আন্তর্জাতিক

সাইপ্রাস ঘুঁটি দিয়ে তুরস্ককে চাপে ফেলতে চাইছে ভারত? মোদির সফরে নতুন বার্তা

ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪

সাইপ্রাস ঘুঁটি দিয়ে তুরস্ককে চাপে ফেলতে চাইছে ভারত? মোদির সফরে নতুন বার্তা - West Bengal News 24

ভারত ও তুরস্কের কূটনৈতিক টানাপোড়েনের আবহে সোমবার সাইপ্রাসের উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং পাকিস্তান-তুরস্কের ঘনিষ্ঠতার প্রেক্ষাপটে দুই দশক পরে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ভূমধ্যসাগরের এই ছোট দ্বীপরাষ্ট্রে সফর করলেন। তাই কূটনৈতিক মহলের অনেকেই এই সফরকে শুধুমাত্র ‘সৌজন্য’ সফর হিসেবে দেখছেন না। বরং তাঁদের মতে, ভারত-পাক দ্বন্দ্বের মাঝে তুরস্কের সক্রিয় ভূমিকার প্রেক্ষিতে মোদির এই পদক্ষেপ এক কৌশলগত চাল। অনুমান, সাইপ্রাসের উপর প্রভাব রেখে তুরস্কের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে ভারত, কারণ এই দ্বীপেই লুকিয়ে থাকতে পারে তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থ।

মোদির এই সফরের তাৎপর্য বোঝার জন্য আগে সাইপ্রাস-তুরস্ক দ্বন্দ্বের পটভূমি জানা জরুরি। ১৯৬০ সালে ব্রিটিশদের শাসন শেষ করে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই দ্বীপটিতে দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়—গ্রিক সাইপ্রিয়ট ও তুর্কি সাইপ্রিয়ট। প্রথমে ক্ষমতা ভাগাভাগির মাধ্যমে দেশ চালানোর চেষ্টা হলেও তা বেশিদিন টেকেনি। মাত্র তিন বছরের মাথায় সেই মতবিরোধ রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, রাষ্ট্রসংঘকে শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠাতে হয়। ১৯৭৪ সালে গ্রিকপন্থীরা সাইপ্রাসকে গ্রিসে যুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে তুরস্ক সামরিক হস্তক্ষেপ করে। পাঁচ দিনের যুদ্ধে উত্তর-পূর্ব সাইপ্রাসের এক বড় অংশ তুরস্ক দখলে রাখে এবং আজও সেই অঞ্চলকে তারা নিজেদের এলাকা হিসেবে দাবি করে। যদিও আন্তর্জাতিক মহলের বেশিরভাগ দেশ সেই দাবিকে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে decades ধরে চলে আসছে এক চাপা অস্থিরতা।

এই পরিস্থিতিতে পহেলগাঁও হামলার পর ভারত-পাক সম্পর্ক ফের উত্তপ্ত। সেই সঙ্গে তুরস্কের পাকিস্তানপ্রীতির কারণে ভারতের অবস্থান আরও কঠোর হচ্ছে। এই অবস্থায় মোদির সাইপ্রাস সফর একটি স্পষ্ট বার্তা — “এরদোগান যদি ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় সেক্ষেত্রে ভারতের অস্ত্র হয়ে উঠবে সাইপ্রাস।” এতে তুরস্কের কূটনৈতিক অবস্থান আরও কঠিন হতে পারে।

তবে শুধু প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা নয়, এই সফরের মধ্যে দিয়ে ভারতের সামনে খুলে যেতে পারে নতুন বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দরজাও। সাইপ্রাস, যার অবস্থান ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের সংযোগস্থলে, সেই দেশকে সঙ্গী করে ভারত একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক করিডোর গড়ে তুলতে চাইছে। এই উদ্যোগকে অনেকেই চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পের বিকল্প পথ হিসেবে দেখছেন। অর্থাৎ, কূটনীতি এবং বাণিজ্য – দুই ফ্রন্টেই লাভের লক্ষ্যে ভারত।

সঙ্গে এটাও উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাউন্সিলের নেতৃত্ব দিতে চলেছে সাইপ্রাস। তখন ইউরোপের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে ‘সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডুলিডেস নয়াদিল্লিকে সহায়তা করতে পারেন।’

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য