মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ কলকাতায় একটি সংহতি মিছিল ও সভায় বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি এই মিছিলের মাধ্যমে বিজেপির সমালোচনা করেছেন এবং রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মিছিলটি হাজরা পার্ক থেকে পার্কসার্কাস ময়দান পর্যন্ত চলে। মিছিলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। মিছিল শেষে পার্কসার্কাস ময়দানে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি রামের বিরুদ্ধে নই। আমি রাম-সীতা দুজনেরই পক্ষে। কিন্তু বিজেপি তো সীতার কথা বলে না। তোমরা কি মহিলার বিরুদ্ধে?”
তিনি বলেন, “আজকের দিনে প্রায় তিন দশক আগে রামমন্দির ধ্বংস ও সেই সময়ের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে বিজেপির উদ্দেশে তৃণমূল সুপ্রিমোর বক্তব্য, ‘আমি দাঙ্গার সময় হিম্মত করে লড়েছি। ইতিহাস ভুলে যাবেন না। ভোটের আগে এমন রাজনীতি করবেন না, তাদের রক্ত দিয়ে প্রসাদ বানাবেন না। কোথায় ছিল সেদিন, যেদিন বাবরি ধ্বংস হল? হত্যার তাণ্ডবলীলা চলল? সিপিএম ক্ষমতায় ছিল। কয়েক হাজার লোক মারা গিয়েছে। আমার মৃতদেহগুলো সম্মান জানতে ইচ্ছে করছে। সেই শহিদদের আমরা সম্মান করি।'”
নিজের ধর্মাচরণ নিয়েও সংহতি সভা থেকে কথা বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিজেপি আমায় বলে মমতাজ বেগম। আবার বলে আমি কিছু উন্নয়ন করিনি। আগে তো বলত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজো করতে দেয় না। এখন চুপিচুপি বলে, টাকা লাগবে? আমায় আমন্ত্রণ জানাও – এসব। অনেকে বলে, নাস্তিক আমি। আমি ধর্ম মানি। কিন্তু ধর্ম ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমি ইদের নামাজে যাই, গুরুদ্বার যাই, গুরু নানকের জন্মদিনে যাই আর হালুয়াটা চেয়ে খাই।”
এর পর বিরোধীদের একজোট করে তাঁর কটাক্ষ, “একটা হিন্দু মন্দির গেলে হয়ে যাবে? আমি তো সব ধর্মের মন্দির-মসজিদে গেলাম। আমি চাই সবাই একসঙ্গে থাকুক। যত রক্ত দেওয়ার দেব, কিন্তু বিজেপিকে একটা আসনও দেব না।”
এদিনের অনুষ্ঠান থেকে একদিকে যেমন অতি কৌশলে চব্বিশের নির্বাচনে গেরুয়া শিবির ডঙ্কা বাজাল, তেমনই বিজেপি-বিরোধিতার সুর চড়িয়ে এ রাজ্যেও কার্যত নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।