চার ‘বন্ধু’র দরজায় গিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ‘নালিশ’ শাহবাজের, কী আদৌ লাভ হল পাকিস্তানের?
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
অপারেশন সিঁদুর-এর ঘটনার পরই বিদেশ সফরে বের হন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, উদ্দেশ্য—‘বন্ধু’ রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন আদায়। তুরস্ক, ইরান, আজারবাইজান ঘুরে তিনি পৌঁছান তাজিকিস্তানে। সেখানেই ভারতকে লক্ষ্য করে অভিযোগ তোলেন যে, “ভারত দায়িত্বহীনভাবে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করছে”। যদিও এই মন্তব্যের পর তাজিকিস্তান সরকারের তরফে কোনো সরকারি প্রতিক্রিয়া আসেনি।
মুসলিম দেশগুলোকে ভারতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে চেয়েই এই কূটনৈতিক সফরে বেরিয়েছেন শাহবাজ। তাঁর সফরে সঙ্গী হয়েছেন ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। শুক্রবার সকালে তাজিকিস্তানে পৌঁছেই প্রেসিডেন্ট এমোমালি রাহমোনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই তুলে ধরেন অপারেশন সিঁদুর সংক্রান্ত বিষয়টি এবং বলেন, ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালাচ্ছে ভারত।’ দুই দেশের ‘ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক’ জোরদার করার বার্তাও দেন তিনি।
শুধু তাই নয়, পাক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডন’-এর বরাতে জানা গিয়েছে, শাহবাজ রীতিমতো ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাজিক প্রেসিডেন্টের কাছে। তিনি বলেন, “৭ মে-র পর ভারত যে আচরণ করেছে, তা দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অনৈতিক। এতে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে, এমনকি রাষ্ট্রপুঞ্জের নিয়মও লঙ্ঘিত হয়েছে।” সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব মানা দরকার। যদিও ভারত বারবার জানিয়ে দিয়েছে, ‘কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এখানে তৃতীয় পক্ষের কোনো জায়গা নেই।’
তবে শাহবাজের এই সফরের পর প্রশ্ন উঠছে—চার ‘বন্ধু’ রাষ্ট্র থেকে তিনি আদৌ কেমন সমর্থন পেলেন? ইরানে বৈঠকের সময় ভারতের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখলেও সে দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা সইদ আলি খামেনেই এই বিষয়ে কোনো সরাসরি মন্তব্য করেননি। শুধু এটুকু বলেছেন, “আমি চাই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিরোধ দ্রুত মিটে যাক।” গাজা ইস্যুতে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা করলেও, নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ সংঘর্ষ নিয়ে ইরান কূটনৈতিকভাবে সংযতই থেকেছে।
তুরস্ক ও আজারবাইজানের দিক থেকেও ভারতবিরোধী কোনো দৃশ্যমান বক্তব্য আসেনি। এমনকি তাজিকিস্তানও থেকেছে নীরব। ফলে, প্রশ্ন জাগছে—’বন্ধু’দের দরজায় কড়া নাড়লেও, শাহবাজ কি শেষমেশ ফিরলেন খালি হাতেই?
