চলছিল অনলাইনে ক্লাস। সেখানেই দুম করে এক ছাত্র চূড়ান্ত এক অশ্লীল ম্যাসেজ পাঠিয়ে দিল শিক্ষিকাকে। এই ভাবেই এক এক করে আরও বেশ কিছু ছাত্র সেই ক্লাসেই পাঠাতে শুরু করে দেয় সেই শিক্ষিকার উদ্দেশ্যে অশ্লীল কথা। বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও তাঁরা বিষয়টিতে কোনও পাত্তা দেননি বলেই অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার বদলে ওই শিক্ষিকার হাতেই ধরিয়ে দেওয়া হয় সাসপেনশন লেটার। এরপরেই বিষয়টি পুলিশকে জানাতে বাধ্য হন ওই শিক্ষিকা। হাওড়ার শহরের এক নামী নামী বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনার জেরে এখন চ্যাটার্জিহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই শিক্ষিকা। অভিযুক্ত ছাত্ররা সবাই নবম শ্রেনীর।
গত ২৩ অগাস্ট নবম শ্রেণির পরীক্ষা চলাকালীন এক ছাত্র ওই শিক্ষিকাকে প্রথমে অশ্লীল মেসেজ পাঠায়। শিক্ষিকা এর জেরে ওই ছাত্রটিকে বকুনি দিলে সে পাল্টা ওই শিক্ষিকাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দেয়। এরপরেই ওই ছাত্রটিকে ব্লক করে দেন ওই শিক্ষিকা। ওই ছাত্রের দেখাদেখি আরও কয়েকজন ছাত্র ওই শিক্ষিকাকে অশ্লীল মেসেজ পাঠায়। পরে এই নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালে তাঁরা বিষয়টি এড়িয়ে যান।
আরো পড়ুন : স্নাতক স্তরে ফলপ্রকাশ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ ১০০ শতাংশ
এরপর বাধ্য হয়ে ওই শিক্ষিকা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান যে তাঁরা অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করলে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হবেন। এই কথার জেরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা ওই শিক্ষিকার হাতেই সাসপেনশন লেটার ধরিয়ে দেওয়া হয়।
সেই চিঠিতে বলা হয়, তিনি অভিযোগ প্রমাণ না করতে পারলে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে। ওই শিক্ষিকার বক্তব্য, ‘আমি চেয়েছিলাম স্কুল যেন সেই ছাত্রকে বড় কোনও শাস্তি না দিয়ে শিক্ষিকাদের সঙ্গে কিভাবে আচরণ করতে হয় তা বোঝাক। কিন্তু স্কুল উলটে আমার বিরুদ্ধেই যেভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করল, সেটা খুবই খারাপ লাগছে।’
যদিও গোটা ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হয়নি। তাঁকে শুধুমাত্র শো কজ করা হয়েছে। অনলাইন ক্লাসে শুধুমাত্র স্কুলের ছাত্রদেরই প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু এই ক্লাসে কীভাবে বাইরের একজন ঢুকে পড়ল তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এছাড়াও আমাদের কাছে অভিযোগ জমা পড়ার আগেই তিনি তাঁকে গ্রুপ থেকে বার করে দেওয়ায়, আমরা সেই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে পারিনি।
স্কুলের তরফে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়ার পরেও, স্কুলের নাম জড়িয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন উনি। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের এই দাবি শুনে এখন ওই শিক্ষিকা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
সূত্র: এই মুহুর্তে