এমন উত্তাল সমুদ্র আগে দেখেনি দীঘাবাসী! প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কবলে দীঘা
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে জলোচ্ছ্বাসে জেরবার দীঘা। এর আগের যাবতীয় দুর্যোগের ছবিকে হারিয়ে দিয়েছে এবারের ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এদিন সকাল সোয়া নটা নাগাদ ওডিশা উপকুলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ল্যান্ডফল করার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। বিশাল বিশাল ঢেউয়ে ফুঁসছে দীঘার সমুদ্র।
সমুদ্রের ধারের গার্ডওয়াল ছাপিয়ে জল উঠে গিয়েছে দীঘার রাস্তায়। রাস্তা দিয়ে বইছে তীব্র জলের স্রোত। জলে ডুবে গিয়েছে রাস্তায় থাকা গাড়ি। রাস্তার উপর দিয়ে বইছে প্রবল গতিতে জলের স্রোত। আর সেই স্রোতে ভেসে যেতে শুরু করেছে একাধিক গাড়ি ও মোটরসাইকেল। একইসঙ্গে রাস্তার ধারে থাকা দোকানগুলির ভিতরে জল থৈ থৈ অবস্থা। জলে ভেসে যাচ্ছে দোকানের সামগ্রী। এই দুর্যোগের মধ্যেই অনেক দোকানদার চেষ্টা করছেন যদি কিছু জিনিস বাঁচানো যায়। স্মরণকালের মধ্যে সমুদ্রের জলের এমন ছবি মনে করতে পারছেন না দীঘাবাসীরা।
দীঘার রাস্তার পাশে থাকা একের পর এক দোকানের চাল উড়ে গিয়েছে। গার্ডওয়ালের পাথর উড়িয়ে এনে ফেলেছে রাস্তার উপরে। লন্ডভন্ড চারিদিক। দীঘার মতো একই ছবি মন্দারমনিতেও। মন্দারমনিতে ঝড়ের দাপটে উড়েছে একের পর এক হোটেলের চাল। দীঘা শঙ্করপুরে আছড়ে পড়েছে ৩০ ফুট উচ্চতার ঢেউ। ডুবেছে সাগরে কপিলমুনির আশ্রম।
কপিলমুনি আশ্রমে বুক সমান জল। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে একের পর বাঁধ ভেঙ্গে বানভাসী হতে শুরু করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোমর সমান জলের তলায় বিভিন্ন গ্রাম। দীঘার পাশাপাশি শঙ্করপুর ও মন্দারমনিতেও ভেঙে গিয়েছে বাঁধ। ভেঙে গিয়েছে রাস্তাও। সমুদ্রের জল ঢুকেছে মৌসুনি দ্বীপের গ্রামেও। উদ্ধারের কাজে নেমে পড়েছে সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানরা।
শুধুমাত্র দীঘাতে ঘুর্ণিঝড় মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর ৭০ জনের দল গিয়ে পৌঁছেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার কুলতলি ও গোসাবার বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় চলে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শঙ্করপুর দীঘা ও মন্দারমনির বড়ো অংশ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। লো লাইন এলাকায় বন্যা হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরে মোট ৫১ টি বাঁধ ভেঙেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার ১৫ টি গ্রাম জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া সহ বিভিন্ন গ্রামে ঝড়ের তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। প্রাথমিক পাওয়া খবর অনুযায়ি, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে রাজ্যে প্রায় ২০ হাজার বাড়ি ভেঙে পড়েছে।