প্রযুক্তি

প্রতারণার নতুন ফাঁদ, ‘কল মার্জিং’ কী? কীভাবে কাজ করে

প্রতারণার নতুন ফাঁদ, ‘কল মার্জিং’ কী? কীভাবে কাজ করে - West Bengal News 24

আপনি যতই সতর্ক থাকুন না কেন হ্যাকাররা প্রতারণার কোনো না কোনো পথ ঠিকই বের করে ফেলবে। সম্প্রতি নতুন এক প্রতারণার কথা ফাঁদ বের করেছে হ্যাকাররা। আর তা হচ্ছে— কল মার্জিং। অনেকেই হয়তো বুঝে উঠতে পারছেন না এই কল মার্জিং আবার কী? আর কীভাবেই বা এর মাধ্যমে প্রতারণা করা হচ্ছে।

কল মার্জিংয়ের মাধ্যমে অনেকেই প্রতারিত হয়েছেন। কল মার্জিং বলতে একাধিক ফোনকলকে একত্রিত করে কনফারেন্স কলে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। সাধারণত এটি অফিসিয়াল মিটিং, বন্ধুদের সঙ্গে একযোগে কথা বলা বা জরুরি আলোচনার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে প্রতারণার জন্যও অনেকেই এই প্রযুক্তির অপব্যবহার করে, যা ব্যক্তিগত ও আর্থিক নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হতে পারে।

হ্যাকাররা আপনাকে বিভিন্ন সংস্থার বিভিন্ন অফার সম্পর্কে বলতে ফোন দিচ্ছে। এরপর আপনাকে বলা হতে পারে, তাদের কোনো বড় কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে। এ জন্য তাকে কল কনফারেন্স বা কল মার্জিং করতে হয়। এ জন্য আপনাকে পারমিশন দিতে হবে। একটি ওটিপি যাবে ফোনে, সেটি তাদের সঙ্গে শেয়ার করতে বলবে। আর এ কাজটি করলেই আপনার ফোনের সব তথ্য চলে যাবে তাদের হাতে।

আরও পড়ুন :: ইন্টারনেটের যে ভয়ংকর ফাঁদে পড়তে চলেছেন আপনিও!

আপনার দেওয়া ওটিপির মাধ্যমে হ্যাকাররা আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে টাকা তুলে নিতে পারে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে প্রতারণা করতে পারে।

চলুন কল মার্জিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণা কীভাবে করা হয় সে বিসয়ে বিস্তারিত জেনে নিই—

১. সিম সুইপিং বা ফ্রড কল: প্রতারক প্রথমে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারপর আরেকজন ব্যক্তিকে কল করে তাদের কথা শুনিয়ে বিভ্রান্ত করে।

২. ভুয়া পরিচয় ব্যবহার: প্রতারক নিজেকে ব্যাংক প্রতিনিধি, পুলিশ কিংবা সরকারি সংস্থার লোক পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে।

৩. পার্সোনাল ইনফরমেশন হাতিয়ে নেওয়া: কল মার্জিং করে কথোপকথনের মাঝে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ওটিপি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বা পাসওয়ার্ড জেনে নেওয়া হয়।

৪. ব্ল্যাকমেইল: কেউ যদি কল মার্জিংয়ের মাধ্যমে আপনার কথোপকথন রেকর্ড করে রাখে, তাহলে পরে এটি ব্ল্যাকমেইল করার জন্য ব্যবহার করতে পারে।

আরও পড়ুন :: ফোন কি শতভাগ চার্জ দেয়া ঠিক, ব্যাটারি ভালো রাখবেন যেভাবে

সে জন্য কল মার্জিং প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। আসুন জেনে নিই কল মার্জিং থেকে নিরাপদ থাকার উপায় —

১. অপরিচিত নম্বর থেকে আসা কল সম্পর্কে সতর্ক থাকুন: যদি কেউ হঠাৎ করে আপনাকে বলে যে আপনার ব্যাংক বা মোবাইল অপারেটর থেকে কল এসেছে, তাহলে নিশ্চিত না হয়ে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না।

২. কল রেকর্ড ও ট্র্যাকিং ফিচার ব্যবহার করুন: যদি সন্দেহ হয়, তাহলে মোবাইলের কল রেকর্ডিং অপশন চালু রাখুন বা কল ট্র্যাকিং সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।

৩. ওটিপি বা গোপন তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না: ব্যাংক, বিকাশ কিংবা নগদের মতো কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা কখনই ওটিপি চাইবে না। যদি কেউ চায়, তাহলে বুঝতে হবে এটি প্রতারণা।

৪. কল ওয়েটিং ও ফরওয়ার্ডিং চেক করুন: প্রতারকেরা মাঝে মাঝে আপনার কল ফরওয়ার্ড করে দেয়। তাই আপনার ফোনের কল ফরওয়ার্ডিং সেটিংস নিয়মিত চেক করুন।

৫. সন্দেহজনক হলে কল কেটে দিন ও ব্লক করুন: যদি মনে হয় কল মার্জিং করে আপনাকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, তাহলে দ্রুত কল কেটে দিন এবং সেই নম্বর ব্লক করুন।

৬. বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারকে সচেতন করুন: অনেক সময় বয়স্ক বা প্রযুক্তি সম্পর্কে কম জানেন এমন মানুষ সহজেই প্রতারণার শিকার হন। তাই তাদেরও এ বিষয়ে সচেতন করা জরুরি।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য