পহেলগাঁও-এ সন্ত্রাসবাদী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন নিরপরাধ নাগরিক। তার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এই সাহসিক অভিযান পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটিতে ধ্বংস নেমে আনে।
সেনার এই বীরত্বকে সম্মান জানাতে রাজ্য বিধানসভায় মঙ্গলবার একটি বিশেষ প্রস্তাব পেশ করা হয়। সেই অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে কটাক্ষ করেন “পুলওয়ামা হামলা” প্রসঙ্গে। তাঁর মন্তব্য, “নির্বাচন আসলেই একটা পুলওয়ামা করতে হবে! এটা যেন না হয়।”
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা এলাকায় জঙ্গি হানায় শহিদ হন ৪০ জন জওয়ান। এই ঘটনার পর, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার চার বছর পর তৎকালীন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক এক সাক্ষাৎকারে মোদি সরকারের প্রতি অভিযোগ করেন, “পুলওয়ামার সেই ঘটনার জন্য পদে পদে সরকারের ব্যর্থতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং অপরিপক্কতা দায়ী।”
মঙ্গলবারের অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী সেই বক্তব্য উদ্ধৃত করে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানতে চান, “পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তার অভাব কেন ছিল?” এরপর বলেন, “সেনাদের সম্মান জানিয়ে, জন্মভূমিকে শ্রদ্ধা জানিয়েও বলব, কেন্দ্র সরকারের আরও স্ট্রং হওয়া উচিত ছিল।” সেনার এই অভিযানের নাম দেন ‘অপারেশন সন্ত্রাস’।
তাঁর কথায়, “বাংলাই একমাত্র নির্বাচিত সরকার যেখানে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা হচ্ছে। সব বিধানসভা, লোকসভায়, রাজ্যসভায় এই প্রস্তাব আনা উচিত।” রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আনা প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানালেও, বিজেপির তরফে কিছু প্রশ্ন তোলা হয়, যা শাসক দলের মতে ভিত্তিহীন। ফলে সেনাকে সম্মান জানানোর মতো এই উদ্যোগেও বিরোধী দল রাজ্যের পাশে দাঁড়ায়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া প্রতিক্রিয়া, “আমি জন্মভূমিকে শ্রদ্ধা জানাই। কিছু মানুষ দেশকে ভালোবাসে। আর কেউ কেউ নিজের ‘মার্কেটিং’ করতে ভালোবাসেন।”
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনি বিরোধী দলনেতা? লজ্জা! সামান্য ভদ্রতাও জানেন না। বিধানসভায় মিথ্যা বলছেন! বাইরে কী করেন কে জানে?”