লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির আসন কমে হয়েছে ১২। তৃণমূলের বেড়ে ২৯। যদিও এই ফলাফল বাস্তবের প্রতিফলন নয় বলে প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছে বিজেপি।
কোথাও ইভিএম বদলানো হয়েছে, কোথাও দেদার ছাপ্পা চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি প্রার্থীরা। তাঁরা আইনি পথেও হাঁটার কথা জানিয়েছেন। এবার চাঞ্চল্যকর নথি জনসমক্ষে নিয়ে এলেন শুভেন্দু অধিকারী।
আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির জোরালো সংগঠন রয়েছে। যদিও ভোট মেটার পর এই লোকসভা কেন্দ্রের কিছু জায়গায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই বিজেপিকে হারতে হয়েছিল বলে অভিযোগ সামনে আসে। তৃণমূল কংগ্রেসও এই আসনটি ধর্তব্যে রাখেনি বলে রাজনৈতিক মহলের খবর। অপরূপা পোদ্দারকে সরিয়ে এখানে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল মিতালি বাগকে। তিনি জেতেন ৬৩৯৯ ভোটে। আজ এক্স হ্যান্ডলে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার ট্যাবুলেশন শিটে যে তথ্য দিয়েছিলেন তা পুরোপুরিভাবে উল্টে দেওয়া হয়েছে।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে হপিলার বিধানসভা ক্ষেত্রের ২৩৬ নং বুথ, বলাইবেড় প্রাইমারি স্কুলে হয়েছিল এই ভোটগ্রহণ। শুভেন্দুর পোস্ট করা নথিতে দেখা যাচ্ছে এই বুথে বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ২৫৪টি ভোট, তৃণমূল প্রার্থী পান ২৫২টি ভোট।
এই শিটের তথ্যই কম্পিউটারের মাধ্যমে আপলোড করা হয়, যা যায় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে। দেখা যাচ্ছে, যেখানে ওই ২৩৬ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থী ২ ভোটে এগিয়ে ছিলেন সেখানে তাঁকেই বিপুলভাবে পরাজিত বলে দেখানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখানো হয়েছে, ২৩৬ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থী অরূপকান্তি দিগর পেয়েছেন ২৫৪টি ভোট, তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছেন ৫৫২টি ভোট। শুভেন্দু এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, এমন উদাহরণ আরও রয়েছে। যদি স্বচ্ছভাবে সব কিছু হতো তাহলে বিজেপি প্রার্থীই জিততেন এই কেন্দ্র থেকে।
এরপরই তিনি তৃণমূলের সমালোচনা করে বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল গণনাকেন্দ্রে এআরও টেবিল অবধি দেখতে পারে কোনও কারচুপি হচ্ছে কিনা। কিন্তু গণনাকেন্দ্র থেকে বেরনোর পর তাঁর তো আর কোনও নিয়ন্ত্রণই থাকে না। এই ঘটনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, যাঁদের উপর নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত তথ্য আপলোডের দায়িত্ব ছিল তাঁরাও বিক্রি হয়ে গিয়েছেন পুরোপুরি। পশ্চিমবঙ্গই একমাত্র জায়গা যেখানে ভোটের ফল গণনার শেষের পরেও কারচুপি করে বদলে দেওয়া সম্ভব। শুভেন্দুর এই পোস্টের প্রেক্ষিতে অনেকেই পরামর্শ দিয়েছেন, বিষয়টি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য।