মুর্শিদাবাদ

অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে বহু অ্যাম্বুলেন্স রোগীদের ভোগান্তি কাটাতে রিপোর্ট তলব স্বাস্থ্য দফতরের

অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে বহু অ্যাম্বুলেন্স রোগীদের ভোগান্তি কাটাতে রিপোর্ট তলব স্বাস্থ্য দফতরের - West Bengal News 24

অ্যাম্বুলেন্স জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন এমন রোগী পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন বিশেষ, যা এক স্থান থেকে অন্যস্থানে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।এতে গুরুতর আহত ব্যাক্তি অসুস্থ রোগী, জরুরী সেবার প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানান্তর নিমিত্তে পরিষেবা প্রদান করা হয়। সচরাচর অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্যে জরুরীভাবে জনগণ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের উদ্দেশ্যে হাসপাতালে গমন করে থাকেন।

কিন্তু এই অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে অনেক সময় অনেক মানুষ সঠিক সময়ে চিকিৎসা পাননা। কাঁধে করে মৃতদেহ বহন, কখনও মৃত সন্তানের দেহ ব্যাগে করে বাড়ি ফেরা, এমন দৃশ্য উঠে এসেছে সম্প্রতি। আজ ঘটলো আর এক ভয়াবহ ঘটনা মুর্শিদাবাদের সালারে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের ‘বাধায়’ এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারেও কিছু দিন আগে অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে।

একের পর এক ঘটনায় জেলা প্রশাসন অ্যাম্বুল্যান্সের একটি তালিকা তৈরি করে রাখতে চাইছে। যাতে আপত্‍কালীন পরিস্থিতিতে ওই সব অ্যাম্বুল্যান্সগুলিকে কাজে লাগানো যায়। সেই কাজ করতে গিয়ে প্রশাসনের নজরে এসেছে, মেমারি ১ ব্লকের দেবীপুরের মতো বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে সাংসদ বা বিধায়ক তহবিলে কেনা অ্যাম্বুল্যান্স অবহেলায় পড়ে রয়েছে।

জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ”জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে অ্যাম্বুল্যান্সের একটি তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তার মধ্যে কতগুলি সচল, জানাতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট আসার পরে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিধায়ক ও সাংসদ তহবিল থেকে পাওয়া দেড়শোটির মতো অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে জেলায়। এর মধ্যে আনুমানিক ১১০টি অ্যাম্বুল্যান্স রোগী বহনের কাজ করে। বাকিগুলি ‘অচল’। এ ছাড়াও স্বাস্থ্য দফতরের হাতে থাকা বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্সও বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। আবার চালকের অভাবেও অনেক অ্যাম্বুল্যান্সের চাকা গড়াচ্ছে না বলে অভিযোগ। সবমিলিয়ে বেড়ে চলেছে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের দৌরাত্ম্য। অভিযোগ, বর্ধমান, কাটোয়ার মতো হাসপাতালে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, বিধায়ক ও সাংসদ তহবিল থেকে কেনা অ্যাম্বুল্যান্স ছাড়াও সরকারি স্তরে জেলায় মাতৃযান রয়েছে ৬৯টি আর নিশ্চয় যান রয়েছে ৭৮টি। এর বাইরে জেলায় প্রায় ১১৫টি অ্যাম্বুল্যান্সের রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। তবে সেই সব অ্যাম্বুল্যান্সের সবগুলি রাস্তায় চলে কি না সন্দেহ। সিএমওএইচ জয়রাম হেমব্রম বলেন, ”জেলাশাসক ও স্বাস্থ্য দফতরকে রিপোর্ট করা হবে। ডেপুটি সিএমওএইচ বিষয়টি দেখছেন।’

মেমারীর দেবীপুরে অচল অবস্থায় পড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্স সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গোড়া থেকেই পঞ্চায়েত চত্বরে লোহার দরজার ভিতর আটকে রয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সটি। এক দিনের জন্যও রাস্তায় নামেনি। অথচ প্রান্তিক এলাকার মানুষজনকে টোটো বা মোটর ভ্যানে করে অসুস্থকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। সরকারি টাকায় কেনা অ্যাম্বুল্যান্স অযত্নে পড়ে থাকা নিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক আবুল হাসেম মণ্ডল সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, ”অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়ার পরেও ইচ্ছাকৃত ভাবে ফেলে রাখা হয়েছে।

১০ বছর হয়ে গেল, অ্যাম্বুল্যান্সটি এক কিলোমিটারও চলেনি।” পঞ্চায়েতের দাবি, মেমারি ১ ব্লক স্বাস্থ্য দফতরকে অ্যাম্বুল্যান্সটি চালানোর জন্য দেওয়া হয়েছিল। তারা নিয়ে যায়নি। পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জয় ক্ষেত্রপাল বলেন, ”পঞ্চায়েতের বোর্ডে এ নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” আর ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, তাদের তিনটি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। সেগুলি চালাতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে। ওই অ্যাম্বুল্যান্সের চালকের বেতন আর তেলের টাকা কারা দেবে, সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি বলেই অ্যাম্বুল্যান্সের দায়িত্ব নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য