রাজ্য

বাঁকুড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আজও মন ছুঁয়ে যায় আমার

মৃত্যুঞ্জয় সরদার

বাঁকুড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আজও মন ছুঁয়ে যায় আমার - West Bengal News 24

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটে যায় এটা প্রাকৃতিক নিয়ম! সময়ের সাথে সাথে মানব জীবনের পরিবর্তন ঘটে এটা আমাদের কারো অজানা নয়। শুধু মানব শরীরের পরিবর্তন নয় মানবের আদব-কায়দা চলাফেরার পরিবর্তন বিবর্তনের অগ্নিগিরি নতুন ধারাবাহিক ভাবে প্রবাহিত হয়। এসব জেনো ঈশ্বরের লীলাখেলা,  সাংবাদিকতা করার জন্য আমার জীবনে বহু ঘাত প্রতিঘাত পোহাতে হয়েছে। রেহাই পায়নি আমার পরিবারও। যতটা খারাপ দিক আমি দেখেছি ,কিঞ্চিৎ জীবনের না চাইতে অনেক কিছু হয়তো পেয়েছে। লেখালেখির জীবনী বাংলা তথা ভারতের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তেমনি সুযোগ তৈরি হয়েছিল বাঁকুড়া তে যাওয়ার পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম একটি জেলা যা আমরা এক কথায় লালমাটির দেশ বলে চিনি। হয়তো সেখানে যাওয়ার সুযোগটুকু পেতাম না বহু কষ্ট করে সেখানে পৌঁছে ছিলাম।

তবে আমার সাথে আমার পরিচিতি, জিনি আমার জীবনের অনেক সাহায্য করেছেন ,তিনি আজ আমার আত্মীয় মানিক সরকার ও সঙ্গে ছিলেন বাঁকুড়া সফরে।আজ থেকে তিন বছর আগেই ২০১৭ সালের ঠিক এমন সমযে, আমার শুভাকাঙ্ক্ষী বাঁকুড়া জেলার প্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা দৌলত বাঁকুড়া যাওয়ার সুযোগটা তৈরি হয়েছিল। সেই সময় সুখেন্দু হীরা বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি আমাকে বাঁকুড়াতে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন, আমি দেখলাম মেলা দেখার মেলা দেখার কলা বিক্রি কলা বিক্রি হয়ে যাবে। তাই কোন কিছু চিন্তা না করে পৌঁছে গেলাম বাঁকুড়াতে।রাতে উঠেছিলাম  বাঁকুড়া স্টেশন কাছে একটি হোটেলে যেটি ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা নিজেই। রাত্রি বাস এর পরে কোন রকমেই, সকালে উঠে স্নান সেরে পৌঁছে গেলাম এসপি বাংলাতে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া করে মুকুটমনিপুরের যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাস ধরিয়ে দিলো পুলিশ সুপারের লোকজনেরা। সেই সময় বারবার মনে হচ্ছিল,এক দিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, অন্য দিকে ইতিহাসের পদধ্বনি। এই দুইয়ের টানে চলতি পর্যটন মরশুমে পর্যটকদের ঢল নেমেছে বাঁকুড়ার জয়পুরে। রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন অসংখ্য পরিযায়ী পর্যটক এখানে ছুটে আসছেন। আর সেই সব পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্য দিতে চেষ্টার কসুর করছেন না স্থানীয় প্রশাসন। আমি সর্বদাই একটু গবেষণামূলক কথাবার্তা তুলে ধরতে ভালোবাসি।এই জেলার নাম ‘বাঁকুড়া’ হল  কিভাবে সেই প্রসঙ্গে কোন ঐতিহাসিক সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়া গেলেও বাঁকুড়া নামটির উৎপত্তি বিষয়ে বেশ কিছু জনশ্রুতি জনমানসে প্রচলিত আছে। ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলার মধ্যে  বাঁকুড়া একটি অন্যতম জেলা।

পশ্চিমবঙ্গের  মেদিনীপুর বিভাগের অন্তর্গত পাঁচটি জেলার অন্যতম একটি জেলা হল এই বাঁকুড়া।এই জেলার উত্তরে ও পূর্বে বর্ধমান, দক্ষিণে পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ-পূর্বে হুগলি এবং পশ্চিমে পুরুলিয়া জেলা অবস্থিত। কিভাবে বাঁকুড়াতে পৌঁছাবেন।সাত্রাগাছি থেকে বাঁকুড়া ট্রেনে করে এসে, বাকুড়ায় নেমে, ওখান থেকে বাস অথবা গাড়ি করে আসা যাবে সহজে। তাছাড়া কলকাতা থেকে সরাসরি বাঁকুড়ার বাস ছাড়ে, অথবা বিষ্ণুপুর বাস ছাড়ে, সেই বাসে করে আসা যাবে। বিষ্ণুপুর থেকে বাস পাল্টে আপনি মুকুটমণিপুরে আসতে পারবেন। তবে মুকুটমণিপুরে আসতে হলে আপনার ট্রেনে আসাই সবচেয়ে ভাল। প্রাইভেট কারে করেও আপনি মুকুটমনিপুর আসতে পারেন। দু তিন দিন থাকার পক্ষে বা দেখার জন্য এই স্থানটি খুবই উপযুক্ত। এবং খাবার ও মোটামুটি কলকাতার মতনই ভালো। হোটেল ভাড়া আপনার সাধ্যের মধ্যে এছাড়া আপনি চাইলে কটেজেও থাকতে পারেন। এখানের কটেজ’ও খুব সন্দর। এত নিরিবিলি এত সৌন্দর্য প্রকৃতির টানে মানুষকে এখানে নিয়ে আসে, তাহলে এই জেলার নাম বাঁকুড়া হল কেন। সুন্দর  উপরে কোন নাম ধার্য হতে পারত।

কেনই বা আমরা বাঁকুড়া নামে পরিচিতি হলাম। কথিত সেই ইতিহাস আজও আমাদের অনেকের কাছে অজানা। ইতিহাস সহ বাঁকুড়ার একাধিক স্থানের কথা আমি এই লেখাতে উল্লেখ করব।প্রাচীন কাল থেকেই দুটি নদী বাঁকের বা দুটি নদীর গতি পথের মাঝখানে গড়ে ওঠা চাষ যোগ্য জমিকে বলা হত- বাগরি, বাখারি বা বাকড়ি বলা হয়। ভাগীরথী পূর্ব ও পদ্মা নদীর পশ্চিমের ভূ- ভাগের গঠন অনেকটা এমনি। বহুকাল আগে থেকেই গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদীর মধ্যভাগের ভূ- খণ্ড কে এই নামে ডাকা হত। বিশেষত আজকের বাঁকুড়া শহরের পূর্ব দিকে যেখানটায় গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদী মিলিত হয়েছে পশ্চিম বাহিনী হয়ে।সাঁওতাল মুন্ডা প্রভৃতি জন জাতির মানুষের উচ্চারণে নাসা- ধবনির প্রাধান্য থাকায় বাগরি, বাখারি বা বাকড়ি যথাক্রমে বাঁগরি, বাঁখারি বা বাঁকড়ি হয়েছে। এখান থেকেই বাঁকুড়া নামের উৎপত্তি হয়ে থাকতে পারে বলে কেউ কেউ মনে করেন।

আবার একথাও মনে করেন অনেকে গন্ধেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদী বাঁকুড়া শহরের কাছে গতিপথ পরিবর্তন করেছে। গন্ধেশ্বরী উত্তর- পশ্চিম দিক থেকে এসে বাঁকুড়া শহরের কাছে সোজা পূর্ব দিকে বাঁক নিয়েছে। আবার দ্বারকেশ্বর নদী বাঁকুড়ার পশ্চিমে পূর্ব মুখী কিন্তু বাঁকুড়া শহরের পূর্বে উত্তর দিকে বাঁক নিয়েছে। দুই নদীর এই গতিমুখ পরিবর্তন বা বাঁক এর জন্য স্থান নাম বাঁকুড়া হয়েছে। নদীর এই বাঁক কে ‘ বাঁওড়’ বলা হয়। বাঁক বা  বাঁওড় থেকে বাঁকুড়া নাম এসে থাকতে পারে।এদিকে একটি মত অনুযায়ী  জেলা শহরের নাম থেকে এই জেলার নাম হয়েছে বাঁকুড়া।কোন এক সময় বাঁকুড়া জয়বেলিয়া পরগণার অন্তর্গত একটি গ্রাম ছিল বলে ধারণা করা হয়। ১৭৭৯ খ্রিষ্টাব্দে রেনালের মানচিত্রে বাঁকুড়াকে একটি গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ১৭৯৪ খ্রিষ্টাব্দের সরকারী চিঠি পত্রে ‘বাঁকুড়া’ নামটির স্পষ্ট উল্লেখের প্রমাণ মেলে। তবে বাঁকুড়া তখন বিষ্ণুপুর নামের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছিল। উনিশ শতকের গোড়া থেকে বাঁকুড়া নামটি জেলা হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করে।

তবে বাঁকুড়া বানানটি তখনও ইংরেজিতে লেখা হত- BANCOORAH।এখন অবশ্য লেখা হয় BANKURA । যাক এসব কথা ফিরে আসি  উপলব্ধির কথাতেই, খুব দামী এন্ড্রয়েড ফোন না থাকলেও আমার কাছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন সেইসময় কোনক্রমে ছিল। পুরাতন বজরা একটি সেট। যা ভালো করে ছবি উঠতো না। অর্ধেক সময় চার্জ থাকত না।সেই সময় আমিন কোনক্রমে গুগল থেকে সার্চ করে দেখেছিলাম পরেশনাথের মন্দির এর কথা।সেই পরেশনাথ শিব মন্দির  আমি উপস্থিত হয়েছিলাম এবং ওখানে করে এসেছিলাম।কংসাবতী নদীর উপরে হাত ধরে হাটতে হাটতে আমি আর মানিক কাকু চলেছিলাম পরেশনাথ মন্দির এর উদ্দেশ্যে।

এক ঘন্টার উপর হয়ে হাঁটতে সময় লেগেছিল।তেমনই কোনো কষ্ট  হচ্ছিল না ,সাগরের ফির ফিরে  হওয়া টার  অনুভুতি পাচ্ছিলাম। পরেশনাথ মন্দির এর আগে কোনটা তে ঘুরতে ছোট্ট একটি দোকানের মুড়ি আর ঘুগনি খেয়েছিলাম পেঁয়াজ কুচি দিয়ে তৃপ্তি ভাবে প্রচন্ড খিদে এর মধ্যে।পরেশনাথ মন্দির এর উপরে ছোট্ট একটি পাহাড় পাহাড়ের নিচে ঘুরে ঘুরে আনন্দ উপভোগ মনোরম পরিবেশের তৃপ্তিতে মনটা ভরে উঠেছিল, আর   পরেশনাথ মন্দির এর সামনে একটি হোটেলে দুপুরের ভাত খেয়েছিলাম।তবেই শিব মন্দিরের বর্ণনা আছে হয়তো দিতে পারছি না, এই লেখার মধ্যে । পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ভবন কেন্দ্রিক ওয়েবসাইটে মুকুটমণিপুর কে নিয়ে অনেকেই অনেক কথা লিখেছে। তার সঙ্গে আমার দেখা মুকুটমনিপুরের তফাতটা টা একটু অন্যরকম হতে পারে।পরেশনাথ শিব মন্দির মহাদেবের একটি উন্মুক্ত মন্দির পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের কাছে একটি পবিত্র স্থান। বাঁধটি নির্মাণের সময়, পৃথিবী খনন করে প্রতিমা-টি পাওয়া গিয়েছিল এবং এটি জৈন সংস্কৃতির প্রমাণ হিসাবে বিবেচিত হয়।

আপনি সেখানে অনেক পাথরের প্রতিমা দেখতে পাবেন এবং লোকেরা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করে যে, যে কয়েকটি মূর্তি আছে তার মধ্যে অনেকগুলিই জৈন দেবতাদের। বহু মানুষ এখানে আসেন ‘মহা শিবরাত্রি’ উত্সব উদযাপন করতে। আপনি এখান থেকে মনোমুগ্ধকর সূর্যাস্তের সেরা দৃশ্য পাবেন। অস্তমিত হওয়া সূর্য ধীরে ধীরে দিগন্তের নীচে ডুবে যেতে শুরু করে। জ্বলন্ত বলটি যখন অর্ধেক জলে নেমে আসে, বাঁধের মধ্যে এর প্রতিবিম্ব এটি সম্পূর্ণ দেখতে তৈরি করে তোলে এবং একটি অত্যাশ্চর্য দৃশ্য তৈরি করে। কমলা রঙের সাথে মেঘগুলি জ্বলজ্বল করে এবং পাখিরা কিচিরমিচির শব্দ করে আকাশ জুড়ে বাসার দিকে উড়ে যায়। একটি মুহূর্ত পান সারা জীবনের জন্য।এই লেখা টি লিখতে বসে,  এই মুহূর্তে মনে পড়ে যাচ্ছে, সেই কথাগুলো এই লেখার মধ্যে তুলে ধরতে চাই।কোল মুন্ডা উপজাতিদের ভাষা অনুযায়ী ‘ওড়া’ বা ‘ড়া’ শব্দের অর্থ ‘বসতি’। সংস্কৃত শব্দ ‘বক্র’ থেকে ‘বাকু’ শব্দের উদ্ভব।যার অর্থ- আঁকা বাঁকা আবার সুন্দর অর্থেও ‘বাকু’ শব্দ ব্যবহার হয়। তাই বাঁকুড়া কথাটির অর্থ মনে করা হয়- ‘আঁকা বাঁকা উঁচু নিচু বাসস্থান’ বা ‘সুন্দর বাসস্থান’। অন্যদিকে জনশ্রুতি বলে বিষ্ণুপুরের রাজা বীর হামবীর এর এক পুত্র বীর বাঁকুড়ার নাম থেকেই এই বাঁকুড়া নামের উৎপত্তি।আবার কবি মুকুন্দ চক্রবর্তী প্রণীত চন্ডীমঙ্গল কাব্যের আত্মকাহিনীতে ‘বাঁকুড়া’ নামের এক ব্যক্তির উল্লেখ পাওয়া যায়।

মনে করা হয় এই বাঁকুড়া হলেন ব্রাহ্মণভূমির রাজা ‘বাঁকুড়া রায়’। কবি লিখছেন – সুধন্য বাঁকুড়া রায়, ভাঙিল সকল দায়…’। এই রাজার নাম থেকেও বাঁকুড়া নাম হয়ে থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করে থাকেন।তবে লোক মুখে একথাও প্রচলিত আছে যে আজকের বাঁকুড়া শহর এলাকা এক সময় বঙ্কু রাই বা বাঁকু রায় নামে এক সর্দারের আওতাধীন ছিল এবং এই বঙ্কু রাই এই এলাকায় প্রথম বাজার প্রতিষ্ঠা করেন।এনার আদি বাসস্থান ছিল বাঁকুড়া জেলার বদরায়।হতে পারে এই ‘বাঁকু রায়’-এর নাম থেকেই আজকের ‘ বাঁকুড়া’ নামকরণ হয়েছে।বাঁকুড়া নামের উৎপত্তি হিসেবে বানকুন্ড কথাটির প্রভাব আছে বলে মনে করেন অনেক গবেষক।ইংরেজ আমলে বাংলা ও ইংরেজিতে ‘বানকুন্ডা’ লেখার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।পরবর্তী কালে লোকমুখে ওই নামটি পরিবর্তিত হয়ে থাকতে পারে।’বামকুন্ড’  শব্দটি থেকেও বাঁকুড়া নামটি এসে থাকতে পারে। বাম অর্থাৎ বাঁ দিক এবং কুন্ড অর্থাৎ জলাধার। বাঁকুড়া শহরের বাঁ দিক বরাবর জলাশয় বা নদীর উপস্থিতি থেকেই ‘বাঁকুড়া’ নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করা হয়।আবার আরেকটি সূত্র অনুসারে বাঁকুড়া জেলায় চাষ যোগ্য বড় জমিকে – বাকড়ি বা বাকুড়ি বলা হয়ে থাকে।

এই বাকুড়ি কথাটি আজও সমান ভাবে বাঁকুড়া জেলার মানুষের মুখে ব্যবহৃত হয়। মনে করা হয় একসময় এখানে বড় বড় চাষের জমি ছিল।এই বাকুড়ি থেকেই শব্দটির নাম বাঁকুড়া হয়েছে।সেই সময় তিনি ইন বাঁকুড়া গিয়ে চা উপলব্ধি করেছিলাম । সেই কথাগুলো আজ আপনাদের সম্মুখে না লিখলে এই লেখাটির অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এরপরেও আরও দুবার বিভিন্ন কাজ নিয়ে বাঁকুড়াতে দিয়েছিলাম। তবে সে সময় জয়পুরের যাওয়ার কথাটা ছিল না পরে হয়েছে।‘বাঁকুড়ার জয়পুর’ বললেই সবার প্রথমে চোখের সামনে ভেসে ওঠে ঘন শাল, মহুল, পিয়াশাল, বহেড়া, হরিতকির এক বিশালাকার জঙ্গল। ৬হাজার ৩৩১ হেক্টর জায়গা নিয়ে এই বনাঞ্চলে ভাগ্য সহায় হলে দেখা মিলতে দলমার দাঁতালদের। তাছাড়া হরিণ, ময়ূর, বন শুয়োরদের অবাধ এই বিচরণ ক্ষেত্রে মন ভালো করা পরিবেশে কিছুটা সময় নিজের মতো করে কাটানোর সুযোগ মিলবে।এই জঙ্গলেই রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। আর এখান থেকেই সহজেই দেখা মিলতে পারে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো ময়ূর আর হরিন। এখান থেকেই খুব কাছেই রয়েছে বাঁকুড়া জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয় সমুদ্র বাঁধ। প্রশাসনের উদ্যোগে এখন এই সমুদ্র বাঁধে শুরু হয়েছে বোটিং এর ব্যবস্থা। পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতি তৈরী করেছে ‘বনবিতান’ লজ।

অন্যদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি ইতিহাস প্রেমী মানুষ ঘুরে দেখছেন বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির ও স্থাপত্য ভাস্কর্য৷ পাশাপাশি মল্লরাজাদের প্রাচীন রাজধানী প্রদ্যুম্নগড় ঘুরে দেখছেন পর্যটকরা। তাছাড়া এই এলাকায় মল্লরাজাদের তৈরী অসংখ্য টেরাকোটা সমৃদ্ধ মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের তৈরী সুবিশাল রানওয়ে। অনেকের জানা অনেকের অজানা সেই পথ। লাল মাটির কাঁকুরে পথ। চারিদিকে গাছগাছালি আর দূরে ছোট পাহাড়। গাছ, পাহাড় আর লাল মাটির এই জায়গাকে এক অদ্ভূত সৌন্দর্য্য বেষ্টন করে আছে। মনে এক অপার শান্তি আর ভালোবাসা। প্রকৃতি যেন তার কাছে নিজের করে টেনে নিচ্ছে। বাঁকুড়া গেলে বিষ্ণুপুর, জয়রামবাটী আর মুকুটমণিপুর অবশ্যই ঘুরে আসবেন। এই স্থান গুলোর অনেক ইতিহাস আছে। বীর মল্লরাজ রঘুনাথের রাজত্বেই গড়ে উঠেছিল পৃথিবী বিখ্যাত লাল পোড়ামাটির সৃষ্টি, টেরাকোটা। টেরাকোটার শ্যাম রায়, জোড়বাংলা এগুলো ইটের তৈরি। পরবর্তীকালে বিষ্ণুপুর দুর্গ তৈরি করেন রাজা বীর সিংহ। মূলত তিনরকম ভাবে পোড়ামাটির ভাস্কর্যে বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলো তৈরি—দেউল, চালা ও রত্ন। এখানকার টেরাকোটার মন্দির এক অদ্ভূত ভাবে তৈরি। মন্দিরের গায়ে রামায়ণ, কৃষ্ণলীলার বিভিন্ন আখ্যান, ফুল, ফল, লতাপাতা, পশুপাখি শিকারের মোটিভ দিয়ে ঘেরা এখানকার টেরাকোটার মন্দির।তবেই এই অঞ্চলের মদনগোপাল, রাধামাধব, কালাচাঁদ, লালজি, রাধাশ্যাম মন্দিরগুলো ল্যাটেরাইট পাথর দিয়ে তৈরি। মল্ল রাজাদের এসব অসামান্য কীর্তিতে শিল্পসংস্কৃতি ও সভ্যতার এক পীঠস্থান হয়ে ওঠে বাঁকুড়ার এই বিষ্ণুপুর। বিষ্ণুপুরের সংগীত ঘরানা আজও জগৎশ্রেষ্ঠ, যা বিষ্ণুপুর ঘরানা বলে পরিচিত। যদুভট্ট থেকে শুরু করে জ্ঞান গোস্বামী, রাধিকাপ্রসাদ সমৃদ্ধ করেছেন বিষ্ণুপুরকে। আর তাই আজও বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর নজর কাড়ে।

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে এসে থাকতে হলে এখানে ছোট থেকে মাঝারি বিভিন্ন ধরনের হোটেল রয়েছে। ভাড়া ৪০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। যে যার সাধ্যমতোন থাকতে পারবেন। এ ছাড়া কম খরচে থাকার জন্য রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যুরিজমের লজ, যা কলকাতা থেকে যাওয়ার আগেই বুকিং করে যাওয়া ভালো। খাওয়া-দাওয়ার খরচ প্রায় সবার সাধ্যর মধ্যে। মাছ-ভাত খেলে ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যেই হয়ে যাবে। মোটামুটি রুচিসম্মত খাবার পাওয়া যায়। বিষ্ণুপুর থেকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য রয়েছে রিকশা, অটো। কলকাতা থেকে জনপ্রতি তিনহাজার সঙ্গে নিয়ে গেলে অনায়াসেই এক বা দুই দিনের জন্য ঘুরে আসতে পারেনবাঁকুড়ার টেরাকোটার স্বর্গ বিষ্ণুপুরে।এদিকেই বিষ্ণুপুর ঘরানা শেষ করেই এগিয়ে চলো ‘মুকুটমণিপুর’ এর দিকে। কংসাবতী আর কুমারী নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত মুকুটমণিপুর, এই সুন্দর পরিবেশ যেখানে মানুষ স্বপ্নে বিভোর হয়ে যায়। বিষ্ণুপুর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুকুটমণিপুর। রাস্তার দু’পাশে রয়েছে আকাশমণি গাছের অপরূপ শোভা। পার্শ্বনাথ পাহাড়ের মাথায় রয়েছে পার্শ্বনাথ স্বামীর মন্দির। তার পাশেই আছে বিশালাকার শিবলিঙ্গ। পাহাড়ের পাশে পাশে গাছ থাকায় এক অপরূপ সৌন্দর্য বিরাজ করেছে। জলাধারে দাড়িয়ে থাকা নৌকোয় আপনি ইচ্ছা করলে নিজেও জলবিহারের মজা নিতে পারেন। এছাড়াও আছে সংরক্ষিত অরণ্য, চিলড্রেন পার্ক, ডিয়ার পার্ক, টিকিট কেটে ঘুরে আসতে পারেন।

সোনাঝুরি বন খুব বিখ্যাত এবং মন ভোলানো জায়গা মুকুটমণিপুরে। শান্ত, নিরালা এমন জায়গা অনেকেই চান। মধুচন্দ্রিমার জন্য উপযুক্ত জায়গা হতে পারে মুকুটমণিপুর। এ ও বলে রাখি জয়রামবাটি রেলওয়ে স্টেশন নেই। জয়রাম বাটি যাওয়ার জন্য বাস উপযুক্ত। হাওড়া থেকে সরাসরি বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া গামী অধিকাংশ বাস, জয়রামবাটি ভায়া হয়ে যায়। ট্রেন আসতে চাইলে তাহলে হাওড়া থেকে গোঘাট ট্রেন ছাড়ে। আপনি গোঘাট স্টেশন এ নেমে, স্টেশন থেকে জয়রামবাটি অনেক অটো যায়। আপনার স্টেশন থেকে পৌঁছাতে 30 মিনিট সময় লাগবে। কলকাতা থেকে জয়রামবাটী দূরত্ব মোটামুটি 110 কিলোমিটার প্রাইভেট গাড়ি করে এলে আপনার তিন সাড়ে তিন ঘন্টা সময় লাগবে। জয়রামবাটিতে দুপুরে ও রাতে ঠাকুরের ভোগ পাওয়া যায়। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। সব দর্শনার্থীকে এই নিরামিষ ভোগ বিতরণ করা হয়। তবে এর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভোগের কুপন কাটতে হয়।এগুলো জয়রামবাটি ঘোরার অভিজ্ঞতার শেষ দিন। তবে বারবার মনে পড়ে সেই স্মৃতি তাকে ধরে রাখতে চাই এই লেখার মধ্যে। ভারত বর্ষ মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক একটি স্থান বাঁকুড়া মুকুটমনিপুর, সবার কাছেই খুব প্রিয়। যেখানে পৌঁছে নিজেকে উৎসর্গ করে দিতে ইচ্ছা ও জেগে ওঠে। সেই স্থানটি হল কংসাবতী বাঁধ, ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ তার বিশাল জলাশয়ের দিকে মনোনিবেশ চায় এবং এটি মোহময়ী প্রকৃতির সাথে যেন ফিসফিস করে কথা বলে। বাঁধটি দৈর্ঘ্যে 11 কিলোমিটার এবং তত্কালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় এর শাসনকালে নির্মিত হয়েছিল। দেখুন সূর্য যখন বাঁধের জলে সোনার রশ্মি ফেলে তাকে রাঙিয়ে তোলে এবং যখন সূর্য অস্ত যাওয়ার কালে জলে নেমে আসে, আপনি নিজের কল্পনার জগতে অনুভব করবেন। সূর্যাস্তের ঐশ্বরিক সৌন্দর্য উপভোগ করুন এবং সোনালী সময়ের একাকীত্বকে স্পর্শ করুন।এদিকে অম্বিকা গ্রামে অবস্থিত অম্বিকানগর মন্দিরটিতে ৭০০ বছর ধরে দেবী দুর্গাকে মা অম্বিকা হিসাবে পূজা করা হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজনের মতে মা অম্বিকা মা জাগ্রত। আসুন অম্বিকানগর মন্দিরে প্রাচীন রীতিনীতিগুলির আর গ্রাম্য সুবাসের সাথে এই বছর আপনার ‘দুর্গা পূজা’ অনন্য করে তুলুন। ভীড় এবং গোলমাল থেকে অনেক দূরে, স্থানীয় মানুষ সমৃদ্ধ সংবেদনশীলতা এবং প্রকৃতির আপ্যায়ন অবশ্যই আপনাকে সুখের মধ্যে নিমজ্জিত করবে। প্রকৃতির বিরল এ কেমন সৃষ্টি তার, জাজ এই ধরণীর বুকে ইতিহাস হয়ে বয়ে চলেছে। তিন বছর পরেও লিখতে গিয়ে বারবার স্মৃতিতে ভেসে উঠছে সেই পাহাড়ের দেশে কথা। পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে থেকে যাব লক্ষি করেছিলাম?মুসাফিরানার ভিউ পয়েন্ট থেকে মনোমুগ্ধকর মুনরাইজের সাক্ষী সাক্ষী যেন আজও বহন করছে দুই চোখে। জমকালো সবুজ এবং করুণ জলের অপার সৌন্দর্য আপনাকে অবশ্যই এখান থেকে শাটারটি ক্লিক করাতে বাধ্য করবে। মাশরুম আকৃতির শেডের নীচে বসে স্বামী/স্ত্রী বা বন্ধুবান্ধবদের সাথে উচ্চমানের সময় ব্যয় করুন যেখানে থেকে আপনি চোখ জুড়ানো সবুজ রঙের অভিবাদন পাবেন সাথে নীল জলে আকাশের ঐশ্বরিক ছবি দেখতে পাবেন। বিস্তীর্ণ জলছবি থেকে পূর্ণ চাঁদ উঠছে এবং জলের উপরে ঝলমল করছে দেখুন। শীতল বাতাস, নক্ষত্রের নীচে জলের উপর রৌপ্য চাঁদের আলোর প্রতিচ্ছবি এবং প্রশান্ত পরিবেশ আমাকে স্বর্গের মতো অনুভব হয়েছিল। ফিরে আসার দিনে সকাল বেলা প্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেছিল যে যাও ঘুরে এসো তারপরে নাই বাড়ি ফেরো, উনার কথা মতোই শুশুনিয়া পাহাড়ে গিয়েছিলাম।সেই সময় শুশুনিয়া পাহাড় সম্পর্কে যা তথ্য আমি পেয়েছিলাম। শুশুনিয়া পাহাড়ের নিচে দোকান থেকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা সংগ্রহ করেছিলাম। সেই কথাগুলো এই লেখার মধ্যে উল্লেখ করে ,আজকের এই লেখাটা এখানেই সমাপ্তি করব, তবে এও বলে রাখছি আমি চেহারা একটু হাট্টাকাট্টা এত ভারী চেহারা নিয়ে এক বোতল জল সংগ্রহ করে মানিক কাকুকে সঙ্গে নিয়ে শুশুনিয়ার উঁচু পাহাড়ে উঠে গিয়েছিলাম।

সবই মনের জোরে, সে এক অন্যরকম অনুভূতি, সে কথাগুলো আজও ভোলার নয়।শুশুনিয়া পাহাড় থেকে সংগ্রহ করেছিলাম একটি পাথরের টুকরোর আজকের দিনে আমার ঘরে সেটি রাখা আছে।বাঁকুড়া জেলার উত্তর-পশ্চিম অংশে শুশুনিয়া পাহাড়। এই পাহাড় তার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য বিখ্যাত। পুরাতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অঞ্চল একটি পরিচিত পুরাতাত্ত্বিক ও জীবাশ্ম ক্ষেত্র। এই অঞ্চলে সিংহ, জিরাফ, হায়না ও অন্যান্য অনেক জীবজন্তুর জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম শিলালিপিটি এই পাহাড়ের মাথায় একটি গুহার মধ্যে রয়েছে। এছাড়া এখানে অনেক প্রস্তরযুগীয় প্রত্নসামগ্রীও পাওয়া গিয়েছে। শুশুনিয়া গ্রামের পাথর খোদাই শিল্পের নমুনা এখনও সেই ট্রাডিশন ধরে রেখেছে।শুশুনিয়া পাহাড়ের উচ্চতা আনুমানিক ১৫০০ ফুট। বর্তমানে শুশুনিয়া পাহাড় একটি পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়।

পাহাড়ের পাদদেশে একটি ঝরনার মুখে আছে একটি প্রাচীন পাথরের নরসিংহ মূর্তি, যার মুখ থেকে অবিরাম জল বেরিয়ে আসছে। এই জলের উৎস কী? শুশুনিয়া বরফের পাহাড় নয় যে, বরফগলা জল আসছে। ভূগর্ভস্থ স্ত‍র থেকে উদ্ভূত এই জল মানবশরীরের জন্য যথেষ্ট উপকারী, একথা বিজ্ঞানীরা অনেকেই স্বীকার করেছেন। এই জলের বিপণন নিয়ে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা একসময়ে কারও কারও মনে হয়েছিল। কিন্তু সে সব এখন গল্পকথা।পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম শিলালিপি এই পাহাড়েই রয়েছে। আবার এই পাহাড়কে নিয়ে কিংবদন্তি– শুশুনিয়া পাহাড়ের মাথায় একদা শিবিরাজপুত্র বেসসন্তরের আশ্রম ছিল। রাজা পাণ্ডুশাক্য এই পাহাড়ের মাথায় কোকনদ প্রাসাদ তৈরি করিয়েছিলেন। পাহাড়ের শীর্ষদেশে অবস্থিত এ গুহা, তার আকার-প্রকার সেকথা মনে করায়। পাহাড়ের মাথায় খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে নির্মিত যে শিলালিপি রয়েছে, তার পাঠ এই রকম–
‘পুষ্করণাধিপতের্ম্মহারাজ-
শ্রীসিঙছ্ বর্ম্মণঃ পুত্রস্য
মহারাজ শ্রীচন্দ্রবর্মণঃ কৃতিঃ
চক্রস্বামীণঃ দোসগ্রণতিসৃষ্টঃ’।

লিপির ভাষা সংস্কৃত, কিন্তু অক্ষর চতুর্থ খ্রিস্টাব্দের ব্রাহ্মী লিপি বলে অনেকে মনে করেন।রাজা চন্দ্রবর্মণের রাজধানী ছিল পুষ্করণা। তিনি বিষ্ণুর উপাসক ছিলেন। লিপিতে খোদিত চক্র জানান দিচ্ছে, এটি বিষ্ণুর প্রতীক। রাজা চন্দ্রবর্মণ বিষ্ণুর উপাসনার জন্য ‘ধোসাগ্রাম’ দান করেন।এছাড়া শুশুনিয়ায় প্রাপ্ত খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীর শিলালিপি বলছে, রাজা চন্দ্রবর্মণের রাজধানী ছিল পুষ্করণা শহর, যেটি বর্তমানে বাঁকুড়ার পোখরনা নামে পরিচিত। পোখরনা বা পাখান্না বাঁকুড়া জেলার সদর মহকুমার বড়জোড়া থানার অন্তর্গত দামোদর নদের দক্ষিণ তীরবর্তী গ্রাম। শুশুনিয়া থেকে দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। ঐতিহাসিকরা অনেকেই মনে করেন, প্রাচীন রাঢ় দেশের রাজা সিংহবর্মনের পুত্র চন্দ্রবর্মণের রাজধানী পুষ্করণা হল আসলে এই পোখরনা গ্রাম। এলাহাবাদ প্রশস্তি থেকেও জানা যায় সম্রাট সমুদ্রগুপ্ত পোখরনার রাজা চন্দ্রবর্মণকে পরাজিত করেই এই অঞ্চলকে গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য