Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
খেলা

ম্যারাডোনার সম্পত্তি পেতে আইনী লড়াইয়ে ৬ নারীর ১০ সন্তান!

ম্যারাডোনার সম্পত্তি পেতে আইনী লড়াইয়ে ৬ নারীর ১০ সন্তান!

ডিয়েগো ম্যারাডোনা, ফুটবল বিশ্বের ঈশ্বর। যিনি চোখ-ধাঁধানো ফুটবল খেলে বিপুল অর্থ কামিয়েছিলেন। কিন্তু গত সপ্তাহে ৬০ বছর বয়সে মারা যাবার পর দেখা যাচ্ছে ম্যারাডোনা যে অর্থ-সম্পদ রেখে গেছেন তার উত্তরাধিকার নিয়ে এক জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ম্যারাডোনার ব্যক্তিগত জীবনে বহু নারীর আসা-যাওয়া, এবং তাদের গর্ভজাত সন্তানদের কারণেই সৃষ্টি হতে পারে এই জটিলতা।

কাজেই তিনি মারা যাবার সাথে সাথে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে, তার সম্পদের পরিমাণ কত এবং ঠিক কতজন তার উত্তরাধিকারের দাবিদার হবেন-তা নিয়ে।ম্যারাডোনার কি আটটি সন্তান, নাকি আরো বেশি? ম্যারাডোনার ছিল এক বিশাল পরিবার। ছয়জন নারীর সাথে কয়েক দশকব্যাপি রোমান্টিক সম্পর্কের সূত্রে তাদের গর্ভে কমপক্ষে আটটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি।

মনে করা হচ্ছে, তার সম্পত্তি এই সন্তানদের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দেয়া হবে। কিন্তু আর্জেন্টিনার আইন বিশেষজ্ঞ এবং সাংবাদিকরা বলছেন, ম্যারাডোনা কোন উইল করে গেছেন বলে জানা যায়নি, তাই তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী ঠিক করাটা কোন সহজ-সরল ব্যাপার হবে না।

ম্যারাডোনার এই সন্তানেরা কারা?

একজন সফল ফুটবলার হিসেবে ম্যারাডোনার জীবন ছিল বর্ণাঢ্য। আর নানা নারীর গর্ভে ম্যারাডোনার সন্তান জন্মের খবর ছিল সেই জীবনের একটা নিয়মিত ঘটনা। ম্যারাডোনার এক কন্যা একবার ঠাট্টা করে বলেছিলেন, তার পিতার সন্তানের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে পুরো একটা ১১ জনের ফুটবল দল হয়ে যাবে।

ম্যারাডোনা নিজে অনেক দিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন, তার প্রথম স্ত্রী ক্লডিয়া ভিলাফানের গর্ভে জন্মানো দুই মেয়ে জিয়ানিনা (বর্তমানে বয়স ৩১) এবং ডালমা (বর্তমান বয়স ৩৩) ছাড়া তার আর কোন সন্তান নেই। বিশ বছরের বিবাহিত জীবনের পর ২০০৩ সালে ক্লডিয়ার সাথে ম্যারাডোনার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।

পরে অবশ্য ম্যারাডোনা স্বীকার করেন যে, তিনি আরো ৬টি সন্তানের পিতা। বছর পাঁচেক আগে ক্রিস্টিনা সিনাগ্রা এবং ভ্যালেরিয়া সাবালাইন নামে দুই নারীর সাথে আদালতে আইনী লড়াইয়ের পর ম্যারাডোনা স্বীকার করেন যে তাদের দুই সন্তান যথাক্রমে ডিয়েগো জুনিয়র(৩৪) এবং জানা(২৪)-র পিতা তিনিই। এর আগে ২০১৩ সালে ভেরোনিকা ওইয়েদা নামে এক মহিলার গর্ভে তার দ্বিতীয় পুত্র দিয়েগো ফার্নান্দোর জন্ম হয়। তাকে নিয়ে অবশ্য কোন মামলা হয়নি।

আরও পড়ুন: ক্রিকেট মাঠে চুম্বনের কথা জানিয়ে ভাইরাল তরুণী

ম্যারাডোনার আরো সন্তানের খবর পাওয়া যায় ২০১৯ সালে। সবাইকে তাজ্জব করে দিয়ে ম্যারাডোনার আইনজীবী ঘোষণা করেন যে বিশ্বকাপজয়ী এই আর্জেন্টাইন ফুটবলার কিউবায় জন্মানো তিনটি শিশুর পিতৃত্ব স্বীকার করতে রাজি হয়েছেন।

ব্যাপারটা হলো, কোকেন আসক্তি থেকে সেরে ওঠার চিকিৎসার জন্য ২০০০ সালের পর থেকে বেশ কয়েক বছর ম্যারাডোনা কিউবায় কাটিয়েছিলেন। এতে যদি আপনি মনে করেন যে হিসেব মেলানো শেষ – তাহলে ভুল করছেন। কারণ এখন জানা যাচ্ছে, আরো অন্তত দু’জন আছেন, যারা মনে করেন ম্যারাডোনাই তাদের পিতা।

এরা হলেন সান্টিয়াগো লারা (বর্তমানে বয়স ১৯) আর মাগালি জিল (বয়স ২৩)। এরা দুজনেই বলছেন, ম্যারাডোনাই যে তাদের পিতা। তা প্রমাণ করার জন্য তারা আইনী ব্যবস্থা নিচ্ছেন। ম্যারাডোনার সম্পত্তির উত্তরাধিকার দাবি করতে হলে এই প্রমাণটা তাদের দরকার।

ম্যারাডোনার মৃতদেহ কবর থেকে তোলা হতে পারে?

এমন সম্ভাবনা সত্যিই আছে। মি. লারার আইনজীবী ইতোমধ্যেই আদালতের কাছে এ আর্জি পেশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে ম্যারাডোনার দেহ কবর থেকে তোলা দরকার। তবে মি. লারা ও মিজ জিল যদি শেষ পর্যন্ত এটা প্রমাণ করতে সক্ষমও হন যে ম্যারাডোনাই তাদের পিতা, তাহলেও তারা কি পরিমাণ সম্পত্তি পাবেন সেটা স্পষ্ট নয়।

আইনজীবীরা এখন ম্যারাডোনার ভূসম্পত্তির প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করার জন্য হিসেব-নিকেশ করায় ব্যস্ত। তারা মনে করছেন, প্রয়াত এই ফুটবলারের সম্পত্তির অংশ পাবার জন্য আদালতে দীর্ঘ আইনি লড়াই হতে পারে। হতে পারে পারিবারিক বিবাদ, ডিএনএ টেস্ট থেকে শুরু করে সম্পত্তির ভাগ পাবার মতলবে কেউ কেউ হয়তো ‘ম্যারাডোনার সন্তানের’ সুযোগসন্ধানী দাবিও তুলে বসতে পারেন।

বুয়েনস আইরেসের একজন আইনজীবী এলিয়াস কির জফে বলছেন, আমার মনে হয় ম্যারাডোনার সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ব্যাপারটা এক মহা বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপার হয়ে দাঁড়াতে পারে, আর এর জট ছাড়াতে অনেক সময় লেগে যাবে।

 

বিবিসিবাংলা

আরও পড়ুন ::

Back to top button