দিনে ৪ হাজার কদম হাঁটা কমাবে অকাল মৃত্যুঝুঁকি
নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীরচর্চার সাহায্যে অকাল মৃত্যু ঝুঁকি কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে শরীরচর্চার অন্য যে কোনো মাধ্যমের চেয়ে হাঁটা সবচেয়ে বেশি কার্যকর। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে কমপক্ষে চার হাজার কদম হাঁটার অভ্যাস মানুষের অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করে।
ওষধ ও রোগ নিরাময় সংক্রান্ত মেটা বিশ্লেষণাত্মক নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
সম্প্রতি ইউরোপিয়ান জার্নাল অব প্রিভেনটিভ কার্ডিওলোজিতে এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নরওয়ে, স্পেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত ছয়টি দেশের ২ লাখ ২৭ হাজার মানুষকে নিয়ে করা ১৭টি গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
গবেষণাটির বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুন :: কী খেলে ওষুধ ছাড়াই দ্রুত কমবে গ্যাসের ব্যথা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়মিত হাঁটা শরীর ও স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। যদিও কতুটুকু হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। এক্ষেত্রে সবশেষ গবেষণায় তারা বলছেন, দিনে কমপক্ষে চার হাজার কদম হাঁটার অভ্যাসই অকাল মৃত্যুঝুঁকি অনেকটা কমিয়ে আনতে সহায়তা করে। বিশেষ করে হৃদযন্ত্রের সমস্যাজনিত কারণে (কার্ডিওভাসকুলার রোগ) মৃত্যুঝুঁকি কমাতে দিনে কমপক্ষে ২ হাজার ৩৩৭ কদম হাঁটা প্রয়োজন। তবে ‘এর চেয়ে বেশি হাঁটা’ স্বাস্থ্যের জন্য আরও ভালো বলে দাবি তাদের।
গবেষণাটির প্রথম লেখক ইউরোপিয়ান সোসাইটি অব কার্ডিওলজির ডেপুটি এডিটর ডা. ম্যাসিজ বানাখ। তিনি বলেন, ‘বেশি হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য বেশি ভালো। বিস্ময়কর শোনালেও প্রতিদিন গড়ে ৫০০-১ হাজার কদম হাঁটা বাড়ানোর মাধ্যমে মৃত্যুঝুঁকি কমানো সম্ভব।’
বাল্টিমোরের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের কার্ডিওলজির সহযোগী এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘গবেষণায় আমরা প্রমাণ করে দেখিয়েছি যে, দিনে হাঁটার পরিমাণ ১ হাজার ধাপ বাড়ানোর ফলে যেকোনো কারণঘটিত মৃত্যুঝুঁকি শতকরা ১৫ শতাংশ কমে আসে। সেই সঙ্গে এ হাঁটার পরিমাণ ৫০০ ধাপ বাড়ানোর মাধ্যমে হৃদরোগঘটিত মৃত্যুঝুঁকি শতকরা ৭ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন :: যে লক্ষণগুলো পুরুষের শরীরে মারণরোগের ইঙ্গিত হতে পারে
তবে এ গবেষণায় যুক্ত না থেকেও প্রিভেনটিভ অ্যান্ড লাইফস্টাইল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ডেভিড কাটজ জানান, ‘শরীরচর্চা দেহে সরাসরি রক্ত সংবহনতন্ত্রকে সুগঠিত করে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে দেহের অন্য অংশে এর প্রভাব ততটা সরাসরি নয়।’
এদিকে গবেষণাটির সতর্কবার্তায় আরও বলা হয়েছে, যারা দিনে ৫ হাজার কদমের কম হাঁটেন তাদের জীবনযাত্রায় শারীরিক শ্রম বা শরীরচর্চার লক্ষণ অনুপস্থিত।