বিচিত্রতা

বন্ধ উত্‍সব-অনুষ্ঠান, চার্লি চ্যাপলিন সাজার জন্য কেউ ডাকছে না আর

বন্ধ উত্‍সব-অনুষ্ঠান, চার্লি চ্যাপলিন সাজার জন্য কেউ ডাকছে না আর - West Bengal News 24

সরকারি অনুষ্ঠানই হোক, বা কোনও সামাজিক উত্‍সব, এমনকী বিয়েবাড়ি বা জন্মদিনের ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানেও ডাক পড়ে তাঁদের। কোথাও রামকৃষ্ণ, কোথাও গোপাল ভাঁড়, কোথাও আবার মিকি মাউজ, চার্লি চ্যাপলিন সেজে দাঁড়িয়ে থাকার চ্যালেঞ্জ। শীতের শেষে পাতাঝরা থেকে সিজন শুরু। গোটা চৈত্রমাস জুড়ে তো নাওয়া-খাওয়ার সময় পর্যন্ত মেলে না।

এ বার উল্টেপাল্টে গেছে সবকিছু। করোনা রুখতে লকডাউন। উত্‍সব নেই, অনুষ্ঠান নেই। তাই কাজও নেই। নদিয়ার শান্তিপুরে মডেলের কাজ করেন প্রায় আটশো শিল্পী। তাঁদের পরিবারের সদস্য আরও প্রায় তিন হাজার। চৈত্রমাস শেষ হয়ে গেছে, এসে গেছে বৈশাখ। তবু এ বারা আর ঘর থেকে বাইরে আসা হয়নি তাঁদের। কাজ নেই, তাই রোজগারও বন্ধ। এ পাড়ার এক শিল্পী রাজেশ ব্যানার্জি বলেন, ”বছরের শেষদিনে চড়কের মেলায় চাল ডাল সবজি মিলিয়ে আয় হয় অনেকটাই। এ বছর কিছুই জুটল না।

এ বার আর পূজো পার্বণ আদৌ হবে কি না কে জানে?” আরেক শিল্পী নৃপেন দেবনাথের কথায়, ”বৈশাখ মাসের শুরু থেকেই প্রচুর অর্ডার আসে। তার উপরেই খেয়েপড়ে বেঁচে থাকি আমরা। এবছর সব ফাঁকা।” শিল্পী ষষ্ঠী বিশ্বাস বলেন, ”গত ১২ বছর ধরে পুজো পার্বণ থেকে বিয়ে বাড়ি এবং সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেক কাজ করেছি। এ বছর অনেক অর্ডার পেয়েছিলাম। এমন দুর্যোগ আসবে, বুঝতেই পারিনি। যাঁরা বায়না দিয়েছিলেন সবাই ক্যানসেল করে দিয়েছেন। এমন অবস্থা কতদিন চলবে সেটাও কারও জানা নেই।”

শান্তিপুরের এই মডেল শিল্পীদের কাজের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে নানা অধ্যবসায়, মনোসংযোগ আর ধৈর্যের গল্প। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন তাঁরা। এটাই তাঁদের কাজের শর্ত। ষষ্ঠীবাবু বলছিলেন, ”এমনকী পিঁপড়ে কামড়ালেও নড়াচড়া করা যাবে না। দর্শকের সামনে তাকিয়ে থাকতে হয় একদৃষ্টে। যাতে চোখের পাতাটুকুও না পড়ে।” এমন অধ্যাবসায় দিয়েই প্রজন্মের পর প্রজন্ম মানুষের মনোরঞ্জন করছেন তাঁরা। তাতে কোনও কষ্ট নেই। বরং আছে অদ্ভুত এক আনন্দ।

সেই জীবনটাই এ বার এলোমেলো হয়ে গেল করোনা ঝড়ে। সরকারি নিষেধাজ্ঞায় বিয়ে ,পূজো-পার্বণ সবই বন্ধ। শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দের কাছে তাই আর্থিক প্যাকেজের জন্য দাবি জানিয়েছেন এই শিল্পীরা। অজয়বাবু বলেন, ”অবশ্যই ওঁদের সাহায্য করা হবে। করোনা এবং ডেঙ্গু নিয়ে তাঁরা যাতে বিভিন্ন সময়ে প্রচারে অংশ নিতে পারেন সে ব্যাপারেও নজর দেব আমি।”

সুত্র:THE WALL

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য