প্রাণায়ামের সময় মাঠে মণ্ডপ ব্যবসায়ীর মৃত্যু, স্মরণসভায় স্বাস্থ্য-সচেতনতার আবেদন
স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: মাঠে ছোটাছুটি করে এসে রোজদিনের মতো বর্ণালী মাঠে প্রাণায়াম করছিলেন বছর বাহান্নোর রিঙ্কু কুণ্ডু। আচমকা অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোতে থাকে। ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। গত ২৪ জুন ঝাড়গ্রাম শহরের বলরামডিহি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। রিঙ্কু মণ্ডপ নির্মাণ পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর অসময়ে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না স্বজন-বন্ধুরা।
মণ্ডপ নির্মাণ পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঝাড়গ্রাম জেলা ডেকরেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে রবিবার ঝাড়গ্রাম শহরের ডিএম হলে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হল। প্রয়াত রিঙ্কুর স্মৃতিচারণ করলেন সংগঠনের সদস্য ও তাঁর পরিচিতজনেরা। স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি স্বদেশ হাজরা, সম্পাদক অতুল খিলাড়ি, বর্ণালী ক্লাবের সম্পাদক রতন মল্লিক, সমাজ-কর্মী অশোক মহাপাত্র প্রমুখ। ছিলেন মাইক ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরাও। রিঙ্কুর স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছেন।
আরও পড়ুন : সমবায় ব্যাঙ্কে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ, প্রতিবাদে তৃণমূল
স্মৃতিচারণায় রিঙ্কুর পরিচিতজনেরা বলছিলেন, প্রাণায়াম করার সময়ে তিনি সেদিন মাস্ক পরে ছিলেন। আচমকা যে এমন ঘটনা ঘটবে সেটা কেউই বুঝতে পারেননি। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, প্রাণায়ামের সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রিঙ্কুর মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহের ময়নাতদন্তও হয়েছিল। তবে রিঙ্কুর বন্ধুবান্ধবেরা জানালেন, রিঙ্কুর কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল। তবে নিয়মিত শরীর চর্চা ও প্রাণায়াম করতেন তিনি। পঞ্চাশোর্ধ্বদের শরীর সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। রিঙ্কুও সচেতন ছিলেন। নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন। কিন্তু তিনি শারীরিক অস্বস্তির কথা সময়মতো পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধদের জানালে তাঁকে এভাবে হারাতে হতো না।
পরোপকারী রিঙ্কুকে ভালবাসতেন এলাকার সকলে। এদিন স্মরণসভায় বারে বারে সেই কথাই বলছিলেন সকলে। সেই সঙ্গে বয়স পঞ্চাশের কোঠায় ঠেকলে নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর বিষয়টিও উঠে আসে আলোচনা প্রসঙ্গে। ঝাড়গ্রাম জেলা ডেকরেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বদেশ হাজরা বলেন, ‘‘এই বয়সে রিঙ্কুর চলে যাওয়া আমরা কেউই মেনে নিতে পারছি না। তবে এই ঘটনার শিক্ষা নিয়ে সবাইকার কাছে অনুরোধ রাখছি, বয়স বাড়লে শরীরে কোনও সমস্যা আছে কি-না তা জানার জন্য এবং উপযুক্ত নিরাময়ের জন্য চিকিৎসক দেখান।’’