স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকার পরেও মেলেনি কোনও পরিষেবা, চিকিত্সা পরিষেবা না পেয়ে অনশনের হুমকি রোগীর
রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের চিকিত্সার কথা মাথায় রেখেই চালু করেছিল স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প। এই কার্ড থাকলে কোনও রোগীকেই আর ফেরাতে পারবে না হাসপাতালগুলো। বিজ্ঞপ্তি জারি করেই সেই নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। সেই নির্দেশকেই অমান্য করলো রাজ্যের এক হাসপাতাল। যার জেরে অনশনে বসার হুমকি দিলেন এক রোগী।
ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারে। জানা গিয়েছে, ওই রোগীর নাম সুমুরঞ্জন কর। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘ প্রায় দুই বছর যাবত্ টিউমারের যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছেন সুমুরঞ্জন। তবে সংসারে আর্থিক অনটনের কারণে তাঁর চিকিত্সা করানো সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেয়েছেন তাঁরা। তবে তাঁদের অভিযোগ, কার্ড পেলেও হাসপাতালের তরফে কোনও পরিষেবা মেলেনি।
বিভিন্ন হাসপাতাল এবং বেসরকারি নার্সিং হোম গুলিতে চিকিত্সার জন্য আবেদন জানানোর পরও কোনও লাভ হয়নি।
খোদ রোগী সুমুরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, ‘দুয়ারে সরকারের’ শিবিরের আগেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পেয়েছিলেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী। সেই কার্ড নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেও মেলেনি চিকিত্সা। অবশেষে বাধ্য হয়ে সুমুরঞ্জনবাবু জানান, চিকিত্সা না মিললে অনশন করে “আত্মহত্যা” করার হুমকিও দিয়েছেন ওই রোগী। রোগী বলেন, “ব্যথায় নড়তে পারি না। সেই সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা।
শরীরের এই অবস্থার জন্য কাজও জোটেনা। বাড়িতে মেয়ে আর বউ রয়েছে। মেয়েটাকে বিয়ে দিতে পারিনি। বউয়েরও শরীর খারাপ। চিকিত্সা যখন পাবই না, এভাবে ধুঁকে মরার চেয়ে একবারে মরে যাওয়া ভাল।”
তাঁর স্ত্রী বলেছেন, “উনি তো ব্যথায় ছটফট করতে থাকেন। একা একা জঙ্গলেও চলে যান। দুএকবার গলায় দড়ি দেওয়ার চেষ্টাও করেছেন। যা অবস্থা তাতে যেকোনওদিন আমরা পরিবার সুদ্ধ মারা যেতে পারি।” এই ঘটনার খবর পেয়ে ওই রোগীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ওই রোগী কেন চিকিত্সা পাননি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন দ্রুত ওই ব্যক্তির চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হবে।
প্রসঙ্গত, খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের উপভোক্তা রোগীকে কোনও হাসপাতাল ফেরাতে পারবে না। তবুও কোনও হাসপাতাল রোগীকে ফিরিয়ে দিলে সেই হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। কিন্তু তারপরেও কেন ওই রোগীকে ফেরানো হল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। যদিও জেলা প্রশাসনের তরফে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সূত্র: এই মুহুর্তে