৪২ দিন পর জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারে আশার আলো দেখেছিলেন রাজ্যবাসী। তবে মাত্র ৭ দিনের মাথায় ফের অচলাবস্থা তৈরি হল সরকারি হাসপাতালগুলিতে। মঙ্গলবার সকাল ৭টায় ১০ দফা দাবিতে পুরোদমে কর্মবিরতিতে নামলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নিরাপত্তার দাবিতে চিকিৎসকদের এহেন সিদ্ধান্তে কার্যত অচল হয়ে গেল রাজ্যের ২৮টি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ফলস্বরূপ, চিকিৎসা করাতে এসে চরম ভোগান্তির শিকার হলেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।
রোগীদের পরিবারের অনেকেই জানিয়েছেন, চিকিৎসা করাতে এসে তাদের দিনের পর দিন হাসপাতালে ঘুরতে হচ্ছে। বলা হচ্ছে, চিকিৎসকদের সংখ্যা সীমিত। অল্প সংখ্যক চিকিৎসককে বিপুল সংখ্যক রোগী দেখতে হচ্ছে। ফলে, ডাক্তার দেখাতে এসে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। তারপরও নিজেদের দাবিতে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্যের পক্ষ থেকে কোনও দৃশ্যমান পদক্ষেপ না করাতেই, তাঁরা ফের পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতিতে ফিরছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সোমবার জুনিয়র চিকিৎসকদের সমস্ত পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে রাজ্যের ২৮টি হাসপাতালে সিসিটিভি বসানো এবং শৌচাগার নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। ১০ অক্টোবরের মধ্যে সিসিটিভি বসানোর কাজ হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যর পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুনিয়র ডাক্তাররা হাসপাতালগুলিতে শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবা দিচ্ছেন। বহির্বিভাগ ও অন্য ক্ষেত্রে পরিষেবা দিচ্ছেন না। জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং অবশ্য জানান, রাজ্যর এই বক্তব্য ঠিক নয়। জুনিয়র চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় পরিষেবা দিচ্ছেন। প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কেন শুধু প্রয়োজনীয় পরিষেবার কথা বলা হচ্ছে? তাহলে কি সব ক্ষেত্রে তাঁরা কর্তব্য পালন করছেন না? ইন্দিরা জয়সিং জানান, প্রয়োজনীয় পরিষেবার মধ্যে বহির্বিভাগ পড়ে না। এরপর প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, “হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্যান্য বিভাগ-সহ সমস্ত ক্ষেত্রে পরিষেবা দিতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের।
রাজ্য সরকারের অনুরোধ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কোনও কিছুকেই গ্রাহ্য না করে জুনিয়র ডাক্তারদের স্পষ্ট বক্তব্য, কর্মস্থলে চিকিৎসকদের কোনও নিরাপত্তা নেই। যার জেরে সাগরদত্ত, রামপুরহাট এমনকি গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতেও চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। যতদিন না নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে, ততদিন চলবে এই আন্দোলন। এদিকে কর্মবিরতির জেরে আজ সকাল থেকে বন্ধ ইন্ডোর ও আউটডোর। অর্থাৎ বাইরের রোগী দেখা হবে না। যারা ভর্তি সেই রোগীদের চিকিৎসাও অথৈ জলে। বন্ধ অস্ত্রোপচার।