Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
জানা-অজানা

পলাশীর যুদ্ধের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ’ঘসেটি বেগম’-এর শেষ দিনগুলো কাটে জিঞ্জিরা প্রাসাদে

Ghaseti Begum in Bengali : পলাশীর যুদ্ধের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ’ঘসেটি বেগম’-এর শেষ দিনগুলো কাটে জিঞ্জিরা প্রাসাদে - West Bengal News 24

বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা আজ থেকে ২৬৪ বছর আগে হেরে গিয়েছিলেন পলাশীর যুদ্ধে। নবাবের পরাজয়ের পেছনে কাজ করছিলো প্রাসাদ ষড়যন্ত্র। আর এই প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে সিরাজউদ্দৌলার নিজ সেনাপতি মীর জাফর ছাড়াও যোগ দিয়েছিলেন আপন খালা ঘসেটি বেগম।

এই ঘসেটি বেগম ছিলেন পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের পেছনে একজন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, যার জীবনের শেষ দিনগুলো কেটেছিলো ঢাকার কাছে একটি প্রাসাদে বন্দী অবস্থায়। পলাশী যুদ্ধ পরবর্তীতে তিনিও নিজেও শিকার হয়েছিলেন প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের। এই ষড়যন্ত্রের ফলস্বরূপ বুড়িগঙ্গায় ডুবে করুণ মৃত্যু হয় তার।

যড়যন্ত্রকারী হিসেবে বাংলার মানুষের কাছে তিনি বরাবর ঘৃণিত এবং জটিল মানসিকতার প্রতীক এক চরিত্র। স্বীকার করতেই হবে বাংলার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হয়ে আছেন তিনি।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জানায়, ঘসেটি বেগম ইতিহাসবিদদের মনোযোগ তেমন পাননি, যে কারণে তার ঢাকা জীবন সম্পর্কে তেমন তথ্য পাওয়া যায় না। তার জীবনের শেষ দিনগুলো কেটেছিল ঢাকার কাছে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত জিঞ্জিরা প্রাসাদে।

জাতীয় তথ্য বাতায়ন নামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ওয়েবসাইটে ঢাকা জেলার দর্শনীয় স্থানের তালিকায় জিঞ্জিরার প্রাসাদকে অন্যতম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে কয়েক’শ গজ দূরে।

ওয়েবসাইটে জিঞ্জিরার প্রাসাদকে ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সেটি কেরানীগঞ্জের স্থানীয় মানুষদের দখলে রয়েছে বলে জানা যায়।

মুনতাসীর মানুন বলেন, জিঞ্জিরা প্রাসাদে ঘসেটি বেগম একা নন, পলাশী যুদ্ধের পর নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরিবারের নারী সদস্য অর্থাৎ তার মা, স্ত্রী, কন্যাসহ অনেকজন নারীকেই বন্দি করে পাঠানো হয়েছিলো।

১৭৫৭ সালের শেষের দিকে তাদের ওই প্রাসাদে পাঠানো হয়েছিলো। বন্দি নারীদের প্রাসাদের বাইরে বের হবার অনুমতি ছিলো না। ১৭৬০ সালে জলে ডুবিয়ে হত্যার আগ পর্যন্ত ওই প্রাসাদেই ছিলেন ঘসেটি বেগম।

এদিকে শ্রী পারাবাতের লেখা ‘আমি সিরাজের বেগম’ বইয়ে বলা হয়েছে পলাশীর যুদ্ধ শেষ হবার খবর মুর্শিদাবাদে পৌঁছার পরই ঘসেটি বেগম ‘নিজের ভুল’ বুঝতে পেরেছিলেন। পরাজিত নবাব তখনো হীরাঝিলে এসে পৌঁছাননি।

সে সময় ঘসেটি বেগম নবাব-পত্নী লুৎফাকে সতর্ক করেছিলেন, যেভাবে, যে পথেই তারা পালান, যেন নদীপথে তারা না যান। লুৎফা প্রথমবারের মত ঘসেটি বেগমের চোখে মাতৃত্বের ছায়া দেখেছিলেন। তার বয়ানে তিনি বলছেন, হয়ত নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন তিনি।

এদিকে মীর জাফর নবাব হবার পরই ঘসেটি বেগমকে বন্দি করেন। কিছুদিন হীরাঝিলে বন্দি রেখে পরে তাকে ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে জিঞ্জিরা প্রাসাদে স্থানান্তর করেন। সেখানে তার সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলার মা আমিনা বেগমকেও অন্তরীণ করে রাখা হয়েছিলো।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তারা দুইজনই ওই প্রাসাদে ছিলেন। তার মৃত্যু নিয়ে দুই রকম তথ্য প্রচলিত আছে। কোথাও বলা হয়েছে, মুর্শিদাবাদে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছিলো, এবং সেখানেই তার কবর।

কিন্তু বাংলাপিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১৭৬০ সালে মীরজাফরের ছেলে মীরনের পরিকল্পনায় ঘসেটি বেগম ও আমিনা বেগমকে জলে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়। ঘসেটি বেগম ও আমিনা বেগমকে মুর্শিদাবাদে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার কথা বলে, বুড়িগঙ্গা নদীতে বড় একটি বজরায় তুলে দেয়া হয়। যাত্রা শুরুর কিছু পরে ঘসেটি বেগম এবং আমিনা বেগমকে নিয়ে মাঝনদীতে বজরাটি ডুবিয়ে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button