শনিবার ভোরে আশঙ্কা সত্যি করে তেল আভিভে পালটা হামলা চালায় ইরান। ইজরায়েলের ‘অভেদ্য’ আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অতিক্রম করে তেহরানের ছোড়া মিসাইল আঘাত হানে সে দেশের সেনাবাহিনীর প্রধান ঘাঁটিতে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই ঘটনায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন দেশ।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে (যদিও ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’ ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি)। ওই ফুটেজে দেখা যায়, মধ্য তেল আভিভের কিরিয়া অঞ্চলে ইরানের একটি মিসাইল তীব্র বিস্ফোরণ সহকারে আছড়ে পড়ে, যেখানে অবস্থিত ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর। হামলার পর সম্ভাব্য বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার ইজরায়েল হামলা চালিয়েছিল ইরানের উপর। তখন থেকেই পালটা আক্রমণের সম্ভাবনা ঘনিয়ে উঠেছিল। সেই আশঙ্কা সত্যি করে শনিবার ৬৫ মিনিটের মধ্যে ২০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ছোড়ে ইরান। এমনটাই জানাচ্ছে সংবাদমাধ্যম। তবে এই হামলার জবাবে ইজরায়েলও পালটা প্রতিঘাত করেছে।
তেহরান এই আক্রমণকে নাম দিয়েছে ‘”অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩”’। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মূল লক্ষ্য ছিল ইজরায়েলের সেনাঘাঁটিগুলো। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ১ জন নিহত এবং ৩৪ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইজরায়েল শুক্রবার ইরানের ৩৩০টিরও বেশি স্থানে ‘”অপারেশন রাইজিং সান”’ চালিয়েছে এবং শনিবার ফের প্রতিরোধমূলক হামলা চালিয়েছে। এই সমস্ত অভিযানে মোট মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭৮ জনের, আহতের সংখ্যা প্রায় ৩২০।
ইরানের সামরিক ঘাঁটি এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলিকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির সেনাপ্রধান মহম্মদ বাঘেরি, রেভোলিউশনারি গার্ডসের নেতা হোসেন সালামি, এমার্জেন্সি কমান্ডের প্রধান, আরও দুই উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা এবং প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানি। এছাড়াও নিহত হয়েছেন পারমাণবিক গবেষণার সঙ্গে যুক্ত অন্তত ৬ জন বিজ্ঞানী। আরও বহু সেনা ও আধিকারিক নিহত হয়েছেন ইজরায়েলের হামলায়।
ইরান এবং ইরাক তাদের আকাশপথ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়ায় গোটা মধ্যপ্রাচ্যে বিমান চলাচল কার্যত থমকে গেছে। বহু আন্তর্জাতিক উড়ান সংস্থা তাদের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার ফের ইরান ও ইজরায়েলের পরস্পরের উপর হামলার ঘটনায় যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল ও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে গোটা অঞ্চলে।