ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষে দ্বিধাবিভক্ত বিশ্ব, কার পাশে কে? ভারতের অবস্থান কী
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
ইজরায়েল-ইরান সংঘাত ঘিরে বিশ্বের মধ্যে তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্বপূর্ণ মেরুকরণ। ইরানের ভূখণ্ডে সামরিক হামলার প্রসঙ্গে ইজরায়েল দাবি করেছে, ইরান নাকি পরমাণু অস্ত্র তৈরির একেবারে দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। সেই কারণেই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে। ইজরায়েলের এই পদক্ষেপকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি এবং ইতালির মতো দেশগুলি। অন্যদিকে এই হামলার তীব্র বিরোধিতা করেছে চিন, ইয়েমেন ও ইরাক।
এই সংঘর্ষের আবহে, ভারত নিজেকে নিরপেক্ষ রেখেছে। ইরানে ইজরায়েলের হানার ঘটনায় একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে ৯-সদস্যের সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও), যদিও ভারত এই বিবৃতি থেকে নিজেকে বিরত রেখেছে। তবে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই সঙ্কট মেটাতে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার প্রয়োজন। কূটনৈতিক পথে উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিয়েছে ভারত। বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সংঘর্ষ পরিস্থিতি নিয়ে ইরানের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এস জয়শংকর। তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর কথা বলেছেন। এসসিও-র এই বিবৃতিকে সমর্থন করেছে চিন, রাশিয়া, পাকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান।
ইজরায়েলকে সমর্থন জানিয়ে ইতালির বিদেশমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন, ‘এই যুদ্ধ পশ্চিম এশিয়ার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।’ ফ্রান্সের বিদেশমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ফ্রান্সকে উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা ইজরায়েলের পাশে আছি।’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার বলেন, ‘ইজরায়েলের আক্রমণ উদ্বেগজনক হলেও, তাদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।’ জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক মের্জ জানান, ‘এই সংঘর্ষ গোটা অঞ্চলের জন্য চিন্তার বিষয় হলেও ইজরায়েলের নাগরিকদের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার অধিকার রয়েছে।’
অন্যদিকে, ইরানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির বিদেশমন্ত্রী ইসাক দার বলেন, ‘ইরানের উপর ইজরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা করছি আমি। পাকিস্তান ইরানের জনগণের পাশে রয়েছে।’ তুরস্কের মন্তব্য, ‘এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইজরায়েল কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান করতে আগ্রহী নয়।’ কাতার আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলিকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে যাতে ইজরায়েলের এই ধরনের আক্রমণ বন্ধ হয়। চিনের পক্ষ থেকেও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে—বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়াং বলেন, ‘ইরানের উপর এমন হামলা গভীর উদ্বেগের। এই সংঘর্ষের ভয়াবহ পরিণতির আশঙ্কা করছে বেজিং।’