রাজ্য

ভূমিকন্যাকে ‘হাতিয়ার’ করে নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর মোকাবিলা চায় তৃণমূল

ভূমিকন্যাকে ‘হাতিয়ার’ করে নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর মোকাবিলা চায় তৃণমূল - West Bengal News 24

ভূমিকন্যাকে ‘হাতিয়ার’ করেই নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর মোকাবিলা করতে চাইছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার ৪৩ জন মন্ত্রীর সঙ্গেই প্রতিমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন শিউলি সাহা। যিনি নন্দীগ্রামের ভূমিকন্যাও বটে। কেশপুরের বিধায়ক শিউলি পেয়েছেন পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্ব।

তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এক সময়ে পরস্পরের বিরোধী বলেই পরিচিত ছিলেন শুভেন্দু-শিউলি। তাঁর কেশপুর যাত্রাও হয়েছিল শুভেন্দুর কারণে। ২০১১ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া থেকে তৃণমূলের প্রতীকে বিধায়ক হয়েছিলেন শিউলি। কিন্তু তৃণমূলের অন্দরের খবর, ২০১৬ সালে শুভেন্দুর সঙ্গে বিরেধিতার কারণেই শিউলিকে সরে যেতে হয় কেশপুরে। এ বারও কেশপুর থেকেই জিতে মন্ত্রী হয়েছেন তিনি। হলদিয়ার বিধায়ক থাকার সেই সময় শুভেন্দুর সঙ্গে শিউলির বিরোধী চরমে উঠেছিল। সেই সময় শিউলি ছিলেন তৃণমূলের ‘সেকেন্ড-ইন-কমান্ড’ মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ। সেই সময় মুকুল ছিলেন শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের ‘প্রশ্রয়দাতা’। ঘটনাচক্রে শুভেন্দু ও মুকুল উভয়ই এখন বিজেপি-তে। এ বারের ভোটে বিজেপি-র বিধায়কও হয়েছেন। বিজেপি-র পরিষদীয় দলের বৈঠকে বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দুর নাম প্রস্তাব করেছেন মুকুলই। আর পরস্পর বিরোধী শিবিরে গিয়েও ফের মুখোমুখি শুভেন্দু-শিউলি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে নন্দীগ্রাম থেকে বিধায়ক হয়েছেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতাও হয়েছেন তিনি। তাই এমন এক জন নেতাকে জবাব দিতে ভূমিকন্যা শিউলিকেই হাতিয়ার করতে চাইছে তৃণমূল। নন্দীগ্রামের বিধায়ক না থাকায় পঞ্চায়েত মারফত্‍ জনতাকে পরিষেবা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র। আর সেই প়ঞ্চায়েত দফতরের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন শিউলি। তাঁর দফতরের সঙ্গে নন্দীগ্রামে তাঁর রাজনৈতিক প্রভাবকেও কাজে লাগাতে চাইছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। আবার নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদে রয়েছেন শিউলির মা বনশ্রী খাঁড়া। শুভেন্দু বিরুদ্ধে লড়াই প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী। শুধু বলছেন, ”দল আমাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছে। চেষ্টা করব ভাল ভাবে কাজ করার। আর নন্দীগ্রাম তো আমার বাপের বাড়ি। তাই অবশ্যই নন্দীগ্রামে যেতে হবে।”

প্রসঙ্গত, তিন বার বিধায়ক হলেও, এই প্রথম মন্ত্রিত্বের শিকে ছিঁড়েছে শিউলির। তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণে গত দু’বার ‘শুভেন্দুর প্রভাবে’ই শিউলিকে মন্ত্রী করা যায়নি, এমনটাই শোনা যায়। কিন্তু শুভেন্দু দল ছাড়তেই গুরুত্ব বেড়েছে একদা তাঁর বিরোধীদের। একে একে গুরুত্ব পেয়েছেন অখিল গিরি, সৌমেন মহাপাত্র ও শিউলির মতো অধিকারী পরিবারের কট্টর বিরোধিরা। তাই নন্দীগ্রামের আপন দুহিতাকে দিয়েই জোড়াফুল জবাব দেওয়ার রণকৌশল সাজিয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী শিউলি নন্দীগ্রামের ভূমিকন্যা হওয়া সত্ত্বেও কোনও প্রভাব ফেলতে পারবেন না বলেই দাবি করেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপি-র গুরুত্বপূর্ণ নেতা প্রলয় পাল। তিনি বলেন, ”শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে বিরোধী দলনেতা হয়েছেন। এ কথা মনে রাখতে হবে। আর শিউলি সাহা মন্ত্রী হলেও কেশপুর থেকে জিতেছেন। তিনি যতই নন্দীগ্রামের মেয়ে হোন না কেন, নন্দীগ্রাম যে শুভেন্দুকেই চায়, তা মুখ্যমন্ত্রীর পরাজয় দিয়েই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তাই কাউকে দায়িত্ব দিয়েই তৃণমূল আর নন্দীগ্রামের মন পাবে না।”

সূত্র : আনন্দবাজার

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button