ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা: মার্কিন বিদেশ সচিবের ফোনে শান্তির আহ্বান
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
তিন বছর পার হলেও, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও অব্যাহত রয়েছে। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েল যুদ্ধে মত্ত, তবে থামানোর কোনও লক্ষণ নেই। এ পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। যে কোনও মুহূর্তে পহেলগাঁও হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতীয় সেনা পাকিস্তানে আঘাত হানতে পারে, এমন আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। দিল্লিতে পরিস্থিতি নিয়ে তৎপরতা তুঙ্গে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিক বৈঠক করছেন। এই সংকটময় সময়ে আমেরিকার বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ফোন করে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান।
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন ভ্যালিতে ঘটে যাওয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। হিন্দু পরিচয় জানার পর ২৬ জনকে গুলিতে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। এই ঘটনায় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তইবা সংগঠনের হাত রয়েছে, এমন অভিযোগ করছে ভারত। এর প্রতিবাদে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে দিল্লি। পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালাচ্ছে পাক সেনা। বিষয়টি নিয়ে দিল্লি ইসলামাবাদকে সতর্ক করেছে। দুই দেশের সেনা আধিকারিকরা হটলাইনে আলোচনা করেছেন, যেখানে পাকিস্তানকে সীমান্ত সংঘর্ষে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি মন্ত্রীসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, এবং গতকাল রাতে তিনি জয়শংকর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
এদিকে, জানা গেছে, পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার পর মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও বুধবার রাতে জয়শংকর ও শাহবাজকে ফোন করেন। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহতদের প্রতি শোক জানিয়ে তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতকে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি ভারতকে এই অঞ্চলে উত্তেজনা কমাতে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য উত্সাহিত করেন। জয়শংকর এক্স হ্যান্ডেলে এই কথোপকথন শেয়ার করে বলেন, ‘মার্কিন বিদেশ সচিব মার্কো রুবিওর সঙ্গে পহেলগাঁও হামলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যারা এই নির্মম ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজকে রুবিও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে হবে।’
উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে কাশ্মীরের তিন ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন, এবং বৃহস্পতিবার শুনানি হবে। পহেলগাঁও হামলার পর ইতিমধ্যেই এনআইএ তদন্ত শুরু করেছে। সেনাকে হামলার প্রত্যাঘাতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। এদিকে, পহেলগাঁও হামলার এক সপ্তাহ পরেও হামলাকারীরা মুক্তভাবে ঘোরাফেরা করছে। এ পর্যন্ত কাশ্মীরে একাধিক অভিযান চালানো হলেও হামলার মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার বা নিকেশ করা সম্ভব হয়নি। তবে এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র।