Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
অর্থনীতি

অ্যাপোলো হসপিটালসে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের জন্য রোবোটিক অস্ত্রোপচার হওয়া ২৮ বছর বয়সী ডাক্তার জিতলেন সোনার মেডেল

অ্যাপোলো হসপিটালসে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের জন্য রোবোটিক অস্ত্রোপচার হওয়া ২৮ বছর বয়সী ডাক্তার জিতলেন সোনার মেডেল - West Bengal News 24

চেন্নাই, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১: অ্যাপোলো ইনস্টিটিউট অফ কোলোরেক্টাল সার্জারি, চেন্নাইতে এই মুহূর্তে সবাই একটু আবেগপ্রবণ। কারণ ২৮ বছর বয়সী ডাক্তারির ছাত্র ডাঃ জেডি (গোপনীয়তা বজায় রাখতে নাম পরিবর্তিত), যার লো রেক্টাল ক্যান্সারের জন্য সফল রোবোটিক কোলোরেক্টাল অস্ত্রোপচার হয়েছিল এখানে, সে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছে এবং সোনার মেডেল জিতেছে। ঘটনাচক্রে একইসঙ্গে অ্যাপোলো ইনস্টিটিউট অফ কোলোরেক্টাল সার্জারির পাঁচ বছর পূর্ণ হল। এই ইনস্টিটিউট কোলোরেক্টাল অসুখের রোগী, বিশেষ করে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের রোগীদের জন্য, অত্যাধুনিক ন্যূনতম বেদনাদায়ক রোবোটিক সার্জিকাল কৌশল এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে।

ডাঃ ভেঙ্কটেশ মুনিকৃষ্ণন, কনসালট্যান্ট কোলোরেক্টাল অ্যান্ড রোবোটিক সার্জেন, দি অ্যাপোলো ইনস্টিটিউট অফ কোলোরেক্টাল সার্জারি, চেন্নাই, বলেন “ডাঃ জেডির লো রেক্টাল ক্যান্সার ধরা পড়েছিল ২০১৭ সালে, যখন ওর ২৪ বছর বয়স। তখন ও সবে ডাক্তারির পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনের যোগ দিয়েছে। খুব আঘাত পেয়েছিল, কারণ ও ভেবেছিল চিকিৎসা হলেও, ওর ডাক্তারি পড়া হঠাৎ থেমে যাবে। তার কারণ সাধারণ অস্ত্রোপচারে রোগীদের কোলোস্টমি হয়, মানে অস্ত্রোপচার করে একটা ফুটো করে দেওয়া হয়, যা দিয়ে মল শরীরের বাইরে একটা কোলোস্টমি ব্যাগে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। তখন ও আমাদের কাছে আসে। এই আশায় যে আমরা এমন কোনো ব্যবস্থা করতে পারব, যাতে ও লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে এবং স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারে। আমরা ওকে হতাশ করিনি!”

রোবোটিক প্রোসিডিওরের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে ডাঃ মুনিকৃষ্ণন বলেন “রোবোটিক কোলোরেক্টাল সার্জারিতে আমরা ক্যান্সার কেটে বাদ দিই এবং কোলনের রেক্টাল / অ্যানাল সংযোগের পুনর্গঠন করি, ফলে স্থায়ী কোলোস্টমি করার দরকার হয় না। ও মসৃণভাবে সেরে উঠেছে, কোর্স শেষ করেছে আর কৃতিত্বের সঙ্গে সোনার মেডেল পেয়ে পাশও করেছে। রোবোটিক সার্জারির একাধিক স্বল্পমেয়াদি সুবিধাও আছে, যেমন কম রক্তক্ষরণ, বেশি তাড়াতাড়ি সেরে ওঠা এবং সাধারণ শারীরবৃত্তীয় কাজগুলো বজায় থাকা।”

আরও পড়ুন : বিশ্বের অর্ধ কোটি মানুষ করোনা মহামারির মধ্যেও হয়েছেন মিলিওনিয়ার

গত দু দশকে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর হার ক্রমশ বেড়েছে। এটা এমন একটা বয়স, যখন মানুষ সক্রিয় থাকে, পরিবার এবং কেরিয়ার তৈরি করে। তাই এই রোগীদের চিকিৎসার পর জীবনযাত্রার মান ঠিক থাকা নিশ্চিত করা জরুরি। তবে কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রথম পর্যায়েই ধরা পড়লে সম্পূর্ণ সারিয়ে দেওয়া যায় আর রোবোটিক কোলোরেক্টাল সার্জারি কোলোস্টমি এড়াতে এবং স্বাভাবিক জীবন কাটাতে সাহায্য করে।
ডাঃ প্রতাপ সি রেড্ডি, চেয়ারম্যান, অ্যাপোলো হসপিটালস গ্রুপ বলেন “আগামী দশকে অসংক্রামক ব্যাধিগুলো থেকে যে বিশাল সঙ্কট তৈরি হতে যাচ্ছে এবং ব্যক্তি, পরিবার ও দেশগুলোর উপরে তার যে প্রভাব পড়বে, বিশ্বব্যাঙ্ক তার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। বিশেষ করে ক্যান্সার বিপুল ক্ষতি করছে আর কোলোরেক্টাল ক্যান্সার বাড়তে দেখা যাচ্ছে, ফলে অসুখটা বড় বিপদ হয়ে উঠছে। অ্যাপোলোতে আমরা অত্যাধুনিক মেডিকাল প্রযুক্তি নিয়ে আসছি, যা ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য উদ্ভাবনীমূলক চিকিৎসাব্যবস্থার নতুন যুগের প্রতিনিধি। আমরা ২০১৬ সালে কোলোরেক্টাল সার্জারির জন্য এক বিশেষ বিভাগ চালু করেছিলাম, একইসঙ্গে রোবোটিক কোলোরেক্টাল সার্জারিও চালু করেছিলাম। এর ফলে প্রিসিশন সার্জারি করা সম্ভব হয়েছে, যাতে রোগীর ন্যূনতম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। রোবোটিক কোলোরেক্টাল সার্জারি গ্রুপের অন্য হাসপাতালগুলোতেও চালু করা হবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে দ্রুত রোগনির্ণয়ের পাশাপাশি এই চিকিৎসা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সহ সমস্ত কোলোরেক্টাল অসুখের উপসর্গ এবং মরণশীলতা কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।”

মিস পৃথা রেড্ডি, এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারপার্সন, অ্যাপোলো হসপিটালস গ্রুপ, বললেন “রোবোটিক কোলোরেক্টাল অস্ত্রোপচারকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদানকারী ভারতের একমাত্র সুপার-স্পেশালিটি কেন্দ্র হিসাবে অ্যাপোলো ইনস্টিটিউট অফ কোলোরেক্টাল সার্জারির ভূমিকা ক্লিনিকাল শ্রেষ্ঠত্বের প্রতি আমাদের একাগ্র প্রতিজ্ঞাবদ্ধতার প্রতীক। গত কয়েক বছরে রোবোটিক কোলোরেক্টাল সার্জারির মত ন্যূনতম বেদনাদায়ক কৌশলগুলোর একাধিক উন্নতি ঘটেছে। ফলে কোলোরেক্টাল অসুখ, বিশেষ করে রেক্টাল ক্যান্সারে অস্ত্রোপচারে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। তাছাড়া কোলোরেক্টাল শল্য চিকিৎসকরা কোলোরেক্টাল অসুখে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করলে যে উন্নততর ফল পাওয়া যায়, তার প্রমাণ ক্রমশ বাড়ছে। রোগীদের পৃথিবীর সেরা চিকিৎসা দেওয়ার প্রত্যয়ের কারণে অ্যাপোলো ইউনিভার্সিটি কলেজ, লন্ডন আর ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক, ফ্লোরিডা, ইউএসএ-র সাথে ক্লিনিকাল সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করেছে। এই ধরনের সম্পর্কগুলো থেকে আমাদের মেডিকাল টিমগুলোর মেডিকাল দুনিয়ায় যা যা ঘটছে সে ব্যাপারে সচেতন থাকা নিশ্চিত হয়, পাশাপাশি ক্লিনিকাল দক্ষতার স্বাস্থ্যকর আদানপ্রদানও হয়।”

আরও পড়ুন : বাড়ছে এটিএম( ATM ) থেকে টাকা তোলার খরচ, জানুন বিস্তারিত

শুধুমাত্র কোলোন, রেক্টাম এবং অ্যানাসের অসুখের চিকিৎসার জন্য নিবেদিত ভারতের প্রথম কেন্দ্র এই প্রতিষ্ঠানে কোলোরেক্টাল ক্যান্সার এবং প্রক্টোলজি ও পেলভিক ফ্লোর ডিজিজের জন্য রোবোটিক ও ল্যাপারোস্কোপিক কোলোরেক্টাল সার্জারি করা হয়। এখানকার রোবোটিক কোলোরেক্টাল সার্জারি প্রোগ্রাম দেশের ব্যস্ততম প্রোগ্রাম। ২০১৬ সালে চালু হওয়ার পর থেকে ৬০০-র বেশি রোবোটিক কোলোরেক্টাল অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫০টা করেছেন ডাঃ ভেঙ্কটেশ মুনিকৃষ্ণন, যিনি দেশের সবচেয়ে বেশি রোবোটিক কোলোরেক্টাল অস্ত্রোপচার করার কৃতিত্বের অধিকারী।

কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের রোগী সারা পৃথিবীতেই বেশ ভাল সংখ্যায় দেখা যায়, কিন্তু ভারতে রিপোর্ট হওয়া অসুখের দিক থেকে বেশ পিছনে। গ্লোবোকাল ২০১৮ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এবং মৃত্যুর দিক থেকে কোলোন ক্যান্সারকে ১৩তম স্থানে রেখেছে। বছরে ২৭,৬০৫টা নতুন কেস পাওয়া যায় আর ১৯,৫৪৮ জনের মৃত্যু হয় এই অসুখে। ২০১৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সারা ভারতে নথিভুক্ত নতুন কেসের সংখ্যা ২৭,৬০৫ আর এই রোগ নিয়ে বেঁচে আছেন এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫৩,৭০০ বলে মনে করা হয়। কোলোরেক্টাল ক্যান্সার বিশেষত অল্পবয়সী এশিয় পুরুষদের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এর অন্যতম প্রধান কারণ।

যেসব রোগীর ক্যান্সার বেশ বেড়ে গেছে, কোভিড অতিমারীর প্রভাবে তাঁদের দেরি করে চিকিৎসার জন্যে আসার ফল সম্বন্ধেও ডাঃ ভেঙ্কটেশ মুনিকৃষ্ণন বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। তিনি বলেন “অতিমারী শুরু হওয়ার পর থেকে পরের দিকের ক্যান্সার রোগীদের হাসপাতালে আসা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে শেখানো দরকার যে, প্রথম পর্যায়ের ক্যান্সার, মানে স্টেজ ওয়ান আর টুতে চিকিৎসা করা সহজ। এখান থেকে ক্যান্সারের ‘স্টেজ মাইগ্রেশন’, মানে স্টেজ থ্রি আর ফোরে পৌঁছে যাওয়া আটকানো দরকার। কারণ ওখান থেকে সেরে ওঠা শক্ত হতে পারে। মানুষের লক্ষণগুলো সম্বন্ধে সচেতন হওয়া এবং সেগুলোকে চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে উপযুক্ত যত্ন পান। লক্ষণগুলো সম্বন্ধে সচেতনতা তৈরি করা আশু প্রয়োজন, কারণ কোলোরেক্টাল ক্যান্সার আর হেমারয়েডের মত বিনাইন অবস্থার লক্ষণগুলো একইরকম।”

ডাঃ মুনিকৃষ্ণনের নেতৃত্বাধীন অ্যাপোলো ইনস্টিটিউট অফ কোলোরেক্টাল সার্জারি হল দেশের ব্যস্ততম ইউনিট। এখানে বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা করা হয়। প্রত্যেক বছর ৭৫০টা কোলোরেক্টাল প্রোসিডিওর হয়, যার মধ্যে ১৩০টা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার সার্জারি। তার মধ্যে ১১০টারও বেশি হয় রোবোটিক সার্জারি। রোবোটিক কোলোরেক্টাল সার্জারির সংখ্যা বেশি হওয়ায় খরচ কম রাখা সম্ভব হয়, কারণ রোবোটিক কোলোরেক্টাল সার্জারির খরচ একটা সাধারণ কিহোল সার্জারির সমান। এই উন্নতি অন্যান্য কোলোরেক্টাল অসুখে ভোগা রোগীদের পক্ষেও উপকারী। বিশেষ করে রেক্টাল ক্যান্সার অথবা রেক্টাল প্রোল্যাপ্সের মত রেক্টাল ও পেলভিক ডিসঅর্ডারে এই চিকিৎসা কাজে দেয়।

আরও পড়ুন ::

Back to top button