নদীয়া

কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে প্রাক্তনীদের সভা

দীপাঞ্জন দে

কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে প্রাক্তনীদের সভা

নদিয়া জেলার সর্বপ্রথম কলেজ কৃষ্ণনগর কলেজ, যেটি স্থাপিত হয় লর্ড হার্ডিঞ্জের সময় ১৮৪৬ সালের ১লা জানুয়ারি। আর কৃষ্ণনগর কলেজের বর্তমান ভবনটি নির্মিত হয়েছিল ১৮৫৬ সালে। নদিয়া-রাজ শ্রীশচন্দ্র রায় এবং কাশিমবাজারের রানী স্বর্ণময়ীর দানকৃত জমিতে এই কলেজ স্থাপিত হয়। ইতিপূর্বে কৃষ্ণনগর কলেজ তার ১৭৫তম বর্ষ পার করেছে। যুগের পরিবর্তনে কৃষ্ণনগর কলেজের নাম এখন পাল্টে গিয়ে হয়েছে ‘কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ’। নদিয়া জেলা তথা বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থায় কৃষ্ণনগর কলেজের বিশেষ অবদান রয়েছে।

আধুনিক শিক্ষার বিকাশে কৃষ্ণনগর কলেজের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়। বহু গুণীজন কৃষ্ণনগর কলেজে পড়াশোনা করে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। এহেন ঐতিহ্যমন্ডিত কৃষ্ণনগর কলেজে ১৩ নভেম্বর ২০২২ (রবিবার) অনুষ্ঠিত হল কলেজ প্রাক্তনীদের বার্ষিক সাধারণ সভা।

কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে প্রাক্তনীদের সভা

বিগত বছরে করোনা অতিমারির কারণে প্রাক্তনীদের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হতে পারিনি। এর আগে প্রাক্তনী সংসদের শেষ সভাটি হয়েছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সেই সভার অব্যবহিত পরেই আবির্ভূত হয় করোনা অতিমারি। সেই থেকে বিভিন্ন বিধি-নিষেধের বেড়াজালে প্রাক্তনী সংসদের সভা করা যায়নি। দীর্ঘদিন পর ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হল কৃষ্ণনগর কলেজ প্রাক্তনী সংসদের সাধারণ সভা।

এটি ছিল তাদের ত্রয়োদশ পুনর্মিলন উৎসব তথা ত্রয়োদশ সাধারণ সভা। কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ অ্যালাম্নাই অ্যাসোসিয়েশনের ত্রয়োদশ বার্ষিক সম্মেলনে সারাদিনব্যাপী একাধিক কার্যক্রম ছিল। পতাকা উত্তোলন এবং কলেজ উদ্যানে স্থাপিত দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মূর্তিতে মাল্য নিবেদনের মধ্যে দিয়ে সাধারণ সভার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। তারপর অ্যালাম্নাই অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মেলনের রীতি মেনে দ্বিজেন্দ্র মূর্তির সম্মুখে দাঁড়িয়ে প্রাক্তনীরা সমবেত কন্ঠে ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’ গানটি পরিবেশন করেন।

কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে প্রাক্তনীদের সভা

এরপর সভা এগোয় কলেজের মূলভবনের ঐতিহাসিক সভাকক্ষে। কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ অ্যালাম্নাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শঙ্করেশ্বর দত্ত উদ্বোধনী ভাষণ রাখেন। তারপর সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পাঠ করেন প্রাক্তনী সংসদের সম্পাদক খগেন্দ্রকুমার দত্ত। সভাগৃহে উপস্থিত প্রাক্তনীরা সম্পাদকের উপস্থাপিত প্রতিবেদনটির প্রতি হাত তুলে নিজেদের সমর্থন জানান। এরপর সেটি গৃহীত হয়। এরপর প্রাক্তনীদের ত্রয়োদশ সম্মেলনে উপস্থিত সদস্যরা সম্পাদকীয় প্রতিবেদনের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন।

কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে প্রাক্তনীদের সভা

কলেজের উন্নতিতে আগামীদিনের বিভিন্ন পরিকল্পনা বিষয়ে সভায় একাধিক প্রস্তাব আসে। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন— গৌতম চট্টোপাধ্যায়, অনন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণীপ্রসাদ চক্রবর্তী, মিতা দে, শ্রেয়া সাহা, দীপাঞ্জন দে প্রমুখরা। সভামঞ্চে উপস্থিত সম্মানীয় ব্যক্তিবর্গও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে ছিলেন— সভাপতি শঙ্করেশ্বর দত্ত, কানাইলাল বিশ্বাস, শিবনাথ চৌধুরী, সুধাকর বিশ্বাস, অর্চনা ঘোষ সরকার প্রমুখরা। কলেজের পক্ষে হিতকর একাধিক প্রস্তাব প্রাক্তনী সংসদের আলোচনা থেকে উঠে আসে।

কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে প্রাক্তনীদের সভা

এরপর সংসদের কোষাধ্যক্ষ দীপঙ্কর দাস বিগত কমিটির আয়-ব্যয়ের হিসাব পেশ করেন। সেটিও প্রত্যেক সদস্যের সমর্থনে গৃহীত হয়। অতঃপর সভাপতি মধ্যাহ্ন ভোজনের ঘোষণা করেন। মধ্যাহ্ন ভোজনের পর সভার দ্বিতীয় পর্বে ছিল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এদিনের সম্মেলনে আগামী দুই বছরের জন্য কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজ অ্যালাম্নাই অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি গঠিত হয়। পুরনো কমিটিতে সামান্য রদবদল করে প্রাক্তনী সংসদের এই নতুন কমিটি গঠিত হয়। আগামী কালপর্বে এই কমিটির উপর প্রাক্তনী সংসদের দায়িত্বভার অর্পিত হয়।

লেখক: অধ্যাপক, চাপড়া বাঙ্গালঝি মহাবিদ্যালয়, নদিয়া।

আরও পড়ুন ::

Back to top button