কেউ ‘গ্রুপ ক্যাপ্টেন (সম্মানসূচক)’, কেউ ‘টেরিটোরিয়াল আর্মির কর্নেল’। কপিল দেব, শচীন তেন্ডুলকর, মহেন্দ্র সিং ধোনি, নীরজ চোপড়া, অভিনব বিন্দ্রা, রাজ্যবর্ধন সিং রাঠৌরের মতো বহু ক্রীড়াবিদ ভারতের সেনাবাহিনীর টেরিটোরিয়াল আর্মির সম্মানসূচক পদে রয়েছেন। বর্তমান ভারত-পাক উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—তাঁদের কি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কোনও ভূমিকা পালন করতে হতে পারে? তেমন সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।
শুক্রবারই কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধান চাইলে টেরিটোরিয়াল আর্মিকে মাঠে নামানো যেতে পারে”। মূল সেনাবাহিনীকে রসদ বা লজিস্টিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কাজে এই বাহিনীকে কাজে লাগানো যাবে। পাশাপাশি তাঁদের দিয়ে নিরাপত্তার কাজ কিংবা অন্যান্য জরুরি কাজও করানো হতে পারে। তবে যদি পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায়, তখন তাঁদের সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রেও নামানো হতে পারে বলে আশঙ্কা।
টেরিটোরিয়াল আর্মি ঠিক কী?
এই বাহিনী মূলত স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে গঠিত এক সহায়ক মিলিটারি ইউনিট। যারা অবসরে যাওয়া সেনাকর্মী, বেসামরিক পেশায় যুক্ত মানুষজন এবং সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নাগরিকদের নিয়ে তৈরি। ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন সময় সহায়তা করাই এদের মূল দায়িত্ব। এই বাহিনীতে ক্রীড়াবিদ, রাজনীতিক-সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি যুক্ত আছেন। এই তালিকায় যেমন আছেন কপিল দেব, শচীন, ধোনি, নীরজ, অভিনব বা রাঠৌর—তেমনই আছেন অনুরাগ ঠাকুর ও শচীন পাইলটের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও।
অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের নিয়ম একটু আলাদা। যেমন রাশিয়া বা চীনে জরুরি পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকেও জোর করে যুদ্ধে পাঠানো যায়। কিন্তু ভারতে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। টেরিটোরিয়াল আর্মিই এখানে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, শচীন বা ধোনিরা যদি সেনার ডাক পান, তাহলেও মূলত তাঁদের দায়িত্ব হবে রসদ বা সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার মতো সহায়ক কাজ।
তবে একমাত্র যদি পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, সেক্ষেত্রেই অস্ত্র হাতে তুলে নিতে হতে পারে তাঁদের। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, “সম্মানসূচক পদাধিকারীদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর সম্ভাবনা একেবারেই নগণ্য”।