ঝাড়গ্রাম

ছত্রধর মাহাতো কী তৃণমূলের মুখ? সাংবাদিক বৈঠক ঘিরে জল্পনা

স্বপ্নীল মজুমদার

ছত্রধর মাহাতো কী তৃণমূলের মুখ? সাংবাদিক বৈঠক ঘিরে জল্পনা - West Bengal News 24

ঝাড়গ্রাম: জঙ্গলমহলে তৃণমূলের সারথি কী তিনিই? রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোকে নিয়ে এমন আলোচনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। সেই জল্পনা আরও জোরদার হল এবার। এই প্রথমবার ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন ছত্রধর।

বিজেপিকে আদর্শহীন, দাঙ্গাবাজ দল বলে কটাক্ষ করলেন। আবার জেলার নেতা-নেত্রীদের সাংগঠনিক বিচারে একশোয় একশো দিলেন। কুড়মিদের দাবি পূরণে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নেবেন বলেও জানালেন।

রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পরে একদিকে রাজনৈতিক সভা-মিছিলে হাজির থাকছেন ছত্রধর। আবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দায়ের করা ইউএপিএ মামলায় আদালত এড়াচ্ছেন। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁকে সামনে রেখেই তৃণমূল এগোতে চায় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

আরও পড়ুন: মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে ৩৫ শতাংশ সিলেবাস কমাল রাজ্য, ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর

বুধবার ঝাড়গ্রাম শহরের রূপছায়া সিনেমা হল লাগোয়া দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন ছত্রধর। ওই সাংবাদিক বৈঠকে ছত্রধরের পাশে ছিলেন জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা, জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শিবেন্দ্রবিজয় মল্লদেব, জেলা তৃণমূলের সদস্য গৌতম মাহাতো, নবু গোয়ালা, শহর তৃণমূলের সহ-সভাপতি গোবিন্দ সোমানি, তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি জয়দীপ হোতা, শহর যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি উজ্জ্বলকান্তি পাত্র, জেলা যুব তৃণমূলের সদস্য কাজরী মিত্র।

কয়েকদিন আগে এক অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে ছত্রধরকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ছত্রধর বলেন, ‘‘আদর্শহীন বিজেপি-র কোনও কর্মসূচি নেই। যারা দাঙ্গা ছাড়া কিছু বোঝে না। আমি জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলে আছি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মপদ্ধতিতে আমি মুগ্ধ এবং তাঁর দলে থেকে জঙ্গলমহলের জন্য আমি যে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি এ জন্য নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি।’’ ছত্রধরের দাবি, জঙ্গলমহলের মানুষ তাঁকে চিরকালই ভালবাসেন, দশবছর জেলে থাকার পরেও জঙ্গলমহলের মানুষ তাঁকে ভুলে যাননি।

ছত্রধরের অভিযোগ, গত লোকসভা ভোটে বিজেপি মিথ্যা প্রচার করে জঙ্গলমহলের আদিবাসী মানুষকে প্রলোভিত করেছিল। এখন লোকসভা ভোটের সময়কার পরিস্থিতি আর নেই। বিজেপি-র পায়ের তলায় মাটি সরে গিয়েছে।

জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘বঙ্গবিজেপির মুখ নেই। তাই বিজেপি বহিরাগত নেতাদের বাংলায় নিয়ে আসছে। বাংলার নেতাদের উপরে তাঁরা ভরসা করতে পারছেন না। তাই আমাদের নেতাদের ভাঙানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। কিন্তুই তৃণমূল থেকে কেউ বিজেপিতে নাম লেখাবেন না।’’

আরও পড়ুন: মায়েদের উদ্দেশ্যে আবেগঘন খোলা চিঠি সানিয়া মির্জার

এদিন ছত্রধর জানিয়ে দেন, আসন্ন বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বুথ, অঞ্চল, ব্লক, জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব সবাই একযোগে ভোটে লড়াই করবে। দলের নির্দিষ্ট ব্যক্তি একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কুড়মিদের জাতিসত্তার আন্দোলন প্রসঙ্গে ছত্রধর বলেন, ‘‘আমিও ওই সমাজের মানুষ। আমিও চাই আমার সমাজ সমৃদ্ধিশালী হোক।

তাদের যে দাবিদাওয়া আছে সেই দাবি দাওয়া পূরণ হোক। আগে কুড়মি সমাজের কিছুই ছিল না। এখন কুড়মি উন্নয়ন পরিষদ গঠন হয়েছে। রাজ্যের দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা পেয়েছে কুড়মালি। এ সবই দিদি দিয়েছেন। কুড়মি নেতাদেরও বলেছি, দাবিপূরণ একমাত্র দিদিই করতে পারেন।

’’ ছত্রধর জানান, মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে সরকারি ছুটি, কুড়মিদের করম উৎসবে সরকারি ছুটি ঘোষণা হয়েছে। আরও বিভিন্ন ধরনের আবেদন আসছে। ছত্রধর বলেন, ‘‘রাজ্য সরকাকে জানাব, আমার বিশ্বাস রাজ্য সরকার সহানুভূতির সঙ্গে কুড়মিদের দাবিগুলি বিবেচনা করবে।’’

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য