আমফানের ঝড়ে বাসাহারা ‘আমফান’কে বন দপ্তরের হাতে তুলে দিল ঝাড়গ্রামের স্কুলছাত্রী লাবণ্য রায়
স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: আমফানের ঝড়ে বাসা থেকে পড়ে গিয়েছিল পেঁচার ছানা। পরম মমতায় সেই ছানাকে সেবাযত্ন করে সুস্থ করে তুলল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লাবণ্য রায়। রবিবার বন দপ্তরের হাতে পেঁচার ছানাটিকে তুলে দিল লাবণ্য। ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবার হরিতকীতলায় থাকে লাবণ্য। ঝাড়গ্রাম শহরের শ্রীরামকৃষ্ণ সারদাপীঠ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সে। লাবণ্যর বাবা সৌম্য রায় সমাজ-কর্মী।
মা চম্পা মণ্ডল রায় ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ বিদ্যালয়ের বালিকা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। লাবণ্যের বোন শহরের একটি স্কুলের শিশুশ্রেণির ছাত্রী। লাবণ্যদের বাড়ির উঠোনের নারকেল গাছে পেঁচার বাসা ছিল। আমফানের প্রবল ঝড়ে গত বুধবার রাতে সম্ভবত বাসা থেকে পড়ে গিয়েছিল ছানাটি। বৃহস্পতিবার ছানাটিকে দেখতে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে লাবণ্য। সে জানায় জলে ভিজে কাপঁছিল পেঁচার ছানাটি। শাবকটির গা মুছিয়ে, তাকে কাঁচা মুরগির মাংসের টুকরো খাইয়ে সুস্থ করে তোলে লাবণ্য। লাবণ্যের বাবা সৌম্যবাবু বলেন, ‘‘বন্যপ্রাণকে এভাবে বাড়িতে রাখা উচিত নয়, মেয়েকে বোঝাই। রবিবার বন দফতরের ঝাড়গ্রাম রেঞ্জ অফিসে খবর দিই। বিকেলে বনকর্মীরা এসে পেঁচার ছানাটিকে নিয়ে যান।’’
বিদায় বেলায় কান্নায় ভেঙে পড়ে লাবণ্য ও অদৃজা। লাবণ্য জানায়, এতটুকু ছানাটির বাবা-মা কোথায় কে জানে। ওর জন্য খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমফানের ঝড়ে আমাদের কাছে এসেছিল, তাই ছানাটির নাম দিয়েছি ‘আমফান’। বনকর্মীদের অনুরোধ করেছি, ওকে চিড়িয়াখানায় রাখা হলে যেন এই নাম দেওয়া হয়।’’ ঝাড়গ্রামের বিভাগীয় বন আধিকারিক বাসবরাজ হলেইচ্চি বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পেঁচার ছানাটিকে উদ্ধার করে এনে ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে।’’