লকডাউন অমান্য করে শুটিং, গ্রেপ্তার পরিচালক-সহ ২৫ জন !
ওয়েবডেস্ক: যত দিন যাচ্ছে নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করে চলেছে নোভেল করোনা ভাইরাস। এই মারণ জীবাণু প্রতিনিয়ত নিজের দাপট দেখিয়ে চলেছে। ভারতের একাধিক রাজ্যের পরিস্থিতিও কিন্তু একেবারেই সন্তোষজনক নয়! প্রতিটা রাজ্যে থেকে ক্রমশই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ার খবর আসছে।
স্বাভাবিকবশতই এই অবস্থায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। এর মাঝেই একটি শর্ট ফিল্মের শুটিংকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড বাঁধল নুসরত জাহানের সংসদীয় এলাকা বসিরহাটে।
সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটে বসিরহাটের গুলাইচণ্ডি গ্রামে। উল্লেখ্য, এই মহকুমা এলাকার সংক্রমিতদের সকলেরই কলকাতা-যোগ রয়েছে। এদিকে এলাকায় সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আতঙ্ক বেড়েছে বহুগুণ।
অঞ্চলের সকলেই বেশ ভয়ে ভয়ে রয়েছেন। তার উপর লকডাউন অমান্য করে কলকাতার এক শুটিং টিম গ্রামে আসায় বেজায় চটেছেন এলাকাবাসীরা। ফিল্মের শুটিং শুরু হতেই কলাকুশলীদের একপ্রকার তাড়া করা শুরু করেন গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। কোনও রকমে আশপাশের বাড়িতে লুকিয়ে পড়েন তাঁরা। এরপর, পুলিশে খবর দিলে তাঁরাই এসে উদ্ধার করেন সিনেমার কলাকুশলীদের।
ঠিক কী ঘটেছিল? সূত্রের খবর, শনিবার টালিগঞ্জ এলাকা থেকে ২৫ জনের একটি দল বসিরহাটের গুলাইচন্ডি গ্রামে আসে। ওই গ্রামে সপ্তাহখানেক ধরে শুটিং হওয়ার কথা ছিল ‘রক্ত খাদক’ নামক শর্ট ফিল্মের। রবিবার রাতে শুটিং শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ঝড়বৃষ্টির জন্য তা ভেস্তে যায়। সোমবার সকালে গ্রামের আমবাগানে নামের একটি জায়গায় শুটিং শুরু হয়।
তখনই লোকজন আসতে থাকেন। পরিচালক ‘অ্যাকশন’ বলার সঙ্গে সঙ্গেই বাগানে হাঁটতে শুরু করেন এক অভিনেত্রী। ঠিক সেই পরিস্থতিতে কিছু বুঝে ওঠার আগেই জনতা তাড়া করে। যে যেদিকে পারেন ছুট লাগান। কয়েকটি বাড়ির দরজা খোলা পেয়ে কেউ শৌচাগারে, কেউ চিলেকোঠায় লুকিয়ে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
লকডাউনে যেখানে বিগত দেড় মাস ধরে ইন্ডাস্ট্রির সব কাজ-সহ শুটিং বন্ধ, সেখানে কেন শর্ট ফিল্মের কাজ চালাচ্ছিল ওই শুটিং পার্টি? শুটিংয়ের জন্য তাঁরা কি প্রশাসনের কাছে থেকে অনুমতি নিয়েছে? প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। আইন অমান্য করে শুটিংয়ের কাজ অব্যাহত রাখার ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে শর্ট ফিল্মের পরিচালক-সহ ২৫ জনকে।
পাশাপাশি বাড়ি ভাড়া দেওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছেন গ্রামের দুই বাসিন্দাও। এপ্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, শুটিংয়ের জন্য অনুমতি নেয়নি ওই দলটি। কী করে একাধিক গাড়িতে করে এত লোক গ্রামে ঢুকে পড়ল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। অন্য ধারার সঙ্গে ধৃতদের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই জানান।
সুত্র: সংবাদ প্রতিদিন