জানা-অজানা

এই ভারতীয় অফিসারকে জমের মতো ভয় পেত পাকিস্তান, মাথার দাম রাখা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা

এই ভারতীয় অফিসারকে জমের মতো ভয় পেত পাকিস্তান, মাথার দাম রাখা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা

যুদ্ধের ময়দানে বড় র‍্যাঙ্কে শহীদ হওয়ার এটাই প্রথম ঘটনা ছিল। ওনার বীরত্বে পাক সেনা কাঁপত। ইন্ডিয়ান আর্মির এই মুসলিম অফিসারকে নৌশেরা এর ‘শের” বলা হত। দেশ ভাগের সময় পাকিস্তানের জন্মদাতা মোহম্মদ আলি জিন্নাহ ওনাকে পাকিস্তানের সেনা প্রধান বানানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ওনার ভারতের প্রতি ভালোবাসার জন্য উনি জিন্নাহ-র প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিলেন। এই অফিসারের নাম ব্রিগেডিয়ার মোহম্মদ উসমান (Mohammad Usman)। মোহম্মদ উসমান প্রথম ভারতীয় অফিসার, যার মাথার দাম ৫০ হাজার টাকা রেখেছিল পাক সেনা।

শহীদ ব্রিগেডিয়ার মোহম্মদ উসমান (Mohammad Usman) এর জন্ম ১৫ই জুলাই ১৯১২ সালে হয়েছিল। আজ ওনার জন্মজয়ন্তী। ১৯৪৭ সালের ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ শহীদ মোহম্মদ উসমানের জন্য মনে রাখা হয়। উসমানের পরিবার চেয়েছিল যে, তিনি যেন আইএএস অফিসার হন। কিন্তু তিনি নিজে সেনার অফিসার হতে চাইতেন। আর এর জন্যই মাত্র ২০ বছর বয়সে উনি সেনার অফিসার হয়েছিলেন।

পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারী ১৯৪৭ এর ডিসেম্বর মাসে ঝনগড় নামের একটি এলাকা দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু শহীদ উসমান এর বীরত্বের জন্য ১৯৪৮ সালে নৌশেরা আর ঝানগড় এলাকা পুনর্দখল করে ভারত। উসমানের বীরত্বের জন্য নৌশেরা সেক্টরে প্রায় হাজার খানেক পাকিস্তানি অনুপ্রবেশকারী আহত হয়েছিল, আর এক হাজার অনুপ্রবেশকারীকে খতম করা হয়েছিল। আর ভারতের ৩৩ জন শহীদ এবং ১০২ জন সেনা আহত হয়েছিলেন। ওনার বীরত্ব এবং ওনার অসাধারণ নেতৃত্বের ক্ষমতার জন্যই ওনাকে নৌশেরার ‘শের” বলা হয়।

নৌশেরার ঘটনার পর পাকিস্তান সরকার আর সেনা ব্রিগেডিয়ার উসমানের মাথার দাম ৫০ হাজার টাকা রেখেছিল। সেই সময়ে এই ৫০ হাজার টাকা অনেক অনেক বেশি ছিল। মোহম্মদ উসমান প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, যতদিন না ঝানগড় ভারতের দখলে আসছে, ততদিন তিনি মাটিতে মাদুর পেতে শোবেন। শেষমেশ উসমানের বীরত্বের জন্য ভারতীয় সেনা ঝানগড়ে কবজা করে। কিন্তু এই যুদ্ধেই ঝানগড়ে একটি তোপের আঘাতে বীর উসমান আহত হয়ে যান। এবং পড়ে তিনি শহীদ হন।

ব্রিগেডিয়ার উসমানের শেষকৃত্যে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু আর দেশের বাকি মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এটাই প্রথম ছিল যে, কোন আর্মি অফিসারের শেষকৃত্যে দেশের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। বীর উসমানকে মরণোত্তর মহাবীর চক্র দিয়ে সন্মান জানানো হয়েছিল। এর সাথে ওনাকে ‘হিরো অফ দ্য নেশন” এবং ‘নৌশেরা এর রক্ষক” উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ব্রিগেডিয়ার উসমানকে রাজকীয় সন্মানের সাথে দিল্লীর জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া এর গোরস্থানে মাটি দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন ::

Back to top button