয়ম মানতে হবে ছাত্রছাত্রীদের? কোন কোন ব্যবস্থা নিতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে? সেই সমস্ত নিয়ম-নীতি জানিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ নিয়ে তৈরি ২৮ পাতার বুকলেট প্রকাশ করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। স্কুল খোলার আগে প্রতিটি স্কুলে পৌঁছে যাচ্ছে এই ‘স্কুল রিওপেন বুকলেট’।
সুত্র : টিভি ৯