ইরানের পরমাণু ঘাঁটিতে নিখুঁত হামলা কীভাবে সম্ভব হল? ‘মিডনাইট হ্যামার’-এর বিস্তারিত জানাল আমেরিকা
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
সপ্তাহের শেষে রবিবার রাতে ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে ভয়াবহ আঘাত হানে আমেরিকা। এর ফলে ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষে সরাসরি জড়িয়ে পড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তেহরান কিছু বুঝে ওঠার আগেই বি-২ বোমারু বিমান এবং GBU-57 ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর বা বাঙ্কার ব্লাস্টার বোমা দিয়ে ধ্বংস করা হয় ইরানের পরমাণু কেন্দ্র ফরদো, নাতানজ ও ইসফাহান। এই অভিযান কীভাবে সফল হল এবং ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে কীভাবে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হল, সে সম্পর্কেই রবিবার আমেরিকার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ-এর চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন একটি সাংবাদিক বৈঠকে বিস্তারিত তথ্য দেন।
ওই সাংবাদিক সম্মেলনে জেনারেল কেইন ব্যাখ্যা করেন, মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের একাধিক শাখা সম্মিলিতভাবে এই অভিযান চালায়। তিনি জানান, শুক্রবারই বি-২ বোমারু বিমান আমেরিকা থেকে যাত্রা শুরু করে এবং ১৮ ঘণ্টার দীর্ঘ উড়ানের পর নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। “ইরানে হামলা চালানোর সময়ে ইরানের প্রতিরক্ষা বিভাগের তরফে কোনওরকম প্রতিরোধ আসেনি। ইরানের কোনও যুদ্ধবিমানও আকাশে ওড়েনি। ফলে আমাদের অনুমান ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমাদের শনাক্ত করতেই পারেনি।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, এর আগে ১২ জুন রাতে তেহরানে পরিকল্পিত হামলা চালায় ইজরায়েল। ওই হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ সেনাকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানীরা নিহত হন। সেইসঙ্গে ইরানের একাধিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও নষ্ট হয়ে যায়। ওই দিনেই ইজরায়েল এক দফা বিমান হানাও চালায় ইরানের পরমাণু প্রকল্পগুলিতে, কিন্তু সেগুলি ভূগর্ভস্থ হওয়ায় উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এবার সেই অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বি-২ বিমান রাডারে সহজে ধরা না পড়ার মতো স্টেলথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি। তবুও সর্বোচ্চ সুরক্ষার জন্য আমেরিকা একাধিক মিসাইল নিক্ষেপ করে ইরানের রাডার সিস্টেমকে বিভ্রান্ত করে। সেই সুযোগে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় যুদ্ধবিমান এবং হামলা চালানো হয় পরিকল্পনা অনুযায়ী। উল্লেখ্য, গত ২০ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ‘দু’সপ্তাহের মধ্যে ইরানে হামলা চালানো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ কিন্তু বাস্তবে মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবার ভোরে) হামলা চালানো হয় তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে।
এই ঘটনার পর রোববার সন্ধ্যায় পেন্টাগনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই হামলার উদ্দেশ্য ইরানের রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থাকে পাল্টানো নয়। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেঠ বলেন, “এই মিশন (ইরানের) শাসনব্যবস্থাকে পরিবর্তনের জন্য ছিল না।”