এমন আগে কখনই দেখিনি : ইংল্যান্ডকেও ভয় দেখাচ্ছেন রিজওয়ান
সাউদাম্পটন টেস্টে বৃষ্টির বাগড়া, সেইসঙ্গে পাকিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয়। ব্যর্থতা আসলে অজুহাত দিয়ে কখনই ঢাকা যায় না। তবে পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ রিজওয়ান, যিনি বলতে গেলে একাই লড়ে যাচ্ছেন দলকে বাঁচাতে, তিনিই উইকেট নিয়ে ভয়ের কথা শোনালেন।
পাকিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয়ে যে দুই একজন ব্যাটসম্যান লড়েছেন, রিজওয়ানই তাদের মধ্যে সবার ওপরে। দ্বিতীয় দিন শেষে ৯ উইকেটে পাকিস্তান তুলেছে ২২৩, এর মধ্যে ৬০ রান রিজওয়ানেরই।
এই হাফসেঞ্চুরিটাও খুব সহজে আসেনি। ১৫৮ রানের মাথায় পাকিস্তান যখন বাবর আজমকে হারায়, আর কোনো বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান ছিল না রিজওয়ানের সঙ্গে। এর মধ্যে ইয়াসির শাহ আর শাহীন আফ্রিদি দাঁড়াতে পারেননি, ১৭৬ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে দুইশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল পাকিস্তান।
[ আরও পড়ুন : রিয়ার তোলা অভিযোগ খণ্ডন করলেন অঙ্কিতা ]
কিন্তু রিজওয়ান হাল ছাড়েননি। বেশিরভাগ সময় স্ট্রাইক নিয়ে দলকে সামনে টেনেছেন, দুইশ পার করিয়েছেন। নবম উইকেটে মোহাম্মদ আব্বাসের সঙ্গে ৩৯ রান তুলেছেন, যার মধ্যে আব্বাসের অবদান মাত্র ২। আব্বাস আউট হওয়ার পর শেষ ব্যাটসম্যান নাসিম শাহকে নিয়েও লড়ে যাচ্ছেন রিজওয়ান। দ্বিতীয় দিন শেষে অপরাজিত আছেন ৬০ রানে।
ব্যাটসম্যানদের এমন ব্যর্থতার মাঝেও উজ্জ্বল রিজওয়ান। সতীর্থদের দুষবেন না? সঙ্গী পেলে স্কোরটা আরও বড় করতে পারতেন, এই আক্ষেপ করবেন না? পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যানের তেমন আক্ষেপ নেই।
বরং তিনি মনে করছেন, কন্ডিশনটা মোটেই ব্যাটিং উপযোগী নয়। ইংল্যান্ডও এখানে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়বে এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন রিজওয়ান, ‘উইকেট খুবই কঠিন। উত্তর পাকিস্তানের উইকেটের সঙ্গে মেলানো যেতে পারে। বিশেষ করে অ্যাবোটাবাদ, পেশোয়ারের কথা বলা যায়। তবে আমি ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৭৫ ওভারের পর বলে সিম দেখলাম। তারা নতুন বল নেয়ার আগ পর্যন্ত ছিল। এমনটা আমি কখনও দেখিনি। ইংল্যান্ডের জন্যও কঠিন হবে। ব্যাটিং করতে পারবে না এত সহজে।’
[ আরও পড়ুন : সেতারে ‘অ্যায়ে ওয়াতন’ গানের সুরে সুর মেলালেন অভিনেতা ভিকি কৌশাল ]
ম্যাচের দ্বিতীয় দিন বৃষ্টি বাধার মধ্যেই প্রথম সেশনে বাবর আর রিজওয়ান মিলে ১৫ ওভার কাটিয়ে দিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় সেশনে বাবর ৪৭ করে ফেরার পর ফের বিপদে পড়ে পাকিস্তান। এরপর নিজে থেকেই সবটুকু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন রিজওয়ান।
তিনি বলেন, ‘যখন বাবর আমার সঙ্গে ছিল, আমি স্বস্তিতে ছিলাম। কিন্তু যখন সে আউট হয়ে যায়, টেল চলে আসে, জানতাম রানের জন্য চেষ্টা করতে হবে। এই ফরমেটে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। একটা সময় আপনাকে শান্ত থাকতে হবে এবং উইকেটে টিকে থাকতে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বাবর থাকা অবস্থায় উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসলে বোকামি হতো। তবে যখন তার আউটের পর পরিস্থিতি বদলে যায়, টেল চলে আসে, আমি আক্রমণ করে খেলতে থাকি। এটা বেশ ভালো কাজে দিয়েছে।’
রিজওয়ান মনে করেন, এই উইকেটে আর ৩০-৪০ রান করতে পারলেই ভালো সুযোগ থাকবে পাকিস্তানের। তার ভাষায়, ‘আমরা লড়াইয়ে ফিরেছি এবং আমাদের অবস্থানও এখন মোটামুটি খারাপ নয়। যদি আর ৩০-৪০ রান যোগ করতে পারি, আমাদের অনেক সুযোগ থাকবে।
[ আরও পড়ুন : লেবাননের নতুন সরকার নিয়ে হিজবুল্লাহর রূপরেখা ]
এমনকি যদি সেটা না-ও পারি, কিন্তু আমাদের স্কোরের কাছাকাছি তাদের আউট করতে পারি, তখনও সুযোগ থাকবে। আমাদের বোলারদের দিকে দেখুন, তারা ম্যানচেস্টারে কিন্তু তাদের কাজ করেছে। শেষ দিনে ইংল্যান্ড ভাগ্যবান ছিল, কিন্তু আমাদের বোলাররা খুবই ভালো করেছে।’