ঝাড়গ্রাম

সরকারি পুরস্কারের টাকা স্কুলের উন্নয়নে দান করলেন প্রধানশিক্ষক

সরকারি পুরস্কারের টাকা স্কুলের উন্নয়নে দান করলেন প্রধানশিক্ষক - West Bengal News 24

স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: ‘শিক্ষারত্ন’পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক নিজের স্কুলকে দান করলেন এক লক্ষ টাকা। শিক্ষারত্ন সম্মান বাবদ ২৫ হাজার টাকা পেয়েছিলেন ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের ধানশোল আদিবাসী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক বাণীপদ পাত্র।

তার সঙ্গে নিজের তরফ থেকে আরও ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে একলক্ষ টাকার তহবিল গড়ে স্কুলের উন্নয়নে সেই টাকা দান করলেন বাণীপদবাবু। বুধবার স্কুলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ছিলেন গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের বিডিও দোবজ্যোতি পাত্র, ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভাশিস মিত্র, গোপীবল্লভপুর পূর্ব চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমজিৎ বর্মন প্রমুখ। বাণীপদবাবু একজন আদর্শ শিক্ষক।

৫৮ বছরের বাণীপদবাবুর বাড়ি গোপীবল্লভপুরের ছাতিনাশোল গ্রামে। বিজ্ঞানের স্নাতক ও ইতিহাসের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত তিনি। এলাকার আদিবাসী পড়ুয়াদের কাছে এই স্কুলটি এখন যেন ‘স্বপ্নপুরী’। অথচ আগে এ রকম কিন্তু ছিল না। খড়ের ছাউনি দেওয়া মাটির স্কুল বাড়ির জায়গায় এখন মাথা তুলেছে তিন তলা পাকা স্কুল ভবন। এ জন্য বাণীপদবাবুর কৃতিত্বও কম নয়।

১৯৮২ সালে এই স্কুলে সহশিক্ষক পদে যোগ দেন বাণীপদবাবু। ১৯৯৪ সাল থেকে স্কুলের প্রধানশিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। আশির দশকে বাণীপদবাবু প্রথম যখন সহ-শিক্ষক পদে যোগ দেন তখন স্কুলটি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত জুনিয়র হাইস্কুল ছিল।

আরও পড়ুুন: দেখা মিলল মানুষের মতো এক বিরল প্রাণীর!(ভিডিও)

তিনি প্রধানশিক্ষক হওয়ার পরে এলাকার আদিবাসী পড়ুয়াদের স্বার্থে শিক্ষা দফতরে বহু আবেদন নিবেদন করে ১৯৯৯ সালে দশম শ্রেণি পর্যন্ত হাইস্কুলের অনুমোদন আদায় করেন। এর পরে ২০১১ সালে স্কুলটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। উচ্চ মাধ্যমিকস্তরে কলাবিভাগ আছে কেবল।

এই স্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা মাধ্যম ও সাঁওতালি মাধ্যম রয়েছে। স্কুলে রয়েছে বৃত্তিমূলক শাখাও। এই শাখায় ইলেকট্রিক্যাল হাউজ অয়্যারিং, মোটর হুইলার রিপিয়ারিং এবং সিভিল কনস্ট্রাকশন নিয়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে।

সরকারি পুরস্কারের টাকা স্কুলের উন্নয়নে দান করলেন প্রধানশিক্ষক - West Bengal News 24

স্কুলে রয়েছে ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক দু’টি দোতলা হস্টেল। সেখানে সরকারি অনুদানে নিখরচায় থেকে পড়াশোনার সুযোগ পায় আবাসিক পড়ুয়ারা। স্কুলের মোট ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ৫৪১ জন। এর মধ্যে সাঁওতালি মাধ্যমে পড়ে ১০৬ জন। স্কুলের মোট পড়ুয়ার প্রায় ৯০ শতাংশই আদিবাসী।

বাণীপদবাবু ও সহশিক্ষক-শিক্ষিকারা মিলে স্কুলটিকে সেরা স্কুল হিসেবে গড়ে তুলেছেন। স্কুলটি প্রাচীর দিয়ে সুরক্ষিত। রয়েছে পর্যাপ্ত পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা। স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞানশাখা চালু করার দাবিও রয়েছে এলাকায়।

বাণীপদবাবু বলেন, ‘‘অবসর নেওয়ার আগে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান শাখা চালু যাতে হতে পারে সেজন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।” অবসর নেওয়ার আগে এই কাজটিই বাকি রয়েছে। এজন্য শিক্ষা দফতরে আবেদন-নিবেদন করে চলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য