রাজ্যকে ‘এক দেশ এক রেশনকার্ড’ চালু করুন, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ নীতি চালু করতে হবে। এই ব্যাপারে রাজ্যের কোনও অজুহাতই শোনা হবে না বলে শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। গত বছর জানুয়ারি থেকে দেশের ১২টি রাজ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক দেশ এক রেশন কার্ডের তত্ত্ব মেনে অভিন্ন রেশন ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু এই অভিন্ন রেশন কার্ডের বিরোধিতা করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বরং রাজ্য যে পুরনো রেশন ব্যবস্থার উপরেই আস্থা রাখছে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এদিন সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা ভেবেই কেন্দ্রীয় সরকারের অভিন্ন রেশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে বাংলাতেও। এই ব্যাপারে কোনও রকম সমস্যা দেখানো যাবে না। কোনও অজুহাতও শুনবে না আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের যুক্তি, এই ব্যবস্থা চালু হলে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। গত বছর জানুয়ারি থেকে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ ব্যবস্থা চালু হয়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, রাজস্থান, কর্নাটক, কেরল, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, ঝাড়খণ্ড ও ত্রিপুরায়। কেন্দ্রের বক্তব্য, এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন শ্রমিকরা।
কারণ, কাজের জন্য তাঁদের একাধিক রাজ্যে গিয়ে থাকতে হয়। সেখানে রেশন পান না তাঁরা। এই কার্ড সঙ্গে থাকলে দেশের যেকোনও প্রান্ত থেকে রেশন সংগ্রহ করতে পারবেন তাঁরা। সে কারণেই গত এক বছর ধরে রেশন কার্ড ডিজিটাল করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ‘এক দেশ এক রেশন’ পরিষেবা গোটা দেশে চালু হয়ে গেলে সব নথি অনলাইনে থাকবে। দেশের কোন প্রান্ত কত পরিমাণ রেশন যাচ্ছে তার উপরেও নজর রাখতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। রেশনে চুরির ঘটনাও কমবে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের হয়রানি রোখার যুক্তি দিয়ে কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টনমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান দ্রুত সব রাজ্যকে ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ চালু করতে বলেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত মানতে রাজি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, কেন্দ্রের খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতার বাইরে রাজ্য সরকার যে অতিরিক্ত ৩ কোটির বেশি মানুষকে সস্তায় চাল-গম দিয়ে থাকে, তাঁদেরও এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হোক।
তা হলে তাঁদের মধ্যে কেউ বাংলা ছেড়ে অন্য রাজ্যে কাজ করতে গেলে সেখানেও সস্তায় চাল-গম পাবেন। আপাতত পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি ও অসমে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’ব্যবস্থা এখনও চালু হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার।
সুত্র : দ্য ওয়াল