ঋণ মিললেও কঠিন শর্ত! আইএমএফ-এর ১১ দফা নির্দেশে কোপ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেটে
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার বা আইএমএফ থেকে নতুন করে ঋণ পেলেও, পাকিস্তানকে কড়া শর্তে বাঁধল সংস্থাটি। আগের মতই তহবিল অপব্যবহার হতে পারে এমন আশঙ্কায়, প্রথম কিস্তি দেওয়ার আগেই তারা চাপিয়েছে ১১টি কঠোর শর্ত। এমনকি প্রতিরক্ষা খাতে কত বাজেট বরাদ্দ করা যাবে, সেটাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে আইএমএফ। ফলে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান আসিফ মুনিরদের পক্ষে ইচ্ছেমতো বাজেট বাড়ানো আর সম্ভব নয়।
ভারতের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও পাকিস্তানকে প্রায় ৮,৫০০ কোটি টাকার ঋণ দিয়েছে আইএমএফ। ভারত এই ঋণের বিরোধিতা করে জানায়, পাকিস্তান অতীতেও বহুবার আইএমএফের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছে, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত আর্থিক সংস্কার ঘটেনি। উপরন্তু, এই অর্থ সন্ত্রাসে মদতের উদ্দেশ্যেই ব্যবহার হতে পারে, এমন আশঙ্কাও জানানো হয়। তবুও আমেরিকাসহ কিছু দেশের সমর্থনে ইসলামাবাদ নতুন করে ঋণ পেয়ে যায়। যদিও, পরিস্থিতির বাস্তবতা বিবেচনা করে এবার আইএমএফ ১১টি নির্দিষ্ট শর্ত চাপিয়েছে।
এই শর্তগুলির মধ্যে রয়েছে – ‘আগামী অর্থবর্ষের জন্য সংসদে ১৭.৬ ট্রিলিয়ন পাকিস্তানি টাকার বাজেট অনুমোদন’, ‘বিদ্যুৎ বিল ও ঋণ পরিষেবায় সারচার্জ বাড়ানো’, এবং ‘তিন বছরের বেশি পুরনো গাড়ি আমদানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া’। পাশাপাশি, ‘২০২৭ সালের মধ্যে সব অর্থনৈতিক নীতির বিস্তারিত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে’ এবং ‘তহবিল যেন নির্ধারিত খাতে ব্যয় হয়, সেই বিষয়ে নিয়মিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে’।
এছাড়া আইএমএফের রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘আগামী অর্থবর্ষের জন্য পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২.৪ ট্রিলিয়ন পাকিস্তানি টাকা’, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। অথচ, ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানোর পরে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ প্রতিরক্ষা বাজেট ১৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আইএমএফের শর্ত মেনে এখন সেই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়ন করা যাবে না।
এই ১১টি নতুন শর্ত ছাড়াও, পূর্বের ৫০টি শর্তও মানতে বাধ্য পাকিস্তান।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের অর্থনীতি দীর্ঘদিন ধরেই সংকটে। বিগত কয়েক বছর ধরে বারবার আইএমএফের সাহায্য নিয়েই চলছে দেশটি। এবারও সেই ধারাবাহিকতায়, ‘ভিক্ষার ঝুলি’ হাতে আবার তারা দ্বারস্থ হয় আন্তর্জাতিক সংস্থাটির কাছে। যদিও ঋণ মঞ্জুর হয়েছে, কিন্তু এবার যেন ‘ঋণের বিনিময়ে গলায় দড়ি পরিয়ে খুঁটিতে বেঁধে রাখল’ আইএমএফ।