২০১৬ সালের গোটা প্যানেলই বাতিল করে দিল শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার কলমের এক আঁচড়েই চাকরি গেল ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর। খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে চাকরিহারাদের হাহাকার। ময়দান চত্বরে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার পর্যবেক্ষণ, কলকাতা হাই কোর্টের রায়ই ঠিক। গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াই অস্বচ্ছ। বড় মাপের দুর্নীতি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া ভুলে ভরা। তাই কলকাতা হাই কোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপে করা উচিত নয়। দাগি চাকরিরতদের চাকরি যাওয়াই উচিত।”
নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় কলকাতা হাই কোর্টে মামলা চলছিল। গোটা প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেন বিচারপতি। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টেও বাতিল হল এসএসসির ২০১৬ সালের ২৬ হাজারের প্যানেল। চাকরিচ্যুতদের বেতন ফেরত দিতে তো হবেই , বেতন ফেরত দিতে হবে ১২ শতাংশ সুদের হারে। দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল, কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাতিল হয়েছিল ২০১৬-র এসএসসি প্যানেল। মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কোর্টের কলমের খোঁচায় চাকরি হারিয়েছিলেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী।
শীর্ষ আদালতের এই রায়ের ফলে যোগ্যদের চাকরি গেলেও বয়সসীমা বাড়িয়ে ফের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে। যারা সরকারের অন্যদপ্তরে আগে চাকরি করতেন, পুরনো চাকরি ফেরত পাওয়ার জন্য তিন মাসের মধ্যে আবেদন জানাতে পারবেন। রাজ্য সরকারকে এই আবেদন দ্রুত বিবেচনা করে দেখতে হবে। তবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের চাকরি গেলেও বেতন বন্ধ হবে না। বেতন ফেরতও দিতে হবে না। পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত মানবিকতার খাতিরে বেতন পাবেন বিশেষ চাহিদা সম্পন্নরা। অন্যদিকে , এসএসসি মামলা ফৌজদারি তদন্ত চলবে আগের মতোই।
সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলাকালীন স্কুল সার্ভিস কমিশন ‘অযোগ্য’ দের নামের একটি তালিকা জমা দেয়। সেখানে ‘দাগি’ শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি। পরে অবশ্য আরও একটি তালিকা দিয়েছিল এসএসসি। তাতে আরও কিছু নাম জমা দেওয়া হয়। গত ১০ই ফেব্রুয়ারি ছিল শেষ শুনানি , স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, র্যাংক জাম্প বা প্যানেল বহির্ভূত নিয়োগের তথ্য থাকলেও ওএমআর শিট কারচুপির তথ্য তাদের কাছে নেই। তদন্তকারী সংস্থা সি বি আই ও চেয়েছিল ২৬ হাজার জন্য চাকরি বাতিল হোক। সবপক্ষের সওয়াল শোনার পর রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। আজ চূড়ান্ত রায় শোনালেন তিনি।